নারীর দান করা দুই হাত জোড়া লাগল পুরুষের শরীরে
ছবি: সংগৃহীত
রঙ-তুলিতেই চলছিল জীবন। ছবি এঁকেই উপার্জন করতেন অর্থ। আর সেই দুই হাতই কিনা কাটা পড়েছিল ট্রেন দুর্ঘটনায়। এরপর থেকেই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল জীবন। রোজগার নেই, সংসারেও দিনানিপাত হয় বহু কষ্টে।
আর এমন অবস্থাতেই এক নারীর দান করা দুটি হাত জোড়া লাগল ওই ব্যক্তির কাটা পড়া হাতের সঙ্গে। মূলত ব্রেন-ডেথ এক নারীর দান করা হাতই জোড়া লেগেছে ৪৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির শরীরে।
বুধবার (৬ মার্চ) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা অস্ত্রপচারের পর নতুন এই দুই হাত পেলেন ওই ব্যক্তি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দাতার থেকে নেওয়া হাতের শিরা-ধমনী, হাড়-মজ্জা-মাংস সব নিখুঁতভাবে জোড়া লেগেছে গ্রহীতার হাতের সঙ্গে। দাতার থেকে নেওয়া হাত চিত্রশিল্পীর শরীরে মিলেও গেছে। নতুন দুই হাত দিয়ে এখন সব কাজই করতে পারবেন এই শিল্পী।
এর আগে ২০২০ সালে ট্রেন দুর্ঘটনায় দুই হাত হারিয়েছিলেন। মীনা মেহতা নামে ব্রেন-ডেথ এক রোগীর দুই হাত নিয়েই প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা করেন চিকিৎসকেরা। দক্ষিণ দিল্লীর একটি স্কুলের প্রশাসনিক প্রধান ছিলেন মীনা। তিনি লিখিতভাবেই তার অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অনুমতি দিয়ে গিয়েছিলেন।
মূলত এই ধরনের অপারেশনের ক্ষেত্রে শিরা, ধমনী, স্নায়ু ও টেন্ডন (শক্ত ও মোটা তন্তু) সব ঠিকঠাক ভাবে জুড়তে হয়। প্লাস্টিক সার্জারি, অর্থোপেডিক, নেফ্রোলজি-সহ অনেকগুলো বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দরকার হয়।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই প্রতিস্থাপনের পরবর্তী সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গ্রহীতার শরীর কতটা সেই অঙ্গ গ্রহণ করবে, সেদিকে খুব সতর্ক ভাবে নজর রাখতে হয়। শরীর যাতে ওই অঙ্গকে প্রত্যাখ্যান না করে, সেজন্য গ্রহীতাকে সারা বছর ইমিউনো থেরাপি নিতে হবে, যেন তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
৪৫ বছর বয়সী ওই চিত্রশিল্পীকে আগামীকাল স্যার গঙ্গারাম হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।