ফিদেল কাস্ত্রো চরিত্রে জেইমস ফ্রাঙ্কো
খবরে প্রকাশিত হয়েছে, কিউবান বিপ্লবের নায়ক, মহান সমাজতন্ত্রী ফিদেল কাস্ত্রো হিসেবে অভিনয় করবেন আমেরিকান জেইমস ফ্রাঙ্কো।
তাতে অনেক লাতিন অভিনেতা খুশি নন। মন ভেঙেছে বিশ্বের সব অভিনেতার।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, অতিপ্রজ ইয়োন লেগিথামো, তিনি সম্প্রতি কন্ঠ দিয়েছেন ডিজনির ‘এনকান্তো’ অ্যানিমেটেড সিনেমাতে ‘ব্রুনো’ চরিত্রে, অভিশাপ দিয়েছেন ফ্রাঙ্কোকে নেওয়ায় ইনস্ট্রাগ্রামে।
তিনি যুক্তি দিয়েছেন, ‘তার বদলে একজন লাতিন অভিনেতার দিকে বিশ্বখ্যাত চরিত্রটি যেতে পারতো।’
‘কে এটি এখন করতে যাচ্ছে?’ শুক্রবার তিনি এই প্রশ্নটি করে ফেলেছেন। এরপর বলেছেন, ‘কীভাবে হলিউড আমাদের ব্যবহার করছে? কিন্তু তারা কত ভালোভাবে আমাদের কাহিনীগুলো চুরি করে চলেছে? হলিউডের জন্য আর কোনো প্রশংসা নয়, কোনো গুণকীর্তন নয়। বয়কট! এটি আমাদের ভয়ংকরভাবে বিরক্ত করে ফেলেছে। পাশাপাশি গল্পগুলোকে অগ্রগতি ছাড়া বলার ফলে জটিলতর করে ফেলেছে। এ অবশ্যই খারাপ বিষয়। ফ্রাঙ্কোর সঙ্গে আমার কোনো সমস্যা কখনো হয়নি। তবে সে এখন লাতিন নয়।’
ফ্রাঙ্কো ফিদেল চরিত্রে নির্বাচিত তারকা অভিনেতা হিসেবে অভিনয় করবেন আগামী সিনেমা ‘আলিনা অব কুবা’ বা ‘আলিনা অব কিউবা’তে তার বাবার চরিত্রে।
৬৬ বছরের আলিনা ফেরনান্দেজ রেভোয়েতার জন্ম ১৯৫৬ সালে। তিনি কিউবার সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রপতি ও বিপ্লবের অন্যতম জনক ফিদেল কাস্ত্রোর মেয়ে। তবে তিনি একজন নামকরা কিউবান কমিউনিস্ট বিপ্লব বিরোধী কর্মী। তার মায়ের নাম নাতালিয়া বেভোয়েলতা ক্লেওস। কিউবার সমাজতান্ত্রিক সরকার ও তার বাবা এবং কাকার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বিখ্যাত একজন বিরোধী হিসেবে বিখ্যাত। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত কিউবাতে বাস করতেন। স্পেন হয়ে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে এসেছেন।
এই বছরের শেষের দিকে ছবিটির শুটিং শুরু হবে।
কাস্ত্রোর মেয়ের জীবন অনুসরণে সিনেমাটি বানানো হবে।
এই সিনেমাতে ইয়োন লেগিথামোই একমাত্র লাতিন অভিনেতা নন, যিনি কাজের সুযোগ পাননি।
চরিত্রাভিনেতা নিবাচন বা কাস্টিংয়ের দায়িত্বে যারা ছিলেন, তারা বাদ দিয়েছেন অভিনেত্রী জেস ড্যারোকেও। কিউবান-আমেরিকান গায়িকা ও অভিনেত্রী লেগিথামোর সহ-অভিনেত্রী হিসেবে কন্ঠ দিয়েছেন এনকান্তোতে ‘লুইসা মাদ্রিগাল’ চরিত্রে। তিনি তার পোস্টে সাড়া দিয়ে লিখেছেন ‘উফ, এটি...।’
‘আমি দুঃখিত কিন্তু কী হচ্ছে আসলে?’ লিখেছেন ম্যাক্সিকান-আমেরিকান অভিনেতা রাউল কাস্ত্রিয়ো তার ইনস্ট্রাগ্রামে।
স্প্যানিশ-ইতালিয়ান বংশোদ্ভুত আর্জেন্টিনার মডেল-অভিনেতা সল রদ্রিগেজ লিখেছেন, ‘কাস্ত্রোর তীব্র চরিত্রের একটি দিক ফুটিয়ে তুলতে হবে জেইম ফ্রাঙ্কোকে, আমি পড়বো না। কেননা আমার এই জীবনে আমেরিকানদের মতো ইংরেজি উচ্চারণ না করায় বিদ্রুপের শিকার হতে হচ্ছে ও অসংখ্যবার সেজন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে।’
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক অভিনেতা ইয়েফ তরেস লিখেছেন, ‘এখান থেকে বাদ হয়ে যাওয়ায় লাতিনোদের খারাপ লাগছে ও সবখানেই তা ঘটছে।’
হলিউডের পেছনে দীর্ঘকাল ধরে অনেকখানি দিয়ে ঘুরছেন লাতিনরা।
তারা মার্কিন প্রযোজনাগুলোর ১৮ শতাংশ তৈরি করে দেবার পরেও ২০১৯ সালে সেরা ১শ ছবিতে লাতিন অভিনেতাদের মাত্র ৫ শতাংশ কন্ঠশিল্পসহ তাদের অভিনয়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, জানিয়েছে ইউএসসি আনিনবার্গ ইনক্লুশন ইনিশিয়েটিভ।
জেইমস ফ্রাঙ্কোকে নিয়ে আরো অভিযোগ আছে। ২০১৮ সালে তিনি প্রমাণিত না হলেও মৌখিক দোষারোপের শিকার হয়েছেন ক্ষমার অযোগ্য ও যৌন সুযোগ নেবার আচরণের দায়ে পাঁচ নারীর কাছ থেকে। তাদের মধ্যে দুই-একজন তার ছাত্রী।
২০২১ সালে তিনি শিকার করেছেন, ছাত্রীদের সঙ্গে ঘুমিয়েছেন তার সহ-মালিকানার অভিনয় বিদ্যালয়ে।
ছবি : ১. মেয়ে আলিনা ফেরনান্দেজ রেভোয়েতার সঙ্গে বাবা ফিদেল কাস্ত্রো ২. ফিদেল ৩. তার চরিত্রে জেইমস ফ্রাঙ্কো ৪. অভিনেত্রী জেস ড্যারো ৫. আর্জেন্টিনার মডেল-অভিনেত্রী সল রদ্রিগেজ।
ওএফএস।