বিয়ে করেছেন ব্রিটনি স্পিয়ার্স
‘প্রিন্সেস অব পপ’, অবিশ্বাস্য সুন্দরী, মার্কিন তারকা গায়িকা, গীতিকার, নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী ব্রিটনি স্পিয়ার্স। পপ এই আইকনের বিশ্বজুড়ে আজ পর্যন্ত মোট ১৫০ মিলিয়ন রেকর্ড অ্যালবাম বিক্রি হয়েছে। তার দেশেই তো ৭০ মিলিয়ন কপি। বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম সেরা উপার্জনকারী সঙ্গীত শিল্পী ব্রিটনি।
৪০ বছরের এই নারী আবার বিয়ে করছেন ৯ জুন, গতকাল। তাকে বিয়ে করতে দেওয়া হচ্ছে না-এ কথা বলার পর সাত মাসের সরকারী নিয়মের ‘সংরক্ষণ’ থেকে মুক্তি লাভ করেছেন। ধর্মীয়ভাবে তিনি বিবাহ অনুষ্ঠান করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণের ভেঞ্চুরা কাউন্টির একটি গীর্জায়। তবে আদালতে মেয়ের বিপক্ষে সংরক্ষণের মামলা দায়ের ও তাকে সাজা খাটানোয় বাবা, মা ও বোনকে দাওয়াত করেননি। তাদের সম্পর্ক এখনো জোড়া লাগেনি।
২০২১ সালের নভেম্বরে বিতর্কিত ১৩ বছরের ‘আইনগত অভিভাবকত্ব’ মামলা থেকে মুক্তি লাভ করেন ব্রিটনি স্পিয়ার্স। তার বাবা জেমস স্পিয়ার্স আদালতে বলেছিলেন, সংরক্ষণবাদ বা তত্বাবধায়কত্ব তার মেয়ের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। মামলাটিতে জয়ের ফলে তার বাবা মেয়ের জীবনের অনেক দিক নিয়ন্ত্রণ করেছেন। গত বছর ব্রিটনির মামলা থেকে মুক্তি লাভের কারণ, আদালতে জানিয়েছিলেন, ‘সংরক্ষণাগারে থাকার ফলে আমি আর বিয়ে করতে পারিনি এবং আমার কোনো সন্তানও হয়নি।’ এরপর বাবা মেয়ের নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ নিজে নেবার বিষয়ে একমত হয়েছেন।
ব্রিটনি স্পিয়ার্স বিয়ে করছেন তার প্রেমিক ও ব্যক্তিগত শারীরিক প্রশিক্ষণ স্যাম আসঘারিকে। ২০১৬ সালের তার একটি গানের ভিডিও ‘স্লামবার পার্টি (ঘুমানোর অনুষ্ঠান)’-এ সহ-তারকা হিসেবে তিনি তার সঙ্গে কাজ করেছেন। অভিনেতা হয়েছেন ব্রিটনির সঙ্গ লাভের পর। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তাদের আজকের সম্পর্কের শুরু। এপ্রিলে ব্রিটনি ঘোষণা করেছেন, তিনি গর্ভবতী। পরের মাসে গর্ভপাত হয়েছে জানিয়েছেন বেদনায়।
তার দুটি বড়, বড় সন্তান আছে। দুজনেই ছেলে। শন প্রেস্টিন ফেইডারলাইনের বয়স এখন ১৬। তার ভাই জেইডেন ফেইডারলাইন। বয়সে এক বছরের কম। তারা ‘কে-ফিড’ বা কেভিন ফেইডারলাইনের সন্তান। আমেরিকান গায়ক ও ব্যাকআপ নৃত্যশিল্পী। তবে তারা মায়ের সঙ্গে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের তাদের জন্মস্থান সান্তা মনিকা শহরে। তাদের বাবা মায়ের সংসার তিন বছর টিকেছে ২০০৪ থেকে ২০০৭। এরপর বিচ্ছেদ।
এর আগে তাদের মা আরেকবার বিয়ে করেছেন ছোটবেলার বন্ধু জেইসন অ্যালেক আলেকজান্দারকে। তবে সেই বিয়ে ৫৫ ঘন্টার মধ্যেই বাতিল হয়েছে কিন্তু ব্রিটনিকে সাম্প্রতিক মুক্তি আন্দোলনে তিনি প্রবল ভূমিকা পালন করেছেন। এবার তিনি ব্রিটনির বিয়ে অনুষ্ঠানে বাগড়া দিয়েছেন। তার বিপক্ষে পুলিশের অভিযোগ, বাসার ভেতর থেকে ইনস্ট্রাগ্রামে লাইভ ভিডিও করেছেন। অতিথি না হয়েও এরপর হুড়মুড় করে গীর্জার ভেতরে ঢুকে পড়েছেন ও ব্রিটনিকে বিপদে ফেলেছেন। তিনি ভেতরে প্রবেশ করে নিরাপত্তা দলের মুখোমুখি হয়েছেন শেষ পর্যন্ত। বাধ্য হয়ে জেইসন অ্যালেক আলেকজান্দারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, বলেছেন একজন মুখপাত্র। এই কাউন্টির শেরিফের অফিস জানিয়েছে, তার বিপক্ষে চারটি বেআইনি কাজের অভিযোগ রয়েছে। সেগুলো অনধিকার প্রবেশ, হুমকিদান, ধ্বংসাত্নক কর্ম। ভেতরে ঢুকে ঝগড়া করেছেন, একটি দ্রব্য ভেঙে ফেলেছেন। ফলে তার বিপক্ষে ধ্বংসের অভিযোগটি আনা হয়েছে। ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে অনধিকার প্রবেশের অভিযোগ আরেকটি। তবে জেইসন অ্যালেক আলেকজান্দার বলেছেন, ‘সে আমার প্রথম ও একমাত্র স্ত্রী।’
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ব্রিটনি স্পিয়ার্সের তুমুল আলোচিত ও সাড়া জাগানো বিয়েতে পপ কুইন ম্যাডোনা, প্যারিস হিলটন ও অভিনেত্রী ড্রিউ ব্যারিমোর অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিটনি ও তার স্বামীর বিয়ের নকশাসহ পোশাক বানিয়েছেন দোনতেল্লা ভেরসাচি। একজন ইতালিয়ান নারী ফ্যাশন ডিজাইনার, মডেল, ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী। জান্নি ভেরসাচির বোন। মোটে ৫০ বছর বয়সে মারা যাওয়া তার ভাই নিজের আন্তর্জাতিক বিলাসবহুল ফ্যাশন হাউজ ‘ভেরসাচি’র জনক ও প্রতিষ্ঠাতা। অলংকার, সুগন্ধী, প্রসাধনী, বাড়ির আসবাব ও পোশাকাদি তৈরি করেন তারা। তিনি সিনেমা ও মঞ্চের কস্টিউমও তৈরি করতেন। তার বোন এখন ৬৭ বছরের। দোনতেল্লা ভাইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে তাদের ব্যান্ডের উন্নয়নে কাজ করেছেন। বিশেষত পপ কালচার ও সেলিব্রেটিদের সঙ্গে ইতালিয়ান বিলাসদ্রব্যের মিশ্রণে। ভাইয়ের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে মালিক হয়েছেন ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর পদে। এখন তিনি প্রধান ক্রিয়েটিভ অফিসার। ১৯৯০’র দশকে সুপার মডেলদের ভাইয়ের সঙ্গে তাদের ব্যান্ডের জন্য কাজ করিয়ে খুব সুনামও কুড়িয়েছেন। তবে ব্রিটনির বিয়ের এই ছবিগুলো এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
ওএস।