অটোপাসের বিতর্ক এড়িয়ে
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ
করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে অটোপাসের বিতর্ক এড়িয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হলো। রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টার সময় এই ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অংশ নেওয়া প্রায় ১৪ লাখ পরীক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান হলো।
এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। এই পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭১৮ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ৯৪ দশমিক ১৪ শতাংশ ও ছাত্রী ৯৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন : পাসের হারে এগিয়ে যশোর, পিছিয়ে চট্টগ্রাম : জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে রাজশাহী, পিছিয়ে সিলেট
রাজধানীর সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সকাল সাড়ে ১১টায় আয়োজিত ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানরা তাদের বোর্ডের ফল তোলে দেন শিক্ষামন্ত্রীর হাতে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান। একই সঙ্গে তিনি যারা উত্তীর্ণ হতে পারেননি তাদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, করোনাকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে এ কারণে যারা খারাপ করেছে তাদের দায়ি করা ঠিক হবে না।
এরপর শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইট এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফল প্রকাশ করা হয়।
প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, ঢাকা বোর্ডের পাসের হার ৯৬ দশমিক ২০ শতাংশ। রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। যশোর বোর্ডে পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ। চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৯৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। দিনাজপুরে বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ময়মনসিংহ বোর্ডের পাসের হার ৯৫ দশমিক ৭১ শতাংশ। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার ৯৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার ৯২ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৮ মাস পর ২ ডিসেম্বর ২০২১ শুরু হয় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা চলে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সর্বমোট ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৩০ জন অংশ নেয়।
সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বচনিক বিষয়ে ছয়টি পত্রে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সময় কমিয়ে আনা হয় দেড় ঘণ্টায়। পরীক্ষা না নেওয়ায় বাংলা, ইংরেজির মত আবশ্যিক বিষয়গুলোর মূল্যায়ন করা হবে ৮ম শ্রেণির সমাপনি জেএসসি ও সমমান এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে।
এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। পরে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের গড় করে শিক্ষার্থীদের এইচএসসির মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালে পরীক্ষা ছাড়া (অটোপাস) না দিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার।
যেভাবে ফল জানা যাবে
আটটি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা মোবাইলের মাধ্যমে ফল পেতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর লিখে আবার স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখবে। এরপর তা ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস আকারে পাঠাবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানানো হবে।
মাদরাসা বোর্ডের শিক্ষার্থীদের ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে MAD স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল পাওয়া যাবে।
এছাড়া কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে TEC লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।
এপি/