একাদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত
প্রতিবছরের মতো এবারও ব্যাপক আয়োজনে ইংরেজি মাধ্যম ও ইংরেজি ভার্শন স্কুলের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড ২০২২। দেশের শতাধিক স্কুলের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনলাইনে এবারের একাদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় ছিল একাদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াডের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য গত ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে নিবন্ধন করেছে শতাধিক স্কুল। তাদের মধ্য থেকে বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছেন ৮৮জন।
ভাষার মাসে দেশের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর অংশগ্রহণে বাংলা ভাষা বিষয়ক সর্ববৃহৎ প্রতিযোগিতা রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ আয়োজিত আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড।
অনলাইনে অনুষ্ঠিত এই পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা অলিম্পিয়াডের উপদেষ্টা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। এছাড়াও প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী ডালিয়া আহমেদ, বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান, বিশিষ্ট ছড়াকার আনজীর লিটন, সরকারি সঙ্গীত কলেজের শিক্ষক কমল খালিদ, ইউনুসুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য প্রদান করেন ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আব্দিল আজিজ যলদোশোভ, অধ্যক্ষ রোকসানা জারিন ও বাংলা অলিম্পিয়াডের সমন্বয়ক কামরুল আহসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী মাহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্কুলের ৮৮ জন বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। এ বছর কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য, উপস্থিত বক্তৃতা, সঙ্গীত ও চিত্রাঙ্কণ বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বিজয়ীদের প্রথম পুরস্কার পাঁচ হাজার, দ্বিতীয় পুরস্কার তিন হাজার ও তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ীরা পাবে দুই হাজার টাকা। এছাড়াও মেডেল ও বাংলা অলিম্পিয়াডের উপহার সামগ্রী দেওয়া হবে।
বাংলা অলিম্পিয়াডের উপদেষ্টা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ‘বাংলা ভাষার প্রতি যে প্রেম, এই প্রেম মূলত প্রকাশ করতে হবে বাংলাকে শুদ্ধ করে জেনে এবং জানিয়ে। সে দিক থেকে ইংরেজি মাধ্যমে যে ছেলে-মেয়েরা পড়ছে, তাদের মধ্যে বাংলা ভাষা এবং বাঙালি সংস্কৃতির এই যে প্রতিযোগিতা, এটি অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক। আমি গত কয়েক বছর ধরে এই প্রতিযোগিতার বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছি। কোভিডের কারণে চারদিকে যখন সংকটে, তখনও এই প্রতিযোগিতা খানিকটা অন্যভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমার অত্যন্ত ভালো লাগে যখন দেখি, তরুণ ছাত্র-ছাত্রী বাংলার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।’
চিত্রাংকন, আবৃত্তি, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, গান এবং একক নৃত্যে ছিল শিক্ষার্থীদের এবারের প্রতিযোগিতা। চিত্রাংকনে এ গ্রুপে প্রথম হয়েছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের আদিবা আজাদ জাইমা, বি গ্রুপে প্রথম হয়েছে চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুলের ফারিজা ফাইরোজ এবং সি গ্রুপে প্রথম হয়েছে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের তাসনিয়া কবির তুষ্টি।
তাৎক্ষণিক বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজের নিসর্গ বিনতে নজরুল। আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় এ গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেছে সানিডেল স্কুলের সোহমা অদ্বিতীয়া, বি গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেছে বিএফ শাহিন ইংলিশ মিডিয়াম কলেজের সমৃদ্ধ বর্মণ, সি গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেছে ডা. খস্তগীর সরকারি গার্লস হাইস্কুলের শ্রেয়ষী বিশ্বাস। সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় এ গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেছে প্লেপেন স্কুলের সুহা রাইফা সাঈদ, বি গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেছে বিএফ শাহিন কলেজের আয়মান আবরার জাহিন, সি গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেছে স্কলাস্টিকার সুহা আনাদিল চৌধুরী এবং ডি গ্রুপে বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের এম.দেউশিকা মিহিন পেরেরা। এছাড়া একক নৃত্যে এ গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেছে গলগথা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের মুবাশ্বিরা মহুয়া এবং বি গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেছে স্কলাস্টিকা স্কুলের আফিয়া ইবনাত হালিম।
প্রসঙ্গত, ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৬সালে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি এই স্কুলটি সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিভিত্তিক চর্চায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশীয় সংস্কৃতির সাথে শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্টতা বাড়াতে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা এবং অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে।
এপি/