রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪ | ৯ আষাঢ় ১৪৩১
Dhaka Prokash

আবারও একসাথে তাহসান-মিথিলা, যা ঘটলো

অভিনেতা তাহসান খান ও অভিনেত্রী রাফিয়াত রশীদ মিথিলা। ছবি: সংগৃহীত

বিচ্ছেদের পর প্রথমবারের মতো একমঞ্চে হাজির হলেন দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা তাহসান খান ও অভিনেত্রী রাফিয়াত রশীদ মিথিলা। তাহসান খান ও রাফিয়াত রশিদ মিথিলা এক সময়ের জনপ্রিয় তারকা দম্পতি ছিলেন। একসঙ্গে বহু কাজও করেছেন এই জুটি।

কিন্তু ২০১৭ সালে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদের পর মন ভাঙে বাঙালি দর্শকের। তবে বিচ্ছেদ হলেও তাহসান-মিথিলার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় ছিলো সব সময়। সেটাই যেন আরো একবার প্রমাণ করলেন তারা।

সম্প্রতি তারা ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন। এটির নাম ‘বাজি’, নির্মাণ করেছেন আরিফুর রহমান। ঈদে স্ট্রিমিং হবে এটির। সে উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১১ জুন) রাজধানী গুলশানের একটি ক্লাবে ডাকা হয় সংবাদ সম্মেলন। অতিথি মঞ্চে দেখা গেছে তাহসান ও মিথিলাকে। এই দুই তারকাকে একমঞ্চে হাস্যোজ্জ্বল ভাবেই দেখা গেছে। তাদের মাঝখানে বসে ছিলেন চরকির সিইও রেদওয়ান রনি।

সংবাদ সম্মেলনে একই মঞ্চে তাহসান-মিথিলা। ছবি: সংগৃহীত

এদিকে বাজির মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো ওটিটি প্লাটফর্মে অভিষেক ঘটছে তাহসানের। ওটিটিতে অভিষেক প্রসঙ্গে তাহসান খান বলেন, ‘ওটিটিতে আমার প্রথম কাজ, চরকিতেও আমার প্রথম কাজ। আর একদম ভিন্নধর্মী গল্পে কাজ করার অভিজ্ঞতা। সব মিলিয়ে আমি খুবই এক্সাইটেড, এখন শুধু রিলিজের পর দর্শকদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’

পরিচালক আরিফুর রহমান বলেন, ‘যত্ন নিয়ে নিজেদের সবটুকু দিয়েই বানানো হয়েছে সিরিজটি। অভিনয়শিল্পী থেকে কলাকুশলী সবারই চেষ্টা ছিল দর্শকদের ভিন্ন কিছু দেয়ার, আশা করছি সবার ভালো লাগবে।’

সিরিজে অভিনয় প্রসঙ্গে রাফিয়াত রশিদ মিথিলা বলেন, ‘চরকির সাথে এর আগেও কাজ হয়েছে। অভিজ্ঞতা বেশ ভালো। এবার আরও ভালো কিছু হবে, অন্যরকম একটা গল্প, কাজের অভিজ্ঞতাটাও বেশ ইন্টারেস্টিং।’

জানা গেছে, ক্রিকেট খেলায় বাজি’র প্রভাব নিয়ে তৈরি হয়েছে এই সিরিজ। যাতে ক্রিকেটারের চরিত্রে দেখা যাবে তাহসান খানকে। আর মিথিলা অভিনয় করেছেন সাংবাদিক চরিত্রে। ওটিটি প্লাটফর্ম চরকিতে ঈদে মুক্তি পাবে এই সিরিজ। সিরিজটিতে তাহসান খান ও মিথিলা ছাড়াও অভিনয় করেছেন মিম মানতাসা, মনোজ প্রামাণিক, নাজিয়া হক অর্ষা, শাহাদাৎ হোসেন, পার্থ শেখ, তাসনুভা তিশা, আবরার আতহারসহ আরও অনেকে।

Header Ad

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘিরে বন্ধ থাকবে যেসব সড়ক

ছবি: সংগৃহীত

ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সব আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া দেশের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ রবিবার। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পথ হেঁটে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রচনার সূতিকাগার দলটির ‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুপুর সোয়া ২টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় যোগ দেবেন। এ জনসভা উপলক্ষে রাজধানীর বেশকিছু সড়কে যান চলাচল বন্ধ বা সীমিত ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।

ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ উদযাপন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের চলাচল উপলক্ষে আশপাশের এলাকায় কয়েকটি সড়ক বন্ধ বা ডাইভারশন থাকবে।

বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং, শাহবাগ ক্রসিং, কাঁটাবন ক্রসিং, টিএসসি, দোয়েল চত্বর ও মৎস্য ভবন ক্রসিংয়ে যানবাহন চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে ডিএমপির ট্রাফিক-রমনা বিভাগ। আওয়ামী লীগের প্লাটিনাম জয়ন্তী অনুষ্ঠান চলাকালে চলাচলের জন্য নগরবাসীকে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করার অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।

এ ছাড়া জনসভায় আসা গাড়ি কোন কোন জায়গায় পার্ক করা যাবে তারও একটি তালিকা দিয়েছে ডিএমপি। বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠ, মুহসীন হল মাঠ ও ফুলার রোড এলাকার রাস্তার দুই পাশে গাড়ি রাখা যাবে।

ভারতের কাছে হেরে সেমিফাইনালের স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের

ছবি: সংগৃহীত

আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার এইটের ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫০ রানে হারিয়েছে ভারত। এ যেন বাংলাদেশের এক অসহায় আত্মসমর্পণ। শনিবার (২২ জুন) আগে ব্যাট করে বাংলাদেশকে ১৯৭ রানের লক্ষ্য দেয় ভারত। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। এতে রানের ৫০ জয় পায় ভারত।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালো শুরু করে তানজিদ তামিম এবং লিটন দাস। দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন। ১০ বলে ১৩ রান করে ক্যাচ আউট হন এই টাইগার ওপেনার।

তিনে ব্যাট করতে নেমে তামিমকে সঙ্গে দলের হাল ধরেন নাজমুল হাসান শান্ত। লিটনের বিদায়ের পর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন তানজিদ তামিম। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি এই তরুণ ব্যাটারও। ৩১ বলে ২৯ রান করে কুলদ্বীপ যাদবের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তিনি।

এদিন ইনিংস বড় করতে পারেননি হৃদয়ও। ৬ বলে ৪ রান করেন এই ডান হাতি ব্যাটার। ৭ বলে ১১ রান করে ফেরেন সাকিবও। তবে এক প্রান্ত আগলে রাখেন শান্ত। তবে ফিফটি পাননি তিনি। ৩২ বলে ৪০ রান করে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন শান্ত।

এরপর জাকের আলী ১ রান আউট হলে পিচে এসে ব্যাট চালাতে থাকেন রিশাদ হোসেন। তাকে সঙ্গ দেন রিয়াদ। ৯ বলে ২৪ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে আউট হন রিশাদ। এতে ৬ বলে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় রান।

শেষ পর্যন্ত শেখ মাহেদীর ৫ রান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ১৫ বলে ১৩ রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। এতে রানের ৫০ জয় পায় ভারত।

ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন কুলদ্বীপ যাদব। এ ছাড়া জাসপ্রিত বুমরাহ এবং আর্শদ্বীপ সিং দুটি , হার্দিক পান্ডিয়া নেন এক উইকেট।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই টাইগার বোলারদের উপর চড়াও হয় রোহিত এবং কোহলি। তবে ইনিংস ড় করতে পারেননি রোহিত। ১১ বলে ২৩ রান করে সাকিবের প্রথম শিকার হন তিনি। রোহিত আউট হলেও ব্যাট চালাতে থাকেন কোহলি।

৯তম ওভারে তানজিম সাকিবের হাতে বল তুলে দেন শান্ত। অধিনায়কের ভরসার প্রতিদানও দিয়েছেন সাকিব। ওভারের প্রথম বলে কোহলিকে বোল্ড আউট করেন তিনি। ২৮ বলে ৩৭ রান করে কোহলি আউট হলে পিচে এসেই ছক্কা হাঁকান সূর্যকুমার যাদব। তবে পরের বলেই এই মারকুটে ব্যাটারকে ফিরিয়ে দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন জুনিয়র সাকিব।

কিন্ত এক প্রান্ত আগলে রাখেন পান্থ। মারকুটে মেজাজে রান তুলতে থাকেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তবে ১২তম ওভারে রিশাদের বলে ক্যাচ আউট হন পান্থ।

এরপর ভারত শিবিরে হাল ধরেন শিভাম ডুবে এবং হার্দিক পান্ডিয়া। দুজনের ব্যাটে করে বড় সংগ্রহের দিকে এগোতে থাকে ভারত। তবে ১৮তম ওভারে রিশাদের বলে বোল্ড আউট হন ডুবে। ২৪ বলে ৩৪ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত হার্দিক পান্ডিয়ার ২৭ বলের অপরাজিত ৫০ রানের ইনিংসে ভর করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৬ রানের বড় পুঁজি পায় ভারত। সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ১৯৭ রান।

আওয়ামী লীগের প্লাটিনাম জয়ন্তী আজ

ছবি: সংগৃহীত

আজ ২৩ জুন। বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার প্লাটিনাম জয়ন্তী। আওয়ামী লীগের হাত ধরেই রচিত হয়েছে পাকিস্তানি শোষকদের বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রাম। প্রতিষ্ঠার পর থেকে টানা ৭৫ বছর ধরে বাংলাদেশের রাজনীতির অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে বর্তমান ক্ষমতাসীন এ দলটি।

গত সাড়ে সাত দশক ধরে আওয়ামী লীগের পথচলা ছিল গৌরবোজ্জ্বল। দীর্ঘ এই পথচলায় সংগঠনটি বাঙালি জাতির অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে সফলতার মুকুটে সংযুক্ত করেছে একের পর এক পালক।

পৃথিবীর খুব কম সংগঠন আছে যারা ধারাবাহিক সাফল্য নিয়ে ‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ উদযাপন করার সৌভাগ্য অর্জন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে এরই মধ্যে দলটির পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের আত্মপ্রকাশের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এ রাজনৈতিক দলটি। এটিই ছিল তৎকালীন পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল।

দলটির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি হন মওলানা হামিদ খান ভাসানী। রোজ গার্ডেনে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পর মওলানা ভাসানীকে একটি নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করার দায়িত্ব দেওয়া হলে তিনি অন্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে ৪০ জনের একটি কমিটি ঘোষণা করেন। সেই কমিটির সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক। সহসভাপতি করা হয় আতাউর রহমান খান, আহমেদ আলী খান, আলী আমজাদ খান, শাখাওয়াত হোসেন ও আবদুস সালাম খানকে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন কারাগারে আটক থাকলেও, আওয়ামী লীগের প্রথম কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয় তাকে। কেন্দ্রীয়ভাবে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ করা হলেও পরবর্তী সময়ে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নামকরণ করা হয় ‘আওয়ামী লীগ’।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর ১৯৫৫ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিলে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। আর ‘পূর্ব পাকিস্তান’ শব্দ দুইটি বাদ পড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে। বাংলাদেশে স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর থেকে প্রবাসী সরকারের সব কাগজপত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নাম ব্যবহার শুরু হয়। ১৯৭০ সাল থেকে এই দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। পরবর্তী সময়ে দেশের অন্যতম প্রাচীন সংগঠনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এ দেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বের জন্যই আওয়ামী লীগকে ’৭০-এর নির্বাচনে পূর্ব-বাংলার মানুষ তাদের মুক্তির ম্যান্ডেট দিয়েছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ ভূখন্ডে প্রতিটি প্রাপ্তি ও অর্জন সবই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হয়েছে। মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাঙালির যা কিছু অর্জন এবং বাংলাদেশের যা কিছু উন্নয়ন, সবটার মূলেই রয়েছে আওয়ামী লীগ।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ এবং বিশিষ্টজনরাও মনে করেন, আওয়ামী লীগের অর্জন পাকিস্তান আমলের গণতান্ত্রিক অর্জন। এই দলের অর্জন বাংলাদেশের অর্জন। জাতির জন্য যখন যা প্রয়োজন মনে করেছে, সেটি বাস্তবায়ন করেছে দলটি। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, সব আন্দোলন সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করেছে আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতার পর থেকে দেশ বিরোধীদের ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ধ্বংস্তুপ থেকে উঠে এসে স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছে, প্রতিষ্ঠা করেছে গণতন্ত্র।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই প্রথম স্বপ্ন দেখেন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার শুরুতেই একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল গঠনের কথা ভাবেন বঙ্গবন্ধু। তিনি মনে করতেন পাকিস্তান হয়ে যাওয়ার পর সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের আর দরকার নাই। একটা অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হবে, যার একটা সুষ্ঠু ম্যানিফেস্টো থাকবে।

এই ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে লিখেন, ‘আমি মনে করেছিলাম, পাকিস্তান হয়ে গেছে; সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের দরকার নাই। একটা অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হবে। যার একটা সুষ্ঠু ম্যানিফেস্টো থাকবে। ভাবলাম, সময় এখনও আসে নাই। তাই যারা বাইরে আছেন তারা চিন্তাভাবনা করেই করেছেন।’

’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুবের সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন, ’৬৪-এর দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ও ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পথ পেরিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২৪ বছরের আপোষহীন সংগ্রাম-লড়াই এবং ১৯৭১ সালের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ তথা সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

স্বাধীনতা পরবর্তীতে পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টা হলেও দীর্ঘ একুশ বছর লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে দলটি ক্ষমতায় ফিরে আসে ২৩ জুন। পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অপশাসন, দমন পীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ ‘দিন বদলের সনদ’ ঘোষণা দেয় এবং ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়ে দলটাকে আবারও ক্ষমতায় বসায় জনগণ। সেই থেকে টানা ৪ বার নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকর করেছে। ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে এবং রায়ও কার্যকর করা হচ্ছে। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ করা হয়েছে।

গত ১৫ বছরে নিজের অসামান্য নেতৃত্বগুণে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সেই উন্নয়নের সুফল প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ৬ বছরের নির্বাসন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। নব উদ্যোমে সংগঠিত হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাঙালি জাতির হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের এক নবতর সংগ্রামের পথে যাত্রা শুরু করে আওয়ামী লীগ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরে শেখ হাসিনা গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই দলের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এই দলের নেতাকর্মীদের প্রেরণার উৎস এবং তা সংগঠনকে করেছে সমৃদ্ধ। তার আপোষহীন, সুদক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে স্বৈরতন্ত্রের জাল ছিঁড়ে গণতন্ত্রের স্বাদ পেয়েছিল বাংলার জনগণ। কালের বিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বাপ্নিক অভিযাত্রী আওয়ামী লীগ।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথপরিক্রমায় অনেক অশ্রু, ত্যাগ আর রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি ফিরে পায় ‘ভাত ও ভোটের অধিকার’; দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা।

আজ শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে ও সুদক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনায় সুশাসন, স্থিতিশীল অর্থনীতি, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, উন্নয়নে গতিশীলতা, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ, কর্মসংস্থান, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, খাদ্য নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়নের ফলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। ৭৫ বছরে দেশ আজ উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং সাফল্যের জয়গানে মুখরিত। অপ্রতিরোধ্য আওয়ামী লীগ কেবল অতীত বর্তমান নয়, বাংলাদেশের ভবিষ্যতের নির্মাতা।

রোববার (২৩ জুন) ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এরই মধ্যে ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। প্লাটিনাম জয়ন্তী ঘিরে কর্মসূচির মধ্য রয়েছে, রোববার সূর্য উদয় ক্ষণে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। এরপর সকাল ৭ টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।

এছাড়াও সকাল সাড়ে ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একটি প্রতিনিধি দল। এ দলের সদস্যরা হলেন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেগম শামসুন্নাহার, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।

এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হবে। এরপর দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার কথা রয়েছে।

আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণের পাশাপাশি বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচির মাধ্যমে জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের জেলা বা মহানগর, উপজেলা বা থানা, পৌর বা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড শাখাসহ সব স্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সর্বশেষ সংবাদ

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘিরে বন্ধ থাকবে যেসব সড়ক
ভারতের কাছে হেরে সেমিফাইনালের স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের
আওয়ামী লীগের প্লাটিনাম জয়ন্তী আজ
কেটে ফেলা হলো গোপালগঞ্জের সেই কথা বলা আলোচিত গাছ
ইরানে জনপ্রিয় গায়কের মৃত্যুদণ্ড বাতিল
দিল্লি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
নওগাঁয় বিষধর সাপের কামড়ে প্রাণ গেল কৃষকের
হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুদ আছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কাবাঘরের চাবিরক্ষক সালেহ বিন জাইন আর নেই
নওগাঁয় বেশি দামে বাসের টিকিট বিক্রি করায় কয়েকটি পরিবহনকে জরিমানা
বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট
ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মাহার পুরস্কার কেন ফিরিয়ে নিল আমেরিকান সংস্থা?
পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে বিএফইউজে ও ডিইউজের উদ্বেগ
বাস কেড়ে নিল লেগুনা চালকের প্রাণ
মারা গেলেন ফুটবল কিংবদন্তি পেলের মা
সিলেট বিভাগের এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা স্থগিতের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
বিয়ের মাইক্রোবাস খালে পড়ে নিহত ৮
ছাগলকাণ্ডের সেই এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর কোথায়, জানে না কেউ
দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে নওগাঁর বিখ্যাত আম্রপালি
বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর গাড়ি বিকল, যানবাহনের দীর্ঘ লাইন