ইসরায়েলে গানের আসরে হামাসের হামলা, নিহত ২৫০
ছবি সংগৃহিত
ইহুদি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব সুক্কোত উপলক্ষ্যে দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি মরুভূমিতে জড়ো হয়েছিলেন কয়েকশ মানুষ। শনিবার (৭ অক্টোবর) রাতের বেলা উন্মুক্ত ও খোলা মরুভূমিতে ‘নাচ-গান ও আনন্দে’ মেতে থাকার কথা ছিল সেখানে জড়ো হওয়া তরুণ-তরুণীদের।
ইসরায়েলে একটি গানের আসরে হামলা চালিয়েছে হামাস। এ ঘটনায় অন্তত ২৫০ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ইসরায়েলে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০০ জনে। খবর রয়টার্স’র ।
তবে এই গানের উৎসবটি রূপ নিয়েছে বিষাদে। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সদস্যরা গানের উৎসবে ওইদিন সকালে অতর্কিত হামলা চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছেন। উদ্ধারকারী সংস্থা জাকা জানিয়েছে, উৎসবস্থল থেকে অন্তত ২৬০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গানের উৎসবে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন, প্রথমে রকেট হামলার একটি শব্দ শুনতে পান তারা। এরপর হঠাৎ করে চোখের পলকে সেখানে উপস্থিত হন হামাসের সদস্যরা। তারা এসেই এলোপাতারি গুলি শুরু করেন। এরপর সেখানে জড়ো হওয়া তরুণ-তরুণীরা প্রাণ ভয়ে পালানো শুরু করেন।
সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্রাণ বাঁচাতে কিভাবে দৌঁড়াচ্ছেন মানুষ। এছাড়া হামাসের যোদ্ধারা যে অনবরত গুলি ছুড়ে যাচ্ছিলেন সেটিও ভিডিওতে স্পষ্টভাবে শোনা গেছে।
মরুভূমি হওয়ায় সাধারণ মানুষ যে কোথাও পালিয়ে আশ্রয় নেবেন সেই উপায়ও ছিল না। ফলে উৎসবে অংশ নিতে যাওয়ারা সামনের দিকে শুধু দৌঁড়াতে থাকেন। আবার অনেকে গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। আর যাদের কপাল খারাপ ছিল— তারা গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
শনিবার (৭ অক্টোবর) রাতে দক্ষিণ ইসরায়েলে আরিক নানি নামের এক ইহুদি নাগরিকের জন্মদিনের নাচের পার্টি চলছিল। কিন্তু এ সময় ক্ষেপণাস্ত্রের গর্জনে এবং হামাসের বন্দুকধারীরা অতর্কিত হামলা চালালে মুহূর্তেই গানের আসর ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়।
এ ব্যাপারে আরিক নানি বলেন, আমি সব দিক থেকে গুলির শব্দ শুনছিলাম, হামলাকারীরা উভয় দিক থেকে আমাদের দিকে গুলি চালাচ্ছিল। প্রাণ ভয়ে সবাই দৌড়াচ্ছিল এবং কী করতে হবে বুঝতে পারছিল না।
গানের আসরে অতর্কিত হামলায় নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। অপরদিকে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৪ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এদিকে দেশটিতে অবস্থানরত এক জার্মান নারীর দাবি, উৎসবে যোগ দেয়ায় তার মেয়েকে হামাস যোদ্ধারা অপহরণ করে নিয়ে গেছে। আরও কয়েকটি দেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের বেশ কয়েকজন নাগরিক এই হামলার শিকার হয়েছেন।
এদিকে হামাসের ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামের এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৭০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। এছাড়া প্রায় ১০০ জনকে আটক করে গাজায় নিয়ে গেছে তারা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।