জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন,‘দেশে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভোটার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ দুটি দলের একটি দল নির্বাচনের বাইরে থাকলে তা অন্তর্ভূক্তিমূলক নির্বাচন হবে না। সেই নির্বাচনে জনগণের মতামতের সঠিক প্রতিফলন আসবে না। আওয়ামী লীগ সেজন্য বড় ধরনের আঘাত পেয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ এটি করতে চাইলে তারাও এ ধরনের আঘাতপ্রাপ্ত হবে। আমাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।’
সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে রংপুর নগরীর সেনপাড়ায় স্কাইভিউ বাসভবনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘কাউকে বাদ দিয়ে সহজে জয়লাভ করা নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না। আমাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, অবাধ নির্বাচন তাকেই বলা যাবে, যেটিতে ভোটাররা অবাধে ভোট দিতে পারবেন এবং প্রার্থীরা বাধাহীনভাবে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন। বাধার সৃষ্টি করে প্রতিযোগী কমিয়ে আমি কিছু হয়ে গেলাম, এটি অবাধ নির্বাচন হতে পারে না। আওয়ামী লীগের আমলে যা হয়েছে সেটির যদি পুনরাবৃত্তি ঘটে তবে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচন আমরাও চাচ্ছি। কিন্তু নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। বর্তমানে বিভিন্নভাবে আমাদের সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সাংবিধানিক অধিকার অনেক ক্ষেত্রে আমরা পাচ্ছি না। আমাদের স্বাধীনভাবে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছাড়া যে উদ্দেশ্যে নির্বাচন দেওয়া হচ্ছে সে লক্ষ্য পূরণ হবে না।’
জিএম কাদের বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রচলন করা হয়েছিল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে। সরকারে থেকে দল হবে, সেই দল নির্বাচন করলে তখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে না। এজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়েছিল, যেন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করা সম্ভব হয়। এখন যদি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দল করা হয়, তবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের বেসিক কনসেপ্ট ব্যাহত হবে। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি কোনো দলের লোক হয় এবং আওয়ামী লীগের আমলে যা হয়েছে সেটির যদি পুনরাবৃত্তি ঘটে তবে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার আসুক। বর্তমান সরকারের পক্ষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে সংস্কার করা সম্ভব হবে না। পরবর্তীতে রাজনৈতিক দল দেশের স্বার্থে সবকিছু ঠিক করবে। এভাবে গেলে সকলের জন্য ভালো হবে।’
এ সময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ইয়াসির, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জেলা যুবসংহতির সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিনসহ জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।