মুক্তিযুদ্ধকেই জীবনের সেরা সময় মেনেছিলেন সন্ধ্যা
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে একটি অসামান্য ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনপণ যুদ্ধে অনুপ্রেরণা দানের অসীম কার্যকারণ হয়েছে তার গান। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মনে দেশাত্মবোধের আবহ, আমেজ ও ভালোবাসা জাগিয়েছে। ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে, শেখ মুজিবুর রহমান, তাকে বাংলাদেশ নামের নতুন রাষ্ট্রের পিতা হিসেবে সম্মান জানানো হয়, সম্মানিত করা হয় ‘বঙ্গবন্ধু’ নামে; পাকিস্তানের জেল থেকে তাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া নিজের নতুন দেশটিতে এলেন, সেই ক্ষণে তাকে সম্মাননা ও ভালোবাসা জানানো হয়েছিল এই সন্ধ্যা মুখার্জির গানে-‘বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে, তোমার স্বপ্নের, স্বাধীন বাংলায়।’ এর আগে এই গানটি বেজেছিল মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান শক্তি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকেই। লিখেছিলেন আবিদুর রহমান আর কম্পোজ করেছিলেন সুধীন দাশগুপ্ত। পশ্চিম বাংলা থেকে আসা সবচেয়ে বিখ্যাত ও সবচেয়ে বেশি গানের সঙ্গীত পরিচালকদের একজন; মানুষটি যেমন মার্জিত ও শান্ত ছিলেন, তেমনি ছিলেন শক্তিশালী গান রচয়িতা। তিনি সন্ধ্যার কন্ঠে সবচেয়ে ভালো স্মরণীয় গানগুলো তৈরি করেছেন। ওই গানটি একটি শান্ত ও আবেগী মনে করিয়ে দেওয়া-কষ্ট ও ত্যাগগুলোকে; একটি বিরাট জনগোষ্ঠীর; সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের আরো অনেক গানের মতো; সেগুলোর সবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অর্থবহ ভূমিকা রেখেছিল রেডিওতে সঙ্গীতের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে। সন্ধ্যার গানগুলো মুক্তিবাহিনীকে কেবল উদ্দীপ্ত করেনি, খুব ভালো ভূমিকা রেখেছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি দেশাত্মবোধ হৃদয় ও মনে তৈরি করার ক্ষেত্রে। অনেকগুলো বছর পর আবারও চমকে দেবার মতো খবরে পরিণত হলেন জীবনের শেষ সীমানায় চলে আসা এই কিংবদন্তী গায়িকা। এই বছরের ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে, ৯০ বছরের মানুষটি তাকে উপহার দেওয়া সঙ্গীতে অবিস্মরণীয় অবদানের দৌলতে পদ্মশ্রীটিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এই সম্মানটি গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন-‘এটি অপমান ও অবমাননার।’ এরপর বলেছেন, ‘আমাকে পদ্মশ্রী দেওয়ার সময়টি অনেক আগেই পেরিয়েছে। একজন জুনিয়র শিল্পী এটির আরো যোগ্য।’
তথ্য সূত্র :ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও উইকিপিডিয়া।
ওএস/