যত্রতত্র মাদ্রাসার কারণে স্কুলে শিক্ষার্থী কমছে : শিক্ষামন্ত্রী
ছবি: সংগৃহীত
সারা দেশে যত্রতত্র কওমি-নূরানী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা পাওয়ায় সরকারি নিবন্ধিত স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এটি সবার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, যে কারণে এটি নিরসন করতে হবে।
রোববার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের প্রথম দিনের তৃতীয় অধিবেশনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্য অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম রোমানা আলী, শিক্ষা সচিব সোলেমান খানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, অনিবন্ধিত মাদ্রাসাগুলোর বিষয়ে ডিসিদের পক্ষ থেকে আলোচনা উঠে এসেছে। বিশেষ করে তারা বলেছেন, সারা দেশে যত্রতত্র নূরানী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদের আশ্বস্ত করেছি, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের নিবন্ধিত হওয়ার প্রক্রিয়ার বাইরে যারা মাদ্রাসা খুলছেন, সেগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নয়। সেক্ষেত্রে কীভাবে বেফাক তাদের ছয়টি বোর্ডের মাধ্যমে নিবন্ধন দিচ্ছে, তাদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। একটি বয়সসীমা পর্যন্ত সেখানে যাতে জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ করা হয়। নয়তো শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, কখন শিক্ষার্থীরা স্কুলগুলোতে ভর্তি হয়, সেই সময়টাতে এসব (অনিবন্ধিত মাদ্রাসা) প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যায় কি-না, সেগুলো নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা করব। তবে অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর হার বাড়বে, আর নিবন্ধিত ও সরকারের শিক্ষাক্রম অনুসরণ করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী কমবে, এটা কখনোই কাঙ্ক্ষিত নয়। বিষয়টি সব সময় মাথায় রাখতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নিবন্ধনের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মাঠ প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটি জরিপ করেছে। অনিবন্ধিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একেক জায়গায় একেক পরিসংখ্যান। সে কারণে নিবন্ধনের বিষয়টা নিয়ে মাঠ প্রশাসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করা হবে।
নওফেল বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটলে তদন্ত কমিটি করার বিষয়ে আদালতের একটি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু কমিটির তদন্ত চলছে বলে যেন পুলিশি বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা সৃষ্টি করতে না পারে। অনেক সময় দেখা যায় নিশ্চিতভাবে যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু তদন্ত কমিটি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে কালক্ষেপণ করছে। জেলা প্রশাসকদের বলেছি, এমন ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে সময় নেওয়া যাবে না।
ডিসিরা অনেক বিষয়ে কথা বলেছেন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের কাজ শুরু হয়েছে, সেটির বিষয়ে নেতিবাচক কোনো অভিজ্ঞতার কথা তারা বলেননি। ফলে ধরে নিতেই পারি এই শিক্ষাক্রম শিক্ষক ও অভিভাবকরা গ্রহণ করেছেন।