পোষা বিড়ালের কামড়-আঁচড়ে জলাতঙ্ক, বাবা-ছেলের মৃত্যু
বাবা-ছেলের মৃত্যু। ছবি: সংগৃহীত
বর্তমানে বাসা-বাড়িতে বিড়াল পোষার প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে। তরুণ-তরুণীদের মতো সব বয়সের মানুষই এখন বিড়াল পোষার দিকে ঝুঁকছেন। নিজের পোষা বিড়ালকে আদর করতে গিয়ে আঁচড় ও কামড় খান অনেকেই। তবে অনেকেই বিষয়টি গুরুত্ব দেয় না।
তেমনই গুরত্ব দেননি ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের কানপুর দেহাত জেলার আকবরপুর শহরের বাসিন্দা ইমতিয়াজ ও তার ছেলে আজিম। ৫৮ বছর বয়সী ইমতিয়াজকে কামড়ানোর দুদিন পর তার ছেলে আজিমকে (২৪) আঁচড় দেয় তাদের পোষা বিড়াল।
ওই ঘটনার কয়েক দিন পরই তাদের মধ্যে জলাতঙ্কের লক্ষণ দেখা দেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, ইমতিয়াজউদ্দিন নয়ডার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তার ছেলে আজিমও নয়ডাতেই কাজ করতেন। দিন পনেরো আগে বাবা-ছেলে ছুটি নিয়ে আকবরপুরে নিজেদের বাড়িতে যান। আগে থেকেই তাদের বাড়িতে একটি পোষা বিড়াল রয়েছে। সেপ্টেম্বরের কোনো একদিন বিড়ালটিকে রাস্তার একটি কুকুর কামড়েছিল কিন্তু বাড়ির কেউ সেটি জানতেন না। বাড়ি ফিরে বিড়ালটিকে আদর করতে গিয়ে প্রথম কামড় খান ইমতিয়াজ। এর দুই দিন পর বিড়ালটি ছেলে আজিমকে আঁচড় দেয়।
নিজেদের পোষা বিড়াল হওয়ায় তারা এতে খুব একটা পাত্তা দেননি। ইমতিয়াজকে কামড় এবং তার ছেলে আজিমকে আঁচড়ানোর কয়েক দিন পরই বিড়ালটি মারা যায়। এরপরও তারা বিড়ালের মৃত্যু নিয়ে ভাবেননি।
তবে গত ২১ নভেম্বর বাড়ির সবাই একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর আজিম অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় একটি হাসপাতালে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কানপুরে এনে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। এরপর ২৫ নভেম্বর তিনি মারা যান। ওই ঘটনার ঠিক তিন দিন পর ২৯ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়েন ইমতিয়াজ। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ৩০ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়।
চিকিৎসকার জানান, দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে জলাতঙ্কে। বিড়ালটি পরিবারের আর কাউকে কামড়েছে কি না, কারও মধ্যে কোনো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কি না, এখন সে দিকে নজর রাখছে কানপুর স্বাস্থ্য দপ্তর।
এ ঘটনায় কানপুর দেহাত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অলক সিং বলেছেন, ওই এলাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিমকে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়ভাবে সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।