বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ঢাকা মেডিকেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ভোগান্তিতে রোগীরা

ভালো চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রোগীরা আসছেন। তারা বিভিন্ন বিভাগের ডাক্তারদের কাছে গেলে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়ে এমআরআই, এক্সরে, সিটি স্ক্যান, আলট্রাসনোগ্রামসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করতে নির্দেশনা দিচ্ছেন।

কিন্তু রোগীরা ফি জমা থেকে শুরু করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জায়গায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যে যার মতো আগে ঢুকে সেবা নিচ্ছেন। আর এমআরআই’র জন্য দীর্ঘ লাইন থাকলেও দিনে তিন-চারটা বেশি করা হচ্ছে না। এর ফলে কেউ সপ্তাহ কেউবা মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন রোগ বালাই সঙ্গে নিয়ে। অনিশ্চয়তার মাধ্যমে দিন পার করছেন রোগীরা।

ভুক্তভোগীরা জানান, ভালো সেবার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে এসে পদে পদে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগ ও প্যাথলজি বিভাগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আসা বিভিন্ন রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

ঢাকা মেডিকেলের নতুন বিল্ডিংয়ের রেডিওলজি বিভাগে সকাল ১০টার দিকে দেখা যায় হুইল চেয়ারে বসা কবির হোসেন, বয়স ৫৯ বছর। চুয়াডাঙ্গা থেকে এসেছেন। বিভিন্ন সমস্যার কারণে ডাক্তার সিটিস্ক্যান করতে বলেছেন। তিনি সিটি স্ক্যান করেছেন ঠিকই। তবে এজন্য অনেক বেগ পেতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী জান্নাতুন।

পাশের রুমে এমআরআই করা হচ্ছে। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা রফিকুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, ‘আমার স্ত্রীকে নিয়ে পঙ্গু হাসপাতাল, বারডেম ঘুরে শেষে ভালো চিকিৎসার আশায় ঢাকা মেডিকেলে এসেছি। আমার স্ত্রী সোজাভাবে দাঁড়াতে পারে না। তাই ডাক্তারকে দেখিয়েছি। এমআরআই করতে বলেছেন। কয়েকদিন অপেক্ষা করে আজ সিরিয়াল পেয়েছি। কিন্তু ঘণ্টাখানেক হয়ে গেল, এখনো ভেতরে যেতে পারিনি।

এত দেরি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিন থেকে চারটার বেশি এমআরআই করে না। তাই অনেক সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এ সময় জাহিদ নামে একজন স্টাফ বলেন, দিনে তিন-চারটার বেশি এমআরআই হয় না। সিটি স্ক্যান সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে। কিন্তু এমআরআই সেভাবে হয় না। ডাক্তারদের সুপারিশে এমআরআই করা হয় এখানে। এ ছাড়া ভর্তি রোগীদেরও করা হয়। যারা আগে থেকে সিরিয়াল দিয়েছেন তারাই সুযোগ পাবেন। টাকা জমা দিলেও এর বেশি হবে না, আবার কালকে তাদের আসতে হবে।

এ সময় কুমিল্লা থেকে আসা হাফেজা বেগম বলেন, ভালো হওয়ার জন্য ডাক্তার দেখিয়েছি। এমআরআই করতে হবে। এখানে বৃহস্পতিবার এসেছিলাম। তারা বলেছে, আজকে আসতে, এমআরআই করতে এসেছি। কিন্তু ডাকছে না এখনো। এক ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। কখন ডাকবে তাও জানিনা। এখনো টাকা জমা নেয়নি। তাই হবে কিনা জানিনা। এভাবেই দুশ্চিন্তার কথা জানান হাজেরা বেগম।

রেডিওলোজি বিভাগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হচ্ছে এক্সরে। বিভিন্ন এলাকা থেকে এক্সরে করতে এসেছেন অনেকেই। এসময় কাচপুর থেকে আসা ৬০ বছরের নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। ভেতরে যেতে পারছি না। কিন্তু অনেকেই লাইনে না থেকেও ভেতরে ঢুকে যাচ্ছেন। ভালো চিকিৎসা করতে এসে চরম ভোগান্তি রে বাবা এখানে’।

এদিকে ভালো চিকিৎসার জন্য বিভিন্নভাবে রক্ত পরীক্ষারও নির্দেশনা দেন ডাক্তাররা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা জহির ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘শনিবারে রক্ত পরীক্ষা করেছি। একদিন পরই ২০৮ রুমে রিপোর্ট দেওয়ার কথা। কিন্তু আজ সকালে এসেও কোনো রিপোর্ট পাচ্ছি না। কেচি গেটের ভেতর থেকে একবার বলছে দুপুরে, আবার বলছে বিকালে। কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছি না, কখন পাব রিপোর্ট। আসল ঘটনা কি তা বুঝা যাচ্ছে না’।

একই অভিযোগ করেন কাচপুর থেকে আসা কোহিনুরও।

ঝালকাঠি থেকে আসা আব্দুল আউয়াল বলেন, এমআরআই করতে হবে মাসখানেক হয়ে গেছে। ডেট পাচ্ছি না, অবশেষে আজ ডেট পেয়েছি। কিন্তু এখনো বাইরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আজকে পাব কিনা সন্দেহ।

এদিকে রেডিওলজি বিভাগের নিচতলায় দেখা যায়, হোসনেয়ারা বেঞ্চে শুয়ে আছেন। এক্সরে করতে হবে কিন্তু তার স্বজন লাইনে দাঁড়িয়েও সিরিয়াল পাচ্ছে না। অথচ অনেকে এসেই ‘ম্যানেজ’ করে এক্সরে করিয়ে নিচ্ছেন বলে তার মেয়ে তানিয়া অভিযোগ করেন।

এ বিভাগের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হচ্ছে আলট্রাসনোগ্রাম। কুমিল্লা থেকে আসা জাহিদ নামে একজন অভিযোগ করে ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, সকাল আটটায় এসে ব্যাংকের সিরিয়াল দিয়েছি। সামনে ২০ জন ছিল, টাকা জমা দিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রামের সামনে এসে দেখি ৪০ জন। এখনো আমি বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। বাইরে থেকে অনেকে ভেতরে ঢুকে যাচ্ছেন। কিন্তু আমি যেতে পারছি না। তার পেছনে নোয়াখালী থেকে আসা আমেনা বেগম একই অভিযোগ করে বলেন, এখানে কোনো লাইনের বালায় নাই রে বাবা। আমি বয়স্ক মানুষ তাও দাঁড়িয়ে। অনেকেই আগেই চলে যাচ্ছে। যাদের কেউ আছে মনে হয় ঢুকে পড়ছে।

সার্বিক ব্যাপারে জানতে চাইলে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহরিয়া হক জেরিন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘আমাদের দুইটা এমআরআই মেশিন ছিল। একটা দুই বছর হলো নষ্ট হয়ে গেছে। তাই পরিচালককে জানানো হয়েছে। শুনেছি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েও এমআরআই মেশিনের চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। আপাতত একটা দিয়েই ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। দিনে ২০ থেকে ২৩টা এমআরআই করা হচ্ছে। আমাদের অন্যান্য মেশিন ভালো আছে। তাই সাধ্যমতো সেবা দেওয়া হচ্ছে।

রোগীরা ঠিকমতো রিপোর্ট পান না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় ডাক্তাররা ছুটিতে থাকে, অনেকে দেরিতে আসে। এ জন্য সময় মতো দিতে দেরি হয়। এ ছাড়া টেকনেশিয়ানেরও অভাবে রয়েছে। তারা সংখ্যায় বেশি থাকলে পরীক্ষা দ্রুত করা যায়। সাধারণত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রোগীর চাপ বেশি থাকে। তাই একটু ভিড় দেখা যায়। সিরিয়াল মেইনটেইন করার জন্য আনসার বাহিনী রয়েছে। তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারপরও কেউ সেবা না পেয়ে অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেডএ/আরএ/

Header Ad
Header Ad

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে এক বক্তৃতায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যকে (সেভেন সিস্টার্স) স্থলবেষ্টিত বলে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের অভিভাবক হিসেবে বর্ণনা করেন।

ড. ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে স্থলবেষ্টিত। সমুদ্রের সঙ্গে তাদের কোনো সরাসরি সংযোগ নেই। ফলে বাংলাদেশ এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র প্রবেশদ্বার এবং অভিভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।

তার এই মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক নেতা ও কূটনীতিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে অনেক ভারতীয় রাজনীতিবিদ হতাশাজনক এবং নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।

ভারতের আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মন্তব্য করেছেন, ড. ইউনূসের বক্তব্য ভারতের ‘চিকেনস নেক’ করিডোরের দুর্বলতা নিয়ে পাকিস্তান ও চীনের দীর্ঘদিনের প্রচারণাকে উসকে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ আরও জোরদার করতে শক্তিশালী রেল ও সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।

ত্রিপুরার আদিবাসী দল টিপ্রা মোথার নেতা প্রদ্যোত মানিক্য বলেন, ‘১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম ভারতের অংশ হলে আজ এ সমস্যা হতো না। আমাদের বাংলাদেশের পরিবর্তে নিজস্ব সমুদ্রবন্দর প্রয়োজন।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারতের সমুদ্র প্রবেশাধিকার নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতোমধ্যেই চুক্তি রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য অত্যন্ত হতাশাজনক এবং তিনি এ ধরনের মন্তব্য করার অধিকার রাখেন না।’

ড. ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন একাধিক কংগ্রেস নেতা। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা পবন খেরা মন্তব্য করেছেন, ‘বাংলাদেশের এ ধরনের অবস্থান উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।’

Header Ad
Header Ad

মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু

সাবেক ইমাম সোয়ে নেই ওও। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন। বিদায় নিচ্ছে রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজান। শেষ জুমার নামাজ আদায় করতে মুসলমানদের মধ্যে আগ্রহ ছিল চরমে। কিন্তু কে জানত, এই জুমাই শত শত মুসল্লির জীবনের শেষ জুমা হয়ে উঠবে!

গত ২৮ মার্চ, শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। সাগাইং অঞ্চলের পাঁচটি মসজিদে তখন নামাজ আদায় করছিলেন অসংখ্য মুসল্লি। শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিনটি মসজিদ ধসে পড়ে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল মায়োমা মসজিদ। এই মসজিদে নামাজরত প্রায় সবাই প্রাণ হারান।

মায়োমা মসজিদের সাবেক ইমাম সোয়ে নাই ওও তখন মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী শহর মায়ে সোতে অবস্থান করছিলেন। সেখানেও তিনি ভূমিকম্প অনুভব করেন, তবে বুঝতে পারেননি কী পরিমাণ বিপর্যয় তার অপেক্ষায় রয়েছে।

সোয়ে নাই ওও একসময় মিয়ানমারের ইমাম ছিলেন, তবে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে একটি মানবাধিকার সংস্থায় কাজ করছেন। ভূমিকম্পের পরের দিনগুলোতে একের পর এক শোকসংবাদ পেতে থাকেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি জানতে পেরেছেন, তার প্রায় ১৭০ জন আত্মীয়, বন্ধু ও প্রাক্তন মুসল্লি মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই মসজিদে অবস্থান করছিলেন, অনেকেই মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোয়ে নাই ওও বিবিসিকে বলেন, ‘আমি প্রাণ হারানো সব মানুষের কথা ভাবছি। তাদের শিশুদের কথা ভাবছি... এই শোক সহ্য করা অসম্ভব।’

সাগাইং অঞ্চল মূলত বৌদ্ধ মন্দিরের জন্য পরিচিত হলেও এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। নানা নিপীড়ন ও নির্যাতন সত্ত্বেও তারা এ অঞ্চলে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভূমিকম্পের সময় মসজিদে নামাজরত অবস্থায় প্রায় ৫০০ মুসলমান মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মসজিদ সংলগ্ন মায়োমা স্ট্রিট ও শহরতলি। ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে পড়েছে, রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে।

এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সাগাইং ও মান্দালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনো ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশটির জান্তা সরকার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭১৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৪৪১ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৫২১ জন। জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং এক টেলিভিশন ভাষণে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

মিয়ানমারের ভূমিকম্পটি ছিল ৭ দশমিক ৭ মাত্রার। এর কেন্দ্রস্থল ছিল মান্দালয় শহর থেকে ১৭.২ কিলোমিটার দূরে এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম কম্পনের ১২ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার আফটারশক হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধারকর্মীরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!

টাঙ্গাইলের গোপালপুর নলিন এলাকায় যমুনার দুর্গম চরে ঈদ উপলক্ষে ঘুড়ি উৎসব। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

আবহমান গ্রাম-বাংলা থেকে হারাতে বসেছে শৈশবের চিরচেনা ঘুড়ি উড়ানো উৎসব। আর সেই হারানো ঐতিহ্যকে ফেরাতে ও বর্তমান প্রজন্মের সামনে ঘুড়ি উড়ানোর উৎসবকে তুলে ধরতে ‘এসো উড়াই ঘুড়ি, বাংলার ঐতিহ্য লালন করি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ উদযাপন উপলক্ষে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার নলিন বাজারের পাশে যমুনার ধূ-ধূ বালুচরে মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে এবং স্থানীয় সেচ্ছাসেবী আমরা গোপালপুরবাসী ফেসবুক গ্রুপ ও শুভশক্তি বাংলাদেশের সহযোগিতায় ঘুড়ি উৎসব পালন করা হয়।

এই ঘুড়ি উৎসবে নানা শ্রেণি পেশার মানুষসহ স্কুল পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থী নানা রঙয়ের, নানা বর্ণের রঙিন ঘুড়ি নিয়ে বালুময় চরে বিকাল বেলা সমবেত হয়। পরে একে একে ঘুড়ি উড়ানো ও ঘুড়ির সুতা কাটাকাটি খেলা শুরু হয়। তারপর সন্ধ্যায় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে বাউল গানের আড্ডায় মেতে ওঠে বিনোদনপ্রেমিরা।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ঘুড়ি উড়াতে আসা স্কুল শিক্ষার্থী আসফিয়া জান্নাত আদরিতা বলেন- ছোট বেলা শহরে থাকি, এবার পরিবার সঙ্গে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। এর আগে কখনো ঘুড়ি দেখেনি বা ঘুড়ি উড়ানো হয়নি। এবারই প্রথম ঘুড়ি উড়ানো উৎসবে এসেছি এবং উড়িয়েছি। এখানে এসে সত্যিই ভাল লাগছে।

মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েক বছর ধরে আমাদের স্কুল থেকে চরাঞ্চলে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করছে আসছে। আমরা কয়েক দিন ধরে নানা রঙয়ের বিভিন্ন ঘুড়ি তৈরি করেছি। নদীর পাড়ে বিকাল বেলা এমন উৎসবে অনেক আমাদের অনেক সহপাঠিরা তাদের মা-বাবা নিয়ে আনন্দ উপভোগ করছেন।

ঘুড়ি উৎসবে অংশ নেওয়া স্কুল শিক্ষিকা শামীমা ইয়াসমিন বলেন, কর্ম ব্যবস্ততার কারণে যমুনা চরাঞ্চলে আসার সুযোগ হয় না। বসন্ত বরণ উপলক্ষে গতবারের ন্যায় এবারো ময়না আপার ডাকে ঘুড়ি উৎসব উদযাপনে পরিবার নিয়ে অংশ গ্রহণ করেছি। চরাঞ্চলের এমন উৎসবে আসতে পেরে খুব ভাল লাগছে।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঘুড়ি উৎসব আয়োজক আঞ্জু আনোয়ারা ময়না বলেন, গ্রাম-বাংলা ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ২০১৯ সাল থেকে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে ঘুড়ি উৎসব পালন করে আসছি। এরই ন্যায় এবার ঈদের পর এই আয়োজন করা হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর লোকজনের উপস্থিত বেড়েছে। প্রতিবছরই এমন ঘুড়ি উৎসব উদযাপন করা হবে।

গোপালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, ছোট বেলা আমি নিজেও ঘুড়ি উড়িয়েছি, এটিতে আলাদা একটি আনন্দ আছে। আমি মনে করি বাঙালির এই ঘুড়ি উড়ানোর মধ্যে দিয়ে সংস্কৃতির যে একটা অতীত সম্বৃদ্ধির অতীতকে স্মরণ করে থাকে। এটি একটি বিশুদ্ধ প্রতিযোগিতা। এমন আয়োজনে অংশ নিতে পেরে ভালো লাগছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল হাসান বলেন, ঘুড়ি উৎসব আমাদের প্রাণের একটি উৎসব। এমন পরিবেশে বর্ণিল এই রঙিন ঘুড়ি উৎসব কখনো দেখার সুযোগ হয়নি। দীর্ঘদিন পর এভ ঘুড়ি উৎসবে প্রাণ ফিরেছে সেই শৈশবে। ঈদ আনন্দের দ্বিতীয় দিনে বর্ণিল রঙিন রঙের ছটায় ঘুড়ি হাতে নিয়ে নীল আকাশে উড়িয়েছি। উৎসবে পরিবার নিয়ে অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক পুরস্কার নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা
শান্তিপূর্ণ ঈদ উদযাপনে সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা