প্রতারণা, চাঁদাবাজি ও মানহানির অভিযোগে করা এক মামলায় ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কথিত সমন্বয়ক ওমর ফারুক শুভকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে ফেনী শহরের মডেল থানা-সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওমর ফারুক শুভ ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের জগতজীবনপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে।
এর আগে গত আগস্টে আন্দোলনে শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত থাকায় তাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফেনী জেলার সহ-সমন্বয়ক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তারপরও বিগত কয়েক মাস ধরে জেলার অন্য সমন্বয়ক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়েই বিভিন্ন কর্মসূচি ও সভা-সমাবেশে অংশ নেন তিনি।
জানা গেছে, বিভিন্ন অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত ফেনী আলিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসানকে স্বপদে বহাল রাখার আশ্বাস দিয়ে চাঁদা দাবি করেন শুভ। মঙ্গলবার চাঁদা দাবির ১৫ মিনিট ১২ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর থেকে জেলাজুড়ে শুরু হয় সমালোচনা।
কল রেকর্ডে শোনা গেছে, ওমর ফারুক শুভ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল কাদের ও হামজা মাহবুবের কথা বলে অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসানের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। যেখানে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও ফেনীর সন্তান আজিজুর রহমান রিজভীর নাম উল্লেখ করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে আজিজুর রহমান রিজভীর পক্ষে তার বাবা ছিদ্দিকুর রহমান বাদী হয়ে ওমর ফারুক শুভকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজিজুর রহমান রিজভী বলেন, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক, তথ্য উপদেষ্টা ও আমার নাম ভাঙিয়ে সে (শুভ) চাঁদাবাজি করার চেষ্টা করেছে। ন্যূনতম যোগাযোগ ও সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও তার এমন কাণ্ড আমার জন্য সম্মানহানিকর। বিষয়টি অবগত হয়ে আমি ফেনী মডেল থানায় অভিযোগ করেছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার একটি আশীর্বাদ স্বরূপ। এসব নামে-বেনামে সমন্বয়কদের কারণে এ ব্যানারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কোনো কাজে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে ফেনী মডেল থানা পুলিশের ওসি মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, মামলা করার পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার (১ জানুয়ারি) আদালতের মাধ্যমে শুভকে কারাগারে পাঠানো হবে।