সন্তান জন্ম দেওয়ার এত দরকার কেন? প্রশ্ন তসলিমার
আচমকাই মা হওয়ার খবর ফাঁস করেন পরীমনি। কখনও যৌন হেনস্থা, কখনও মাদক মামলা, কখনও একাধিক বিয়ে বা প্রেম সম্পর্ক। কাজের বাইরে এসব কারণে আলোচিত হয়েছেন পরীমনি। এবার নাম না করেই নায়িকাকে বিঁধলেন তসলিমা নাসরিন।
লেখিকার প্রশ্ন, ‘সন্তান জন্ম দেওয়ার এত দরকার কেন?' মঙ্গলবার রাত থেকেই ফেসবুকে ভাইরাল তসলিমা নাসরিনের একটি পোস্ট। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সমাজের নানা নিয়ম ভেঙে ফেলা সাহসী মেয়েরাও, তিরিশ পার হলেই সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে!’
পরীমণির মা হওয়ার খবর দেয়ার কয়েক ঘণ্টার পর পরীমনিকে বিঁধেই এই পোস্ট তসলিমার। যৌন হেনস্থা থেকে মাদক মামলা, বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা পরীমনিকে বরাবর সমর্থন জানিয়েছেন তসমিলা। কেন তাকে হয়রান করতে জেলবন্দি করে রাখা হচ্ছে, মাদকমামলায় আটক পরীমনির হয়ে বারেবারে সওয়াল করেছিলেন লেখিকা। পরীমনির সাহসী,স্বাধীনচেতা ব্যক্তিত্ব মুগ্ধ করেছিল তাকে। কিন্তু এবার কি বাকি মেয়েদের দলেই ভিড়ে গেলেন পরীমনি? এমনটাই মনে করছেন তসলিমা?
নিজের মতামত প্রকাশের জন্য বরাবরই ফেসবুক পছন্দের মাধ্যম লেখিকার। এদিন তিনিলিখেন, ‘‘এই ব্যাকুলতা কতটা নিজের জন্য, কতটা পুরুষতান্ত্রিক রীতিনীতি মানার জন্য? আমি কিন্তু মনে করি নিজের জন্য নয়। মেয়েরা সন্তান জন্ম দিতে চায় সমাজের দশটা লোকের জন্য। বাল্যকাল থেকে শুনে আসা, শিখে আসা ‘মাতৃত্বেই নারীজন্মের সার্থকতা’’ জাতীয় বাকোয়াজ মস্তিস্কে কিলবিল করে বলেই মনে করে ইচ্ছেটা বুঝি নিজের।’
সন্তান জন্ম দেওয়ার ইচ্ছে মানুষের ভেতর আপনাতেই জন্ম নেয় না, মনে করেন তসলিমা। তিনি বলেন, ‘মানুষ ইচ্ছে করলেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, লাগাম টেনে ধরতে পারে গর্ভধারণের যাবতীয় বিষয়াদির।’ সত্যি কি সমাজের চাপে পড়ে মা হওয়ার সিদ্ধান্ত পরীমনির? নায়িকা এর আগেও বিয়ে করেছেন বহুবার। এটি তার চার নম্বর না পাঁচ নম্বর বিয়ে সেই নিয়ে বিতর্ক আছে, তবে এই প্রথম মা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন পরীমনি। ‘গুনিন’ ছবির সেটে মাত্র সাত দিনের পরিচয়েই রাজকে বিয়ে করেছেন পরীমনি। এমনটা পরীমনির পক্ষেই সম্ভব!
তসলিমা লিখেছেন, 'পৃথিবীর প্রচুর শিক্ষিত, স্বনির্ভর, সচেতন মেয়ে বিয়ে করেনি, সন্তান জন্মও দেয়নি'। যুক্তি হিবাসে তিনি লিখেছেন, ‘পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা প্রায় আটশ’ কোটি। এত ভিড়ের পৃথিবীতে আপাতত কোনও নতুন জন্ম কাংক্ষিত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু মেয়েরা যদি ভেবে নেয় জন্ম না দিলে তাদের জীবনের কোনও অর্থ নেই, তাহলে তারা যে ভুল তা তাদের বোঝাবে কে! সন্তানের জন্ম তারা দিতেই পারে যদি এমনই তীব্র তাদের আকাংক্ষা, তারপরও এ কথা ঠিক নয় জন্ম না দিলে তাদের জীবনের কোনও অর্থ নেই। কোনও কোনও মানুষ তাদের জীবনকে শখ করে অর্থহীন করে। তাছাড়া কারও জীবনই অর্থহীন নয়। বরং যে ভ্রুণ আজও জন্মায়নি, সে ভ্রুণ অর্থহীন’।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইস বাংলা