চিকিৎসা করাতে গিয়ে গুরুতর আহত আলিফ আলাউদ্দীন

দীর্ঘদিন ধরেই সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও টেলিভিশন উপস্থাপিকা আলিফ আলাউদ্দীন পলিসিস্টিক কিডনি রোগে আক্রান্ত। দুটি কিডনিই ৯০ শতাংশ কার্যক্ষমতা হারিয়েছে তার। কিডনি জটিলতার কারণে আরও অনেক সমস্যায় ভুগছেন এই গায়িকা। চিকিৎসার জন্য গত ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে ভারতের চেন্নাইয়ে সপরিবারে গিয়েছেন তিনি।
সেখানে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন আলিফ। এ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানিয়েছেন আলিফের স্বামী গিটারিস্ট কাজী ফয়সাল আহমেদ।
১৯ মার্চ দিবাগত রাতে তিনি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘ডায়ালাইসিস শেষ করে হাসপাতালের নিচেই গেইটের সামনে অপেক্ষা করছিলাম ট্যাক্সির জন্য। আলিফ আমার পাশেই ছিল। হঠাৎ বিকট চিৎকার দিল সে। আমি ঘুরে দেখলাম, আলিফ হাতের ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেই মুহূর্তে খেয়াল করলাম, তার সামনের স্টিলের গ্রিলে সে মাথায় আঘাত পাবে। আমি আমার হাত দিয়ে সেটা ঠেকাতে পারলাম ঠিকই, কিন্তু ও পড়ে গেল রেলিংয়ের চিকন গ্রিলের ওপর। চোখ ও কপালে আঘাত পেলো। এরপর থেকে ওর সেন্স নেই। আমার সামনে পড়ে আছে আর কাঁপছে। চোখ উপরের দিকে, মুখ বাঁকা হয়ে আছে, হাতের কনুইতে ব্যথা পেয়েছে। তখন কিছুক্ষণের জন্য আমার মনে হয়েছিল, তার জান বের হয়ে গেছে শরীর থেকে। হাসপাতালের গার্ড চিৎকার করে স্ট্রেচারের ব্যবস্থা করে নিয়ে যায় ইমার্জেন্সিতে।’
ফয়সাল আরও বলেন, ‘সেন্স আসার পর সেই মুহূর্তে আলিফ কিছুই মনে করতে পারেনি কখন পড়েছে, কখন নিচে গেছে আমার সাথে! ডায়ালাইসিসের সময় ব্লাড থিনার দেওয়া হয়। তার জন্য ব্যথা পাওয়া জায়গাগুলোতে রক্ত এসে ফুলে গেছে। তারপর আলিফের তিন দিন কেটেছে আইসিইউতে। সিটিস্ক্যান, এমআরআই, ইইজি, ইকো ও ইসিজি টেস্ট করানো হয়েছে। বর্তমানে চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেখছেন। ইরোলজিস্ট, নিউরোলজিস্ট ও নেফ্রোলজিস্ট–সবাই একটা করে রিপোর্ট চেক করছেন আর জানাচ্ছেন পরবর্তী পদক্ষেপ। ডাক্তারদের পরিপূর্ণ চেষ্টায় আলিফ এখন সেই অবস্থা থেকে অনেকটাই ভালো। তবে এখনও অনেক জটিলতা আছে। আগামী তিন মাস ওষুধ খেয়ে আবার সব টেস্ট করে ডাক্তারকে দেখাতে যেতে হবে।’
তিনি আরও জানান, বর্তমানে সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালাইসিস, দুইটা করে ইঞ্জেকশন আর ওষুধ চলছে আলিফের।
প্রসঙ্গত, প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলী ও নজরুল সংগীতশিল্পী সালমা সুলতানার মেয়ে আলিফ আলাউদ্দীন। মা সালমা সুলতানাও একই রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এই রোগেই ২০১৬ সালে চিরবিদায় নেন তিনি।
এএম/এসএ/
