জ্ঞানদক্ষতার রোগে আক্রান্ত ব্রুস উইলিসের অভিনয় বিরতি
বিশ্বখ্যাত হলিউড তারকা অভিনেতা ব্রুস উইলিস এমন এক রোগে ভুগছেন, যেটি তার জ্ঞানদক্ষতাকে আক্রান্ত করছে। ফলে গতকাল বুধবার তিনি অভিনয় থেকে একটি বিরতি নেবেন বলে জানিয়েছেন তার পরিবার।
২০০৬ সালে এই তারকা অভিনেতাকে ‘হলিউড হল অব ফেম’-এ স্থান দেওয়া হয়েছে।
এখন তার বয়স ৬৭ বছর। তার পরিবার এ বছর জানিয়েছে যে, তিনি ‘অ্যাফেইজিয়া’ নামের একটি রোগে ভুগছেন ও এই রোগে অভিনয় থেকে অবসর নিয়েছেন। এটি আছে উইকিপিডিয়াতে। তবে আজ বৃহস্পতিবার ৩১ মার্চ, মার্কিন বিখ্যাত বার্তা সংস্থা সিএনএন তাদের বিনোদন বিভাগে খবর প্রকাশ করেছে, তিনি অবসর নয় বিরতিতে যাচ্ছেন। আরো ভালোভাবে চিকিৎসাধীন হচ্ছেন।
তার রোগের বিষয়ে মেয়ে রুমার ভেরিফাইজ ইনস্ট্রাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে সর্বশেষ খবরটি আজ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে তিনি বাবা ব্রুস উইলিস ‘ডাই হার্ড’ ছবিতে অভিনয়ের একটি ফটো দিয়েছেন ও লিখেছেন, “ব্রুসের অসাধারণ ভক্তদের জন্য-একটি পরিবার হিসেবে আমরা ভাগ করে নিতে চাই যে, আমাদের সবার ভালোবাসার ব্রুস কটি স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন। সম্প্রতি তার ‘অ্যাফেইজিয়া’ নামের একটি রোগ চিকিৎসকরা নির্ণয় করেছেন। (এই রোগটি মানুষের যোগাযোগ দক্ষতাকে আক্রান্ত করে। তার কথা বলাকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে, যেভাবে লেখেন, সেই স্বক্ষমতাকে ক্ষতি করতে পারে। লেখা ও যোগাযোগ স্বক্ষমতাকে রোগাক্রান্ত করে ফেলতে পারে। এই সমস্যাগুলো হয় অ্যাফেইজিয়া রোগে। রোগটি স্ট্রোক বা মস্তিস্কে কোনো ধরণের আঘাতের ফলে হয়ে থাকে। ব্রেন টিউমারও একটি কারণ।) এই রোগে আমার বাবার যোগাযোগ দক্ষতাগুলো প্রভাবিত হচ্ছে।’
রুমা আরো লিখেছেন-‘ফলস্বরূপ এবং আরো ত্যাগ স্বীকার করে ব্রুস তার ক্যারিয়ার থেকে সরে যাচ্ছেন, যেটির অর্থ তার কাছে অনেক বেশি কিছু।’
তিনি এরপর লিখেছেন-‘আমাদের পরিবারের জন্য আসলেই একটি কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং মুহূর্ত যাচ্ছে এখন। আমরা সবাই আপনাদের চলমান ভালোবাসা, সহানুভূতি ও সমর্থনকে প্রচণ্ড সুবিবেচনা হিসেবে গ্রহণ করছি।’
ব্রুস উইলিসের ছবিটির নীচে আরো লিখেছেন তার মেয়ে-‘একটি শক্তিশালী পরিবারের অংশ হিসেবে এভাবে এগিয়ে চলাকে তিনি তার ভক্তদের কাছে জানাতে এই কারণে চেয়েছেন যে, আমরাও জানি, আপনাদের তিনি কতটুকু মনে করেন-তার জীবনে; যেমনভাবে আপনারা তাকে মনে করেন।’
“যেহেতু ব্রুস উইলিস সবসময় বলেন, ‘একে উপরে তুলে বাস কর’ এবং একত্রে আমরা পরিকল্পনা করেছি ঠিক সেটি করার।”
এরপর ব্রুসের পরিবারের পক্ষ থেকে তার মেয়ে তাদের এই দুঃসংবাদ ও করণীয় শেষ করেছেন এবং তার মা সাবেক স্ত্রী বিশ্বখ্যাত হলিউড নায়িকা ডেমি মুরের কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমার মা জানেন।’
এই নামী অভিনেত্রীও এই ইনস্ট্রাগ্রাম পোষ্টটি শেয়ার দিয়েছেন। তাকে ব্রুস উইলিস বিয়ে করেছেন ১৯৮৭ সালের ২১ নভেম্বর। রুমাসহ ডেমি মুরের এই স্বামীর ঘরে বাকি দুটি সন্তান হলো স্কাউট ও টুলুলা। ১৯৯৮ সালের ২৪ জুন ডেমি মুর তাদের বিচ্ছেদের ঘোষণা করেছেন। ২০০০ সালের ১৮ অক্টোবর তারা বিচ্ছেদের ফাইল জমা দেন ও সেদিনই আদালতে বিচ্ছেদ ঘটে।
এরপর ব্রুস উইলিস বলেছিলেন, ‘একজন বাবা হিসেবে ব্যর্থ হয়েছি। স্বামী হিসেবেও। কেননা আমি একে কার্যকর করতে পারিনি।’
তখন তার পরিস্থিতি সামলে ওঠার কৃতিত্ব দিয়েছেন এবারের অস্কারজয়ী মার্কিন কালো অভিনেতা উইল স্মিথকে। তবে ব্রুস উইলিস অস্কার জিততে পারেননি এখনো। তিনি একটি গ্লোল্ডেন গ্লোবের মালিক। হলিউড ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন প্রদান করেছে।
এরপরও তিনি ডেমি মুরের সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখেন এবং তার স্বামী অ্যাস্টেন কুচারের সঙ্গেও। এমনকি তিনি তাদের বিয়েতেও গিয়েছেন।
তারপর ব্রুস উইলিস জড়িয়েছেন অভিনেত্রী ব্রুক বানর্সের সঙ্গে। তাদের বিচ্ছেদ হয়েছে ১০ মাস পর-২০০৪ সালে। এরপর তিনি বিয়ে করেছেন মডেল অ্যামা হ্যামিংয়ে। ২০০৯ সালের ২১ মার্চ। তাদের বিয়েতে ব্রুসের তিনটি মেয়ে ও তাদের মা ডেমি মুর এবং তার স্বামী অ্যাস্টেন কুচার উপস্থিত ছিলেন।
এই ঘরে অ্যামা হ্যামিং ও ব্রুস উইলিসের দুটি মেয়ে আছে। ২০১২ সালের এপ্রিলে জন্ম নেওয়া মেইবলের বয়স ১০ ও দুই বছরের ছোট ইভেলেনের বয়স মোটে ৮ বছর।
রুমা তাদের সবার কথাই ব্রুসের ভাষ্যে জানিয়েছেন ও সাথে আছেন বলেছেন।
ছবির ক্যাপশন : ১. ব্রুস উইলিস, ২. তার বিখ্যাত ডাই হার্ড ছবির পোস্টার, ৩. ডেমি মুরের স্বামী ও ৪. বর্তমান স্ত্রী অ্যামা হ্যামিংয়ের সঙ্গে।
ওএস।