বাপ্পি লাহিড়ি আর নেই
আচমকাই চলে গেলেন বাপ্পি লাহিড়ি। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই বাঙালি এ তারকার মৃত্যুর খবর এল। মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ভারতের কিংবদন্তি গায়ক ও সুরকার বাপ্পি লাহিড়ি। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই এ খবর জানিয়েছে।
মুম্বইয়ের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন যে বাঙালি সংগীত শিল্পীরা, তার মধ্যে উপরের দিকে থাকবেন বাপ্পি লাহিড়ি। আশির দশকে বলিউড মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির দিশা বদলে গিয়েছিলেন এই বাঙালি। ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘হিম্মতওয়ালা’, ‘শারাবি’, ‘অ্যাডভেঞ্চার্স অফ টারজান’, ‘ডান্স ডান্স’, ‘সত্যমেব জয়তে’, ‘কমান্ডো’, ‘শোলা অউর শবনম’-এর মতো একাধিক সুপারহিট ছবির সংগীতের দায়িত্বভার সামলেছেন তিনি।
আমির খানের বাবা তাহির হুসেনের ‘জখমি’ সিনেমার মধ্য দিয়ে বলিউডের সংগীত জগতে নিজের আত্মপ্রকাশ দাপটের সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন এই সংগীত শিল্পী। ২০২০ সালে ‘বাগি ৩’ ছবির ‘ভাঙ্গাস’ বাপ্পি লাহিড়ির কম্পোজ করা শেষ গান।
করোনা আক্রান্ত হয়ে গত বছর মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। পরে সেরে উঠলেও বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন। করোনার জেরে কন্ঠস্বর হারিয়েছেন বলেও গুজব রটেছিল। যদিও ছেলে বাপ্পা লাহিড়ি জানিয়েছিলেন, ‘কোভিডের পাশাপাশি বাবার ফুসফুসেরও সমস্যা দেখা দিয়েছিল। বাবাকে কথা বলতে বারণ করা হয়েছে।’
নভেম্বর মাসে ‘সারেগামাপা’র মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। শেষবার তিনি প্রকাশ্যে আসেন সলমন খানের ‘বিগ বস’ ১৫-র মঞ্চে। নাতি স্বস্তিকের গান ‘বাচ্চা পার্টি’র প্রচারে সেখানে পৌঁছেছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংগীত জগতে।
১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাপ্পি। তার পর দীর্ঘদিন বাংলা ও হিন্দি ছবির গান গেয়েছেন। সুর দিয়েছেন। শরীরে প্রচুর সোনার গয়না পরতে ভালবাসতেন। বলতেন, ‘আমার ভগবানের নাম সোনা!’ ছিল গায়কির নিজস্ব কায়দা, যা তাকে হিন্দি ছবির জগতে অনন্য পরিচিতি দিয়েছিল। পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার এবং সম্মান।
বাপ্পি লাহিড়ি রাজনীতিতেও নেমেছিলেন। বিজেপিতে যোগ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুর কেন্দ্র থেকে ভোটেও লড়েছিলেন। কিন্তু রাজনীতিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেননি বাপ্পি।
এসএ/