ঘুমাতো না ছেলে, আমাদের অপরাধী সাজালেন কেন?প্রশ্ন শাহরুখের
২০২১ সালের ২ অক্টোবর। মুম্বাই থেকে গোয়াগামী প্রমোদতরী থেকে শাহরুখ খানের বড় পুত্র আরিয়ান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সে দিন। নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র আতসকাচের তলায় ছিলেন তারকা-সন্তান ছাড়া আরও অনেকে। মাদক মামলা দায়ের হয় তাদের বিরুদ্ধে। প্রায় এক মাস জেলে কাটিয়ে জামিনে ছাড়া পান আরিয়ান। সদ্যই সপ্তাহ দুয়েক আগে এনসিবি ক্লিনচিট দিয়েছে তাকে। চূড়ান্ত চার্জশিটে নাম নেই আরিয়ানের। সেখানে জানানো হয়েছে যে, আরিয়ানকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, কারণ তাদের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের কোনও প্রমাণ মেলেনি। কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন খান পরিবার। দেশজুড়ে তাদের পরিবার নিয়ে কটাক্ষ, সমালোচনা, জলঘোলা চলেছে।
সম্প্রতি আইপিএস অফিসার সঞ্জয় সিং এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়ে তখনকার কিছু অজানা তথ্য প্রকাশ করেছেন। গত নভেম্বর মাসে মাদক-কাণ্ডের তদন্তের জন্য গঠিত হয়েছিল ‘সিট’। তার প্রধান ছিলেন সঞ্জয়। আরিয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়ে কী কী কথোপকথন হয়েছিল তা জানা গেল। সঞ্জয় জানালেন, আরিয়ানের কয়েকটি প্রশ্ন তাকে চমকে দিয়েছিল। শাহরুখ-পুত্র তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘স্যর, আমার কি এই প্রাপ্য ছিল? আমাকে আপনারা আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারী হিসেবে দাগিয়ে দিয়েছেন, যে কিনা মাদক পাচার করে ব্যবসা করে। এই সমস্ত অভিযোগ আজগুবি নয় কি? প্রমোদতরীতে সে দিন আমার কাছে কোনও মাদক পাওয়া যায়নি, তবুও আমাকে গ্রেফতার করা হল। আমার সঙ্গে খুব খারাপ করলেন আপনারা। আমার ভাবমূর্তিতে কালিমালিপ্ত করা হল। আমাকে এতগুলি সপ্তাহ কেন কারাবন্দি থাকতে হল? আমার কি সত্যি এটাই পাওনা ছিল?’
সঞ্জয়ের কথায় আরও জানা যায়, শাহরুখ নিজে থেকে তার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। বাকি যারা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তাদের অভিভাবকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন বলে বলি তারকার সঙ্গেও দেখা করতে রাজি হন তিনি। তার সঙ্গে কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেছিলেন বলিউডের বাদশা। সঞ্জয়কে তিনি জানান, তার ছেলে রাতে ঘুমতে পারছে না। মধ্য রাতে বারবার উঠে উঠে শাহরুখ ছেলের ঘরে গিয়ে দেখে আসতেন, তিনি ঠিক আছেন কিনা। সারা রাত বসে কথা বলতেন আরিয়ানের সঙ্গে। ছেলের মানসিক পরিস্থিতির কথা ভেবে আতঙ্কে থাকতেন কিং খান। তিনি নাকি সঞ্জয়কে বলেন, ‘আপনারা আমাদের এমন ভাবে চিহ্নিত করছেন, যেন আমরা রাক্ষস বা বড় কোনও অপরাধী। আমরা যেন সমাজকে ধ্বংস করার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছি। প্রতি দিন কাজে যাওয়া দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে যে।’