হুবহু সত্যজিৎ হতে...
বাহ্যিক চেহরা বদল তো ছিলই। রূপসজ্জা শিল্পী সোমনাথ কুন্ডুর হাতে গালে ব্রণের দাগ, গায়ের রঙ বদল করে শ্যামলা অবয়ব, চিবুকে বড় আঁচিল, পাশাপাশি অন্তরেও ধীরে ধীরে সত্যজিৎ রায় হয়ে উঠতে হয়েছে জিতু কমলকে। আনন্দবাজার অনলাইনকে জিতুর স্ত্রী অভিনেত্রী নবনীতা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র চরিত্রের খাতিরে চিকিৎসকের সাহায্যে নিয়ে শারীরিক পরিবর্তনও ঘটিয়েছেন অভিনেতা। সত্যজিৎ এবং জিতুর দাতেঁর পাটি আলাদা। তাই হুবহু সত্যজিৎ রায় হতে সেখানেও সাদৃশ্য এনেছেন এই অভিনেতা।
ড্রিল মেশিন দিয়ে ঘষে ঘষে ফাঁক করা হয়েছে অভিনেতার দাঁত। একটু করে ড্রিল মেশিন চলেছে। মাড়ি কেটে রক্ত পড়েছে। জিতু পাশের বেসিনে উঠে গিয়ে একবার করে জমে থাকা রক্ত ফেলেছেন। আবার এসে বসেছেন নিজের আসনে। সব দেখে ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা অভিনেতার স্ত্রীর। তবুও তাকে হুবহু সত্যজিৎ এর মতোই হতে হবে বাহ্যিক অবয়বে।
কী ভাবে কী করেছিলেন জিতু? নবনীতার কথায়, ‘তখন জুলাই কি আগস্ট। জিতুই সত্যজিৎ হবেন, তখনও ঠিক হয়নি। কথা চলছে। চেহারায় কী করে মিল আনা যায়, সেই আলোচনাও চলছে। জিতু পরিচালকের ঝলক, সাক্ষাৎকার দেখছে। তখনই মনে হয়েছে, পরিচালকের সঙ্গে দাঁতের পাটিতে একটুও মিল নেই ওর! সত্যজিতের দাঁতে অনেকটাই ফাঁক। জিতুর দাঁতের পাটি ভরাট। একই সঙ্গে একটু উঁচু-নিচু।’
এ কথা জিতুকেও বলেন কয়েক জন। অভিনেতা কাউকে কোনো উত্তর দেননি। বাড়িতেও কিচ্ছু জানাননি। চুপচাপ চলে গিয়েছিলেন দাঁতের চিকিৎসকের কাছে।
সেখান থেকে ভিডিও তুলে পাঠিয়েছেন নবনীতাকে। অভিনেত্রী সেই ভিডিও দেখতে দেখতে শিউরে উঠেছেন।
এভাবে বেশ কয়েক বার গিয়ে অবশেষে দাঁতের পাটির দিক থেকেও অবিকল সত্যজিৎ হয়ে উঠেছেন এই প্রজন্মের অভিনেতা জিতু।
নবনীতার কথায়, ‘জিতু তখন আকাশ আট চ্যানেলে ‘হয়তো তোমারই জন্য’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছে। দাঁতে অস্ত্রোপচারের কারণে গালের এক পাশ ফোলা। কথাও বলতে পারছে না। বেশ কিছু দিন শ্যুটে যেতে পারেনি। অনীক দত্তের ছবির প্রশিক্ষণেও অংশ নিতে পারেনি।’
দাঁতের পাটির পরিবর্তনের হাত ধরে আরও অনেক বদল এসেছে জিতুর জীবনে। পর্দার ‘অপরাজিত রায়’ শক্ত খাবার আর খেতে পারেন না।
এএম/আরএ/