মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত আজিজুর রহমান

‘ছুটির ঘন্টা’র পরিচালক আজিজুর রহমান চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তার মায়ের কবরের পাশে। সোমবার (২১ মার্চ) সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বগুড়ার সান্তাহারে নিয়ে যাওয়া হয় আজিজুর রহমানের মরদেহ।
এই পরিচালকের মেয়ে আলিয়া রহমান গণমাধ্যমকে জানান, হেলিকপ্টার থেকে মরদেহ নামিয়ে নেওয়া হয় সান্তাহার ঈদগা মাঠে। সেখানে তার শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ কলসা গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে সমাহিত করা হয়।
এর আগে রবিবার (২০ মার্চ) বিকালে আজিজুর রহমানের মরদেহ কানাডা থেকে ঢাকায় আনা হয়। এর পর আজিজুর রহমানের মরদেহ সরাসরি দীর্ঘদিনের কর্মস্থল বিএফডিসিতে নেওয়া হয়। এফডিসি প্রশাসনিক ভবনের সামনের খোলা জায়গায় আজিজুর রহমানকে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য একটি মঞ্চ আগে থেকে তৈরি ছিল। সেখানে তাকে শেষবারের মতো দেখতে আসেন তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী ও কলাকুশলীরা।
গত ১৪ মার্চ বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে কানাডায় একটি হাতপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ‘ছুটির ঘণ্টা’ খ্যাত এই পরিচালক।
আজিজুর রহমান প্রায় একযুগ ধরে তার দুই সন্তানের সঙ্গে কানাডায় বসবাস করতেন। সেখানেই চলছিল তার চিকিৎসা। ফুসফুসের সমস্যা থাকায় কয়েক দফা তাকে টরেন্টোর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই দেশে ফিরতে উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলেন এই পরিচালক। শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে দেশে ফিরতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু এবার দেশে এসেছেন একেবারে নিথর হয়ে।
আজিজুর রহমান ১৯৩৯ সালের ১০ অক্টোবর বগুড়ার সান্তাহারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম রূপচাঁন প্রামাণিক। তিনি স্থানীয় আহসানউল্লাহ ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি ও ঢাকা সিটি নাইট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। চারুকলা আর্ট ইনস্টিটিউটে কমার্শিয়াল আর্টে ডিপ্লোমা করেন তিনি।
সফল চলচ্চিত্রের পরিচালক আজিজুর রহমান। ১৯৫৮ সালে ‘এ দেশ তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে এহতেশামের সহকারী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ময়মনসিংহের লোককথা নিয়ে ‘সাইফুল মূলক বদিউজ্জামান’ মুক্তি পায় ১৯৬৭ সালে। জীবদ্দশায় তিনি ৫৪টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘অশিক্ষিত’, ‘মাটির ঘর’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’, ‘সাম্পানওয়ালা’, ‘ডাক্তার বাড়ি’, ‘গরমিল’ ও ‘সমাধান’ ইত্যাদি।
এএম/এমএমএ/
