৫৭-তে পা দিলেন বলিউডের ‘মাসলম্যান’ সালমান খান
ভালো নাম আব্দুল রশিদ সেলিম সালমান খান। ভক্তরা ডাকেন- সাল্লু, ভাইজান, সুলতান বলে। তিনি বলিউডের তারকা অভিনেতা সালমান খান। ১৯৬৫ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন সালমান। জীবনের ৫৬ বসন্ত পেরিয়ে পা দিলেন ৫৭ তে।
সালমানের বাবা ভারতের কিংবদন্তি চলচ্চিত্র চিত্রনাট্যকার সেলিম খান। তার মা সুশীলা চাকার সেলিম খানের প্রথম স্ত্রী। বিয়ের পর ধর্ম বদল করে মুসলিম হন সুশীলা চাকার। নিজের নাম রাখেন সালমা। মা-বাবার নাম থেকেই ছেলের নাম রাখা হয় সালমান খান। তবে ১৯৮০ সালে সেলিম খানের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তার মায়ের। পরে তার বাবা অভিনেত্রী হেলেনকে বিয়ে করেন।
সালমানরা মোট তিন ভাই। বাকি দুইজন আবরাজ খান ও সোহেল খান। বোন দুইজন-অলিভিয়া খান অগ্নিহোত্রী ও দত্তক নেওয়া অর্পিতা। সালমান খান পড়ালেখা করেছেন মুম্বাইয়ে। তার বিদ্যালয়ের নাম সেন্ট. স্টানিসলাউস হাই স্কুল। বান্দ্রার এই বিদ্যালয়ে তার ছোট দুই ভাইও পড়েছেন। তার কলেজের নাম সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ। তবে পড়ালেখা শেষ করতে না পারলেও মারাঠি, হিন্দি ও ইংরেজিতে পারদর্শী সালমান।
১৯৮৮ সালে ‘বিবি হো তো এসি’ সিনেমায় সহ-অভিনেতার চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন সালমান। আর নায়ক হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু হয় সুরজ বরজাতিয়ার রোমান্টিক ছবি ‘ম্যানে পেয়ার কিয়া’ দিয়ে। প্রথম সিনেমায় নজর কাড়েন তিনি। তখন সিনেমাটি সবচেয়ে বেশি আয় করেছে। অবিশ্বাস্য অভিনয়ের সুবাদে তিনি সেরা নবাগত ও সেরা অভিনেতার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। তার ছবিটি ইংরেজিতে ‘হয়েন লাভ কলস’, স্প্যানিশ ভাষায় ‘টে অ্যামো’ এবং তেলেগু ভাষায় ‘প্রেমা পাভুরালু’ নামে মুক্তি পায়।
৩০ বছরের বেশি অভিনয় জীবনে সালমান খান দুটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন, সেরা প্রযোজকের। দুটি ফিল্মফেয়ার আছে তার সেরা অভিনেতার। ভারতের বাণিজ্যিক সিনেমায় সর্বকালের সবচেয়ে সফল অভিনেতাদের একজন সালমান। ২০১৫ ও ২০১৮ সালে ফোর্বস তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া তারকাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। পরের বছর ফোর্বসের ভারতের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া তারকা হিসেবে তিনি প্রচ্ছদ হন।
সালমানের হিট সিনেমাগুলোর মধ্যে আছে ‘হাম আপকে হায় কন’ (১৯৯৪), ‘করন অর্জুন’ (১৯৯৫), ‘বিবি নাম্বার ১’ (১৯৯৯), ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ (১৯৯৯)। দীর্ঘকালের বিরতির পর সালমান খান আবার সেরা ছবির নায়ক হলেন ২০১০ সালে ‘দাবাং’র মাধ্যমে। সিনেমাটি অবিশ্বাস্য আয় করে। এরপর থেকে তার জয়রথ চলতে লাগল। একের পর এক সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন ‘রেডি’ (২০১১), ‘বডিগার্ড (২০১১), ‘এক থা টাইগার’ (২০১২), ‘দাবাং ২’ (২০১২), ‘কিক’ (২০১৪), ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ (২০১৭)। তার চেয়ে বেশি আয় করা ১০টি ছবি উপহার দিতে পারেননি আর কেউই।
একজন টিভি উপস্থাপক ও প্রমোটার হিসেবে বেশ বিখ্যাত সালমান। ২০১০ সাল থেকে তিনি ‘বিগ বস’ নামের একটি রিয়েলিটি শোর উপস্থাপনা করছেন।
সালমান দাতব্য কাজ করেন তার সংস্থা ‘বিং হিউম্যান ফাউন্ডেশন’র মাধ্যমে। তার প্রযোজনা সংস্থার নামও ‘সালমান খান বিং হিউম্যান প্রোডাকশন্স’। এই সংস্থা থেকে তিনি প্রথম যে সিনেমার প্রযোজনা করেছেন সেটি একটি শিশু বিনোদনধর্মী সিনেমা, ‘চিল্লার পার্টি’। ‘বেস্ট চিলড্রেন’স ফিল্ম, বেস্ট অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লে ও চাইল্ড আর্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড জিতে সিনেমাটি।
সালমানের জীবনে প্রথম প্রেম ঐশ্বরিয়া রায়। তবে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে ২০০১ সালে। এরপর তার জীবনে আসে ক্যাটরিনা কাইফ। ২০১০ সালে সমাপ্তি। এরপর সঙ্গীতা বিজলানি ও সোমি আলী। এভাবে একের পর এক নারী এসেছেন সালমানের জীবন ও অভিনয় ক্যারিয়ারে। তবে তিনি বিয়ে করেননি।
বান্দ্রার বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন সালমান। তিনি শরীরচর্চার বিষয়ে অত্যন্ত অনুরাগী।
ওএফএস/এসজি