মিলছে না দর্শক, ৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা!
৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা। ছবি: সংগৃহীত
এবারের ঈদে যে পরিমাণ ছবি মুক্তি পেয়েছে, তেমনটা নিকট অতীতে দেখা যায়নি। ঈদে ছবি মুক্তি দেওয়ার জন্য যেন সর্বোচ্চ চেষ্টাও চালিয়েছেন প্রযোজকেরা। তবে এক ঈদে এত ছবি মুক্তির বিষয়টি ভালোভাবে দেখেননি চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট অনেকে ও প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মতে, দেশে যে পরিমাণ প্রেক্ষাগৃহ আছে, তাতে তিন বা সর্বোচ্চ চারটি ছবি মুক্তি পেলে ভালো হতো।
একসঙ্গে এত ছবি মুক্তির খেসারত গুনছেন প্রযোজকেরা। প্রেক্ষাগৃহমালিকেরাও এড়াতে পারেননি অর্থনৈতিক ক্ষতি। তাই বাধ্য হয়ে মুক্তির চার দিনের মাথায় তিনটি ছবির প্রদর্শনী বন্ধ করে দিয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ঢালিউডের জন্য আরাধ্য প্ল্যাটফর্ম হলো স্টার সিনেপ্লেক্স। নির্মাতারা মনে করেন, এই মাল্টিপ্লেক্সে তাদের ছবি স্থান পাওয়া মানে মান রক্ষা! ফলে ঈদে (১১ এপ্রিল) মুক্তি পাওয়া ১১ ছবির ৮টিকেই সাদরে জায়গা করে দিয়েছে স্টার কর্তৃপক্ষ।
হতাশার বিষয় এই, ৪ দিনের মাথায় (১৫ এপ্রিল) এরমধ্যে নেমে গেলো ৩টি ছবি! কারণ দর্শক খরা। ছবি তিনটি হলো ফুয়াদ চৌধুরী পরিচালিত ‘মেঘনা কন্যা’, ছটকু আহমেদের ‘আহারে জীবন’ ও কাজী হায়াত পরিচালিত ‘গ্রিন কার্ড’। ১৫ এপ্রিল বিকালে তথ্যটি নিশ্চিত করেন প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ।
সাধারণত, একটি ছবি এক সপ্তাহ চালায় প্রেক্ষাগৃহগুলো। কিন্তু সেই সময়টিও নিজেদের টিকিয়ে রাখতে পারেনি ছবিগুলো। অথচ মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে ঈদের প্রথম দিন থেকে এখনও চলছে টিকিট সংকট। তবুও কেন নামতে হলো ছবিগুলোকে?
জবাবে মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দেখুন আমরা পারলে ১১টি ছবিই চালাতাম। কিন্তু সবগুলো ছবির শো-টাইম ম্যানেজ করতে পারিনি বলে সেটা সম্ভব হয়নি। এরমধ্যে যে ৮টি ছবি আমরা নিয়েছি তারমধ্যেও রয়েছে দর্শকদের বাচ-বিচার। এমন সিনেমা আছে দর্শক টিকিট পাচ্ছে না। আবার এমনও আছে যেগুলোর নির্ধারিত শো চালানোর মতো দর্শক খুঁজে পাচ্ছি না। বলতে পারেন দর্শকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ঈদের ৫ম দিনে এসে আমরা তিনটি ছবি ড্রপ করেছি। দর্শকরা চাইলে আবারও এই ছবিগুলো আমরা দেখাবো।’
ঈদের দিন থেকে এই মাল্টিপ্লেক্সের সবগুলো শাখায় এখনও চলছে হিমেল আশরাফ নির্মিত ‘রাজকুমার’, মিশুক মনির ‘দেয়ালের দেশ’, মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত ‘ওমর’, গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘কাজলরেখা’ এবং কামরুজ্জামান রোমান পরিচালিত ‘মোনা: জ্বীন ২’। এই ৫টি ছবিরই দর্শক রয়েছে কম-বেশি আশানুরূপ। এরমধ্যে দর্শক চাহিদায় এগিয়ে আছে শাকিব খানের ‘রাজকুমার’ এবং শরিফুল রাজের ‘ওমর’। চাহিদা রয়েছে হলিউডের ‘গডজিলা ভার্সেস কং’র প্রতিও।
স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ হতাশা নিয়ে আরও একটি তথ্য জানান। বলেন, ‘‘আমরা ঈদের প্রথম দিন থেকে সবচেয়ে আশাবাদী ছিলাম ‘দেয়ালের দেশ’ ছবিটি নিয়ে। এটির সর্বোচ্চ ১৭টি শো আমরা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু ঈদের পর সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়েছে। দর্শক চাহিদা কম থাকায় শো কমাতে হয়েছে। বাড়াতে হয়েছে ‘রাজকুমার’ ও ‘ওমর’-এর। ফলে আমাদের হাতে আসলে কিছু নেই, সবই দর্শকদের চাহিদার ওপর নির্ভর করছে।’’
বলা দরকার, ঈদের দিন থেকে ‘মেঘনা কন্যা’ দুটি, ‘গ্রিন কার্ড’ দুটি এবং ‘আহারে জীবন’-এর তিনটি করে শো চালিয়ে আসছিলো স্টার সিনেপ্লেক্স।