‘ওস্তাদ রাশিদ খান’ আর নেই
ছবি: সংগৃহীত
মারা গেছেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী ওস্তাদ রাশিদ খান। মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই কিংবদন্তি। মৃত্যুকালে ৫৬ বছরে পা রেখেছিলেন ওস্তাদ রাশিদ খান। পরিবারে রেখে গেলেন স্ত্রী, দুই কন্যা এবং এক পুত্রকে।
বেশ কিছু দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। গত কয়েক বছর ধরে শিল্পী প্রস্টেট ক্যানসারে ভুগছিলেন। চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন। এর মধ্যে সম্প্রতি তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) হয়। সেখান থেকেই অবস্থার অবনতি শুরু।
প্রসঙ্গত, বহুদিন ধরেই রাশিদ খানের ক্যানসারের চিকিৎসা চলছিল। সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে তার বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। এরপর থেকেই ৫৬ বছর বয়সী এই শিল্পীর একটার পর একটা সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। মাঝে মধ্যেই তার প্লেটলেট নেমে যেত। এরপর কিছুদিন আগে তার স্ট্রোক হওয়ায় স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত ২১ নভেম্বর স্ট্রোক হয় রাশিদ খানের। তখন তাকে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তখন তাকে প্রাথমিক রাইস টিউবের মাধ্যমে খাওয়ানো হতো।
১৯৬৮ সালের ১ জুলাই উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁতে জন্ম রাশিদের। তিনি রামপুর-সাসওয়ান ঘরানার শিল্পী। যে ঘরানার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইনায়েত হুসেন খাঁ-সাহিব। রাশিদ তালিম নিয়েছেন এই ঘরানারই আর এক দিকপাল উস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ-সাহিবের কাছ থেকে। যিনি ছিলেন রাশিদের দাদু। রাশিদের মামা গোয়ালিয়র ঘরানার উস্তাদ গুলাম মুস্তাফা খাঁ-সাহিবের থেকেও তালিম নিয়েছেন রাশিদ। মূলত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গাইলেও ফিউশন বা বলিউড এবং টলিউডের ছবিতে বহু জনপ্রিয় গানও গেয়েছেন শিল্পী।
পাশাপাশি বলিউডের একাধিক জনপ্রিয় সিনেমাতেও রয়েছে তার গান। যে তালিকায় আছে ‘যাব উই মিট’, ‘কিসনা’, ‘হাম দিল দে চুকে সনম’, ‘মাই নেম ইজ খান’, ‘রাজ ৩’-র মতো সিনেমা। এছাড়া বাংলাদেশেও একাধিকবার সংগীত পরিবেশন করেছেন এই শিল্পী।
১০-১১ বছর বয়সে কলকাতা চলে আসেন রাশিদ। সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমির স্কলারশিপ নিয়ে দাদু নিসার হুসেনের কাছে গান শেখা শুরু। তার পর থেকে গিয়েছেন কলকাতাতেই। ২০০৬ সালে পদ্মশ্রী ও ২০২২ সালে পদ্মভূষণ সম্মান লাভ করেন ওস্তাদ রশিদ খান। বাংলা থেকেও পেয়েছেন বঙ্গবিভূষণ সম্মান।