সমালোচনা ও মামলা কাঁধে নিয়ে পদ ছাড়লেন আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ

ছবি সংগৃহিত
দাতা সদস্যের সঙ্গে ছাত্রীর বিয়ের ঘটনায় সমালোচনা ও মামলা কাঁধে নিয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদ ছাড়লেন ফাওজিয়া রাশেদী। যদিও তিনি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। গভর্নিং বডির সভায় তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়।
সোমবার (৯ অক্টোবর) সকালে গভর্নিং বডির সভাপতি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, উনি নিজেই সরে গেছেন। তাকে কিন্তু অপসারণ করা হয়নি। তিনি স্বেচ্ছায় ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগপত্রটি গভর্নিং বডির সভায় উপস্থাপনের পর সবার সম্মতিতে তা গৃহীত হয়। এখন থেকে তিনি (ফাওজিয়া রাশেদী) আর প্রতিষ্ঠানের কেউ না।’
জানা গেছে, গত ১৮ মার্চ স্কুলের একাদশ শ্রেণির একজন ছাত্রীকে বিয়ে করেন ওই প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ। এ নিয়ে ঢাকা পোস্ট ‘কিং মুশতাক ও রানি সিনথিয়া উপাখ্যানে ‘বিব্রত’ আইডিয়াল’ প্রতিবেদন করার পর সব মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনুসন্ধানে জানা যায়, এই বিয়েতে মধ্যস্থতা করেন খন্দকার মুশতাকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সহপাঠী অধ্যক্ষ ফৌজিয়া রাশেদী। সর্বশেষ মেয়েকে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা করেন ওই ছাত্রীর বাবা সাইফুল ইসলাম। মামলায় তার মেয়েকে ধর্ষণ করার সহযোগিতা করার অভিযোগ আনার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
এরপর গভর্নিং বডির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের আলোচিত সেই দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ। গত ২৪ আগস্ট গভর্নিং বডির সভাপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
এর আগে ২৫ মার্চ মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সিনথিয়া ইসলামকে বিয়ে করেন প্রতিষ্ঠানটির দাতা সদস্য মুশতাক আহমেদ। এ ঘটনা জানাজানি পর গত ১ আগস্ট অধ্যক্ষ ফৌজিয়া রাশেদী এবং খন্দকার মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে প্রলোভন ও ধর্ষণ এবং এতে সহযোগিতার অভিযোগে আদালতে নালিশি মামলা করেন ছাত্রীর বাবা সাইফুল ইসলাম। আদালতের নির্দেশে ৮ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়। মামলার পরপরই শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে দুই মাসের ছুটিতে যান অধ্যক্ষ ফৌজিয়া।
উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন খন্দকার মুশতাক। আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগ করেছেন তিনি।
এদিকে ফাওজিয়া রাশেদীর আমলের ‘অবৈধ কর্মকাণ্ড, অবৈধ ভর্তি ও নিয়োগ–বাণিজ্য’ তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ অভিভাবক ফোরাম নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটির চেয়ারম্যান ফাহিমউদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক রোস্তম আলী এক বিবৃতিতে বলেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত এবং তার দেনা-পাওনা পরিশোধ না করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছে তারা।
