‘আনুষ্ঠানিকতা আমার ভালো লাগে না’
কিংবদন্তি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেত। তিনি একধারে উপস্থাপক, পরিচালক, অভিনেতা, প্রযোজক ও লেখক। নানামাত্রিক গুণের অধিকারি খ্যাতিমান গুণী এই মানুষটির জন্মদিন আজ। এ উপলক্ষে ঢাকাপ্রকাশ-এর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন হানিফ সংকেত।
ঢাকাপ্রকাশ: শুভ জন্মদিন
হানিফ সংকেত: ধন্যবাদ।
ঢাকাপ্রকাশ: কেমন কাটছে আজকের দিন?
হানিফ সংকেত: খুব ভালো কাটছে।
ঢাকাপ্রকাশ: জন্মদিন নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
হানিফ সংকেত: কোনো পরিকল্পনা নাই। জন্মদিন নিয়ে আমি কখনো কিছুই করি না। জন্মদিন মানে একটা দিন চলে যাওয়া। সুতরাং এটা আমার কাছে কোনো বাড়তি আকর্ষণের দিন না। এটা আমার কাছে একটা ব্যথার দিন। মনে হয় আস্তে আস্তে সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে। মনে হয় জীবনের অনেক কাজ বাকি রয়ে গেছে। এই কাজগুলো কখন করব। জন্মদিন এলেই মনে হয় আরও একটি বছর চলে গেলো জীবন থেকে। কী করলাম-কিছুইতো করতে পারলাম না। এজন্য এ দিনটি আমি আনন্দ ফুর্তি নিয়ে কাটাই না।
ঢাকাপ্রকাশ: জন্মদিনে আপনাকে খুব বেশি সরব দেখা যায় না। এর কারণ কী?
হানিফ সংকেত: জন্মদিনে আমি কোনো স্ট্যাটাস দেই না। আমার জন্মদিন অনেকেই জানেও না। আমি নিজে থেকে কোনো প্রচারও করি না। জন্মদিনে অনেক মানুষ অনুষ্ঠান করে বিশাল করে। আমার পরিবার আমাকে শুভেচ্ছা জানায়। নিজেরা নিজেরা এদিনটি কাটাই। আমার ছেলে, ছেলের বউ, আমার মেয়ে শুভেচ্ছা জানায়। আমার অফিসের কয়েকজন কলিগরাও শুভেচ্ছা জানায়। আমরা সবাই মিলে একটু ভালো মন্দ খাই। এভাবেই কেটে যায় জন্মদিন।
ঢাকাপ্রকাশ: দেশে এবং দেশের বাইরে আপনার অসংখ্য ভক্ত রয়েছে। তারাও তো আপনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়। এই বিষয়টা কেমন উপভোগ করেন?
হানিফ সংকেত: আমার জন্মদিনের কথা অনেকেই জানেই না। জন্মদিন আসলে ওভাবে পালন করি না তো। আমি একটু নীরব থাকি। আমি প্রচারবিমুখ কর্মী। যতোটুকু পারি নিজের মতো করে থাকতে চেষ্টা করি। এসব আনুষ্ঠানিকতা আমার ভালো লাগে না। এসব আমি পছন্দও করি না।
ঢাকাপ্রকাশ:আগের জন্মদিন থেকে এবারের জন্মদিনের বিষেশ কোনো পার্থক্য অনুভব করছেন কি?
হানিফ সংকেত: আগেকার দিনে কেউ জন্মদিন পালনই করতো না। এটা চালু হয়েছে মূলত কয়েক বছর আগে থেকে। আগে কেউ জন্মদিন পালন করতো না। আমার জন্মদিন কখনোই পালন করা হতো না। তাই আমি বিশেষ কোনো পার্থক্য বুঝতে পারি না। এগুলো আমার ভালো লাগে না। আমি জন্মদিন নিয়ে উচ্ছ্বসিত না, উদ্বেলিত না। জন্মদিন আসলে আমার মনে পড়ে এই বছর এমন একটা দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছিলাম। যখন দিনটা চলে যায় তখন মনে হয় আহারে আরেকটা বছর চলে গেল জীবন থেকে। কত সময় আস্তে আস্তে কমে আসছে। কাজের গতি কমে যাবে। অনেক কাজ বাকি। কতটুক করতে পারলাম, কতটুক করার দরকার ছিল।
ঢাকাপ্রকাশ: ক্যারিয়ারে অসংখ্য কাজ করেছেন আপনি। তারপরও অন্যদের তুলনায় আপনার প্রকাশটা খুব কম। কীভাবে নিজেকে সামলান?
হানিফ সংকেত: আমি তো দুইটা কাজ করেই কিংবদন্তি হতে চাই না। আজকাল তো দুইটা কাজ করলেই কিংবদন্তি হয়ে যায়। আমি মূলত কাজের মানুষ। তাই কাজের দিকে আমার ফোকাসটা বেশি।
ঢাকাপ্রকাশ: আজকের এই বিশেষ দিনে জীবনের কোনো কথাটি বেশি মনে পড়ছে?
হানিফ সংকেত:আমি আসলে এতকিছু ভাবি না। অতীতের কথাও ওভাবে চিন্তা করি না। আজকের যে কাজ সেটাই করছি। তবে একটুখানি খারাপ লাগে যে, জীবন থেকে আরেকটি বছর চলে গেল। প্রতিদিন যেভাবে কাজ করি আজও সেভাবেই কাজ করছি। অন্যান্য দিনের মতোই আজকেও কাজ করছি।
এএম/এমএমএ/