জুলাইয়ে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানে গুরুতর আহত হওয়া কাজলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হাসপাতালে কাজলকে দেখতে গিয়ে এ তথ্য জানান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
হাসপাতালে কাজলকে দেখতে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর, এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা ডা. আহাদ। নাহিদ ইসলাম বলেন, "কাজলের চিকিৎসার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে থাইল্যান্ডের বেজথানি হাসপাতালে নেওয়া হবে।"
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশি গুলিতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান কাজল। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিনস)-এ ভর্তি হওয়ার পর তিনি গত তিন মাস ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে আসছেন। যদিও তার শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছিল, তবে সম্প্রতি গুরুতর সংক্রমণ (ইনফেকশন) দেখা দেয়। এই সংক্রমণের ফলে তার রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যায় এবং তিনি শকে চলে যান।
চিকিৎসক ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু জানান, "কাজলের অবস্থা হঠাৎ করেই অবনতি হতে শুরু করে। চিকিৎসা বোর্ডের সভা করে তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু সংক্রমণের জটিলতার কারণে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।"
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের নির্দেশে কাজলের দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নাহিদ ইসলাম চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে থাইল্যান্ড পাঠানোর উদ্যোগ নেন। তবে শনিবার ভিসা জটিলতার কারণে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে পাঠানো সম্ভব হয়নি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, "থাইল্যান্ড ভিসা সেন্টারে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করছি আগামীকাল (রবিবার) ভিসা পাওয়া যাবে। ভিসা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজলকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে থাইল্যান্ড পাঠানো হবে। চিকিৎসার যাবতীয় খরচ এবং ভিসার বিষয়গুলো নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে।"
এর আগে গণআন্দোলনে আহত আরেক ব্যক্তিকে সিঙ্গাপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, "আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে কাজলের ক্ষেত্রেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগে আমরা বদ্ধপরিকর।"
কাজলের দ্রুত আরোগ্যের জন্য দেশবাসীর দোয়া কামনা করেছেন তার পরিবার এবং চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ ও মানবিক উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে।