সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে বেড সংকট, ভোগান্তিতে রোগীরা
চিকিৎসাসেবা দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার। আর এই অধিকার গ্রহণ করতে গিয়ে অনেক মানুষ নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হন। বিশেষ করে শীতকালে দেশে আবহাওয়াজনিত কারণে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ নানা রোগে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়েই বেশিরভাগ মানুষ হাসপাতালে ভর্তি। ঠিক এই সময়টাতে বেড সংকটে রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল। রোগীদের অভিযোগ, শীতের এই সময়ে হাসপাতালে বেড সংকট থাকায় ভোগান্তি সহ্য করতে হচ্ছে তাদের।
সম্প্রতি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ঘুরে এবং রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এ সংকটের কথা জানা গেছে। রোগীদের অভিযোগ, এমনিতেই ঠান্ডা, জ্বর এবং নিউমোনিয়া নিয়ে অনেকেই ভর্তি। কিন্তু বেড সংকট থাকায় তারা নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। রোগ থেকে মুক্তি পেতে এসে উল্টো অনেকেই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
অবশ্য বেড সংকটের বিষয়টি স্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, কিছুদিন যাবৎ হাসপাতালে রোগীর চাপ ও বেড সংকট রয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। আশা করি শিগগিরই এই সংকটের সমাধান হবে।
তিন দিন ধরে হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন শিমুল রহমান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কয়েকদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু এখনো বেড পাইনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়েকদিন পর এই সংকটের সমাধান হবে। ফ্লোর ঠান্ডা এবং এখানে থাকার কারণে আমি আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।
তেজগাঁও দক্ষিণপাড়া থেকে শিশু কন্যাকে নিয়ে ভর্তি হয়েছেন সুমাইয়া আক্তার। তিনি বলেন, আমার ৫ বছরের শিশুটি অনেক অসুস্থ। রাতে জ্বর হয় এবং দিনেও জ্বর থাকে। হাসপাতালে বেড সংকট থাকায় আমরা কয়েকদিন ধরে ফ্লোরে ঘুমাচ্ছি। বাচ্চার চিকিৎসা নিতে এসে আমরা আরও ঠান্ডাজনিত সমস্যায় পড়েছি।
৪ দিন ধরে অসুস্থ ছোট বোনকে নিয়ে হাসপাতালে রয়েছেন মিরপুর পল্লবী এলাকার ফিরোজ হোসেন। এসময় ফিরোজ বলেন, এত বড় হাসপাতাল, কোথাও জায়গা হয়নি আমাদের। একদিকে বেড সংকট, অন্যদিকে চিকিৎসা সেবার মান একেবারে নিম্ন। গরিব হওয়ার সুবাদে আমরা এখানে ভর্তি আছি। টাকা-পয়সা থাকলে প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হতাম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. খলিলুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, কিছুটা বেড সংকট আছে সেগুলো চলে আসবে। বেড আসার পর এগুলো ডিস্ট্রিবিউশন করলে এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা অনেক রোগীকে সুন্দরভাবে চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকি। কিছু রোগী বারান্দায় আছেন, তারা কষ্ট করছে। আশা করি দু-একদিনের মধ্যে তাদের চিকিৎসাসেবাসহ সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
কেএম/এসজি