হাতির ওপর নির্যাতন বন্ধে জয়া আহসানের রিট
ছবি: সংগৃহীত
হাতির সার্কাস, হাতির পিঠে ভ্রমণ, বিয়ে বাড়িতে শোভাবর্ধন, বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের র্যালিতে বিজ্ঞাপনের মতো বিভিন্ন বিনোদন কাজে ব্যবহার করা এবং এই ব্যবহারের জন্য হাতিকে বাধ্য করতে নির্যাতনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া বন্ধ করতে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে।
প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের পক্ষে রাকিবুল হক এমিল এবং অভিনেত্রী জয়া আহসান রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিটটি দায়ের করেন।
রিটে পরিবেশ সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ২৫ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে হাইকোর্টের যেকোন একটি বেঞ্চে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে। রিটে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিস্ক্রিয়তা এবং ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
রিটের দায়েরের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব।
পরে আইনজীবী ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব বলেন, বাংলাদেশের বন্দি হাতিকে অমানুষিক নির্যাতনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া বন্ধ, হাতিকে বিনোদনের কাজে ব্যবহার এবং হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনটি বেশ কয়েক বছর ধরে নানান কর্মসূচি দিয়ে আসছে। এর মাঝে দুইবার বন ভবন ঘেরাও করেন প্রাণী অধিকারকর্মীরা। এ সময় বন বিভাগের পক্ষ থেকে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কোনো ফলপ্রসূ ভূমিকা লক্ষ করা যায়নি। নির্যাতিত হাতিদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো উপযুক্ত জবাব আসেনি।
এ কারণে হাতির ওপর নির্যাতন বন্ধ এবং বিনোদনের জন্য হাতির ব্যবহার বন্ধে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
রিটে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিস্ক্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
আইনজীবী সাকিব মাহবুব বলেন, আইইউসিএনের (IUCN) লাল তালিকাভুক্ত প্রাণী হিসেবে এশিয়ান হাতি বর্তমানে মহাবিপদাপন্ন হওয়া সত্ত্বেও এই হাতিকে বনবিভাগ কর্তৃক ব্যক্তি মালিকানায় সার্কাসের কাজে ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টি বর্তমানে প্রশ্নবিদ্ধ। সার্কাস ও চাঁদাবাজিতে বাধ্য করতে শৈশব থেকেই মা হাতির কাছ থেকে শাবককে ছাড়িয়ে নিয়ে নির্মম অত্যাচারের মধ্য দিয়ে প্রশিক্ষিত করা হয়।
তিনি বলেন, হাতির মাহুত চাঁদাবাজির সময় একটি ধাতব হুক হাতে নিয়ে বসে থাকে। যা দিয়ে সে হাতির শরীরের বিভিন্ন দুর্বল স্থানে আঘাত করে চাঁদাবাজিসহ মানুষের ওপর চড়াও হতে বাধ্য করে। এই প্রক্রিয়াটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ এবং প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯ এর পরিপন্থি।