ঘুরতে বের হয়ে হৃদরোগে স্বামীর মৃত্যু, শোকে স্ত্রীর আত্মহত্যা
ছবি: সংগৃহীত
মাত্র কয়েক মাস আগেই ভালোবেসে ঘর বেধে ছিলেন। আনন্দের সাথে কাটছিল নব দম্পতির সাংসারিক জীবন। সোমবার সকালে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে বের হন। আর এসময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান স্বামী।
আর শোক সইতে না পেরে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে না ফেরার দেশে চলে গেলেন স্ত্রীও। মূলত স্বামী হারানোর শোক সহ্য করতে না পেরে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন স্ত্রী। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজিয়াবাদের এক তরুণ দম্পতি চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যাওয়ার মাধ্যমে তাদের দিন শুরু করেছিলেন। আর ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে উভয়ই মারা গেছেন। ২৫ বছর বয়সী স্বামী অভিষেক আহলুওয়ালি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেও, তার স্ত্রী অঞ্জলি সেই ধাক্কা সহ্য করতে না পেরে সপ্তম তলা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
অভিষেক ও অঞ্জলির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গত বছরের ৩০ নভেম্বর তাদের বিয়ে হয়েছিল। সোমবার দিল্লির চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন দুজন। সেখানেই অভিষেক বুকে ব্যথা অনুভব করতে শুরু করেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
পরে অঞ্জলি তার বন্ধুদের ফোন করেন এবং তার স্বামীকে প্রথমে গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে সফদরজং হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে চিকিৎসকরা অভিষেককে মৃত ঘোষণা করেন। হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়।
Man, 25, Dies After Heart Attack In Delhi Zoo, Shocked Wife Jumps To Death https://t.co/0IuWZW7Zib pic.twitter.com/9bFYO9NQhb
— NDTV (@ndtv) February 27, 2024
এরপর সোমবার রাত ৯টা নাগাদ গাজিয়াবাদের বৈশালীর আহলকন অ্যাপার্টমেন্টে নববিবাহিত দম্পতির বাড়িতে স্বামী অভিষেক আহলুওয়ালির মরদেহ পৌঁছায়।
এদিকে স্বামীর অকালমৃত্যুর শোক সইতে না পেরে অঞ্জলি তাদের সপ্তম তলার বারান্দায় গিয়ে নিচে ঝাঁপ দেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বৈশালীর ম্যাক্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মঙ্গেলবার ভোরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
অভিষেকের আত্মীয় ববিতা বলেন, ‘মৃতদেহ বাড়িতে আনার পর স্ত্রী পাশে বসে কাঁদতে থাকে। তারপর হঠাৎ করে উঠে বারান্দার দিকে দৌড়ে যায়। আমি ভেবেছিলাম সে লাফ দিতে যাচ্ছে। আমি তার পেছনে দৌড়ে যাই, কিন্তু তাকে থামানোর আগেই, সে বারান্দা থেকে নিচে লাফ দেয়।’
সঞ্জীব নামে আরেক আত্মীয় জানান, অভিষেককে প্রথমে চিড়িয়াখানা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘তারা অভিষেকের বন্ধুদের বলেছিল তাকে সফদরজংয়ে নিয়ে যেতে। আমিও সেখানে পৌঁছেছি। আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলেন, তারা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাকে বাঁচাতে পারেনি।’
ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যম বলছে, ২৫-বছর-বয়সীর এই যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু আবারও তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যার উদ্বেগজনক বৃদ্ধির দিকে সবার নজর এনে দিয়েছে।
গত কয়েক বছরে ভারতে গরবা অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে বিয়ের শোভাযাত্রা, এমনকি জিমের মতো জায়গাতেও তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে।