সোনার বাংলা বলে এ আর রহমানের শেষ চমক

বৃষ্টির কারণে কিছুটা ছন্দপতন হলেও সুরের যাদুতে শতভাগ পুষিয়ে দিয়েছেন এ আর রহমান। দর্শকদের ঘোরলাগা এক রাত উপহার দিলেন গানে, কথায়, সুরে ও মিউজিকে। তার সঙ্গে এক ঝাঁক তারকা শিল্পী পারফর্ম করলেন। মাঠে ও গ্যালারিতে হাজার হাজার দর্শক শ্রোতাদের করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠেছিল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম।
বিসিবির আয়োজনে ২৯ মার্চ মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব হান্ড্রেড’ কনসার্টে সেরা আকর্ষণ ছিল অস্কার বিজয়ী ভারতীয় সুরকার, গীতিকার, গায়ক ও সংগীত পরিচালক এ আর রহমান।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড মাইলস ও ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজের গান শেষে মঞ্চে আসেন এ আর রহমান। মঞ্চে এসেই শুরু করেন ‘জয় হো’ দিয়ে। এরপর ‘মুককালা মোকাবেলা’ গানের ইন্দ্রজালে দর্শকদের হৃদয় বেঁধে ফেলেন এই সুরের যাদুকর। এই গান শেষেই মঞ্চে আসেন বেনি দয়াল। তিনি ‘রাঙদে বাসন্তি’ গানের মাধ্যমে মাতোয়ারা করে দেন উপস্থিত দর্শকদের। ‘চান্দারে চান্দারে’ গানটি পরিবেশন করেন বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী হারিহরন।
এরপর ‘দিল সে রে’ গানটি বেজে উঠে এ আর রহমানের কণ্ঠে। দর্শকরাও তার সঙ্গে গলা মেলান। ‘তুহি রে’ গেয়ে হারিহরণ আবার ঝড় তুলেন দর্শকদের। এরপর হারমোনিয়াম নিয়ে বসে পড়েন এ আর রহমান ও অন্য বাদ্যযন্ত্ররা। পরিবেশন করেন কাওয়ালি ‘মাস্ত কালান্দার’ ও রকস্টার ছবির ‘কুন ফায়া কুন’ গানটি।
বিখ্যাত ড্রামার শিবাজি মঞ্চে উঠতেই পুরো স্টেডিয়াম কেঁপে ওঠে দর্শকদের করতালিতে। এরপর জোনিতা গান্ধি ‘কেহনা হি কেয়া’ ও ‘আগার তুম সাথ হো’ গান গেয়ে গ্যালারিজুড়ে দর্শকদের মনে নেমে আসে মুগ্ধতা।
গান শেষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এ আর রাহমান। বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়ে বলেন ‘জয় বাংলা’।
এরপর ‘জয় বাংলা জয় বাংলা’, ‘আমার সোনার বাংলা’ শিরোনামে দুটি বাংলা গান গেয়ে দর্শক হৃদয়ে ঝড় তোলেন এই অস্কারজয়ী সুরকার গায়ক। এ সময় উপস্থিত হাজার হাজার দর্শকদের করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠেছিল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম। এ আর রহমান বাংলা গান দুটি পরিবেশন করার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাঁড়িয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করার দৃশ্যটি ছিল চোখ ধাঁধানো।
গানে সুরে ও কথায় এ আর রহমান অন্যরকম এক আবহ তৈরি করেছেন। দর্শক শ্রোতাদের বেঁধে রেখেছেন তার অনন্য পরিবেশনায়।
এরপর ‘লুকাচুপি বহত হুয়ি’ গানটিতে প্রয়াত লতা মঙ্গেশকরের রেকর্ডেড অংশের সঙ্গে লাইভে কণ্ঠ মেলান এ আর রাহমান। পর্যায়ক্রমে গান পরিবেশন করেন বেনি দয়াল, হারিহরণ, জোনিতা গান্ধীসহ আরও কয়েকজন শিল্পী।
এ আর রহমানের সঙ্গে আসা সব শিল্পীরা সমবেত কণ্ঠে ‘বন্ধে মা তেরম’ গানটি দিয়ে অনুষ্ঠানের ইতি টানেন। রাত পৌনে ১০টায় শুরু করে রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে অনুষ্ঠানের ইতি টানেন এই সুরকার। অনুষ্ঠান শেষে দর্শকদের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার সময় তাঁর মুখে শেষ কথাটি ছিল ‘সোনার বাংলা’।
এএম/এসআইএইচ
