শিক্ষার জন্য মেগা প্রকল্প চান সাংবাদিক আবুল মোমেন
একটা জাতির মৌলিক জায়গা হচ্ছে শিক্ষা এবং আগামীতে শিক্ষার উন্নয়নের জন্য একটা মেগা প্রকল্প নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক আবুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘আগামীতে যে মেগা প্রকল্প হবে সেটা হবে শিক্ষার জন্য। একটা পদ্মা সেতুর টাকা দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করা সম্ভব।’
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ যেভাবে সাজানো হয়েছে সেই বিষয়টি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করতে একটি কর্মশালার আয়োজন করে এনসিটিবি। আলোচনায় অংশ নিয়ে আবুল মোমেন এসব কথা বলেন।
মতিঝিলের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের আবদুল জব্বার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনা অনুষ্ঠানে এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান এর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন শিক্ষাবিদ ও লেখক অধ্যাপক জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লাফিফা জামান, এনসিটিবি’র সদস্য ফয়জুল ইসলাম।
আলোচনায় ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, চারুকলা ইন্সস্টিটিউটের নিসারুল হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী প্রমুখ।
আবুল মোমেন আরও বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদার জায়গা অনেক কমে গেছে। তার উপর তাদের বেতন কম। শিক্ষকদের মর্যাদা দিতে হবে। সব দেশেই শিক্ষকদের মর্যাদা সবার উপরে। এই জায়গাটা নিশ্চিত করতে হবে।’
অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমাদের এখনকার শিশুরা আমাদের মতো শৈশব, কৈশোর পায়নি। তাদের শৈশবে কোন আনন্দ নেই। বাবা-মা বাচ্চাদের কোচিং এ পাঠাতে ব্যস্ত। শিক্ষকরা কায়দা করে বাচ্চাদের কোচিং এ নিয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাচ্চারা এখন পরীক্ষায় জিপিএ-৫ না পেলে বাবা-মা, শিক্ষকরা বাচ্চাদের গালমন্দ করেন। এটা খুবই খারাপ।’
জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি সব সময় বলি মুখস্থ না করার জন্য। কিন্তু আমরা দেখি বাচ্চা কোচিং, গাইড বই, পাঠ্যবই মুখস্থ করে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা এ নিয়েই ব্যস্ত। আমাদের পত্রিকাগুলোও সব গাইড বই ছাপে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের মাথা মুখস্থ করার জন্য নয়। তার যখন যে তথ্য দরকার হবে সেটা সে ওই সময়েই বই খুলে দেখে নেবে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘মুখস্থ, কোচিং, টিউশনি, গাইড বই নির্ভর শিক্ষা থেকে বেরিযে আসতে পারব কি না সেটা বছর দুই না গেলে বলতে পারছি না।’
তিনি বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের মধ্যে একটা সংযুক্তি থাকতে হবে। প্রাথমিক শেষ করে শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিকে গিয়ে যেন হঠাৎ করে দিশেহারা না হয়ে পড়ে।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে মিডিয়ার নজরে রাখতে হবে। আমি সব সময় বলে এসেছি, প্রাথমিকের শিক্ষকদের বেতন অনেক বেশি হওয়া দরকার। তাহলে মেধাবীরা এ পেশায় আসবে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। সেজন্য সরকার কাজ করছে।
এনএইচবি/এমএমএ/