জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে উল্লাস, অথচ স্রষ্টার স্বীকৃতি নেই

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে এবার শুরু হয়েছে বিতর্ক ও সমালোচনা। ‘তুমি আমার জীবন, আমি তোমার জীবন’ গানটি গেয়ে পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন গায়িকা কোনাল। নকল কথা ও সুরের এই গানটি গেয়ে কীভাবে পুরস্কার পাচ্ছেন কোনাল-এই প্রশ্ন সিনেমাটির প্রযোজক মো. ইকবাল থেকে শুরু করে সর্বমহলে।
গানটি লিখেছেন ও সুর করেছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। ‘অবুঝ হৃদয়’ সিনেমায় ব্যবহার হওয়া গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন রুনা লায়লা ও এন্ড্রু কিশোর।
কোনালের গাওয়া গানটি আগের গানের কিছু অংশ হুবহু নকল করে নতুনভাবে লিখেছেন কবির বকুল। সুরের ক্ষেত্রেও কিছু অংশের হুবহু মিল রয়েছে। এ গানটি সিনেমায় ব্যবহার করা এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া নিয়ে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী প্রীতম আহমেদ লন্ডন থেকে ঢাকাপ্রকাশের জন্য লিখেছেন:
‘বীর’ সিনেমায় আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ভাই এর ‘তুমি আমার জীবন’ বিখ্যাত গানটির প্রধান দুই লাইনের কথা ও সুর ব্যবহার করা হয়েছে। সহজ কথায় বর্তমানে ঐ গানটির একটি অংশের মালিক বুলবুল ভাই। উচিত ছিল গানটি ব্যবহারের আগে তার পরিবারের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া। সেটা নেওয়া হয়েছে কিনা জানিনা, তবে গানের কোথাও তাকে ধন্যবাদটুকুও দেওয়া হয়নি।
এবার সমস্যা হচ্ছে একটা সন্তানের যেমন দুই পিতার নামে জন্মনিবন্ধন হয় না; ঠিক তেমনি একটি গানের জন্য দুই নামে দুটো কপিরাইট নিবন্ধনও সম্ভব নয়। যেহেতু এই গান নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তাই সবচেয়ে সুন্দর সমাধান হবে গানটি যে সিনেমা বা বানিজ্যিক মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়েছে সেখানে গীতিকবি হিসেবে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ভাই এর নাম সংযুক্ত করা।
বুলবুল ভাই এই দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, তিনি কিংবদন্তি গীতিকবি, সুরকার ও সংগীত পরিচালক ছিলেন। এই সম্মানটুকু তার পাওয়া উচিত। তিনি মারা গেছেন মাত্র কিছুদিন হলো। আন্তর্জাতিক কপিরাইট আইন অনুসারে উনার মৃত্যুর দিন থেকে ৭০ বছর পর্যন্ত তার পরিবার বা সন্তান ওই দুই লাইনের কপিরাইট এর মালিক।
ওই এতিম সন্তানদের হক তাদের ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।
একদিকে ঐ গানের জন্য জাতীয় পুরষ্কার পেয়ে উল্লাস অভিনন্দন সিক্ত হচ্ছেন শিল্পীরা আর যারা গানের মালিক তাদের স্বীকৃতিই নেই। এটা হতে পারে না। তাই ওই সিনেমায় গানের ডিসক্রিপশনে অনতিবিলম্বে বুলবুল ভাই এর নাম গীতিকবি ও সুরকার হিসেবে সংযুক্ত করা ও বিগত দিনের রয়েলিটি তাদের হাতে পৌছে দিয়ে ভবিষ্যতে ওই অংশটুকু ব্যবহারের অনুমতি নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এএম/এমএমএ/
