শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
টানা অনশনে হাসপাতালে ১৬ জন, খাবার না খেলে ঝুঁকি
টানা চতুর্থ দিনে চলছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনশন। দীর্ঘ সময়ের অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ২৪ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শনিবার (২২ জানুয়ারি) বেলা আড়াইটায় ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
অনশনরতদের চিকিৎসা সহায়তার কাজে নিয়জিত চিকিৎসক দলের প্রধান নাজমুল হাসান বলেন, 'যারা হাসপাতালে ভর্তি তাদের মধ্যে দুজনের শ্বাসকষ্ট থাকায় ন্যাবুলাইজেশন দিতে হচ্ছে। একজনের অবস্থা খুব খারাপ। সে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি। ওখানকার বিভাগীয় প্রধান জানিয়েছেন মুখে খাবার দিতে না পারলে বিশাল সমস্যা হতে পারে। অপর একজনের অবস্থা খারাপের দিকে। এ ছাড়াও অনশনস্থলে যারা আছেন তারাও অসুস্থ। এ অবস্থায় থাকলে তাদের শরীর আরও খারাপের দিকে যাবে।'
এদিকে গতকাল শুক্রবার বিকালে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন। এসময় শিক্ষামন্ত্রী ঢাকায় গিয়ে আলোচনা করতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করলে শিক্ষার্থীরাও সম্মত হন। তার কিছু সময় পর পরিবর্তন হয় সিদ্ধান্ত। শিক্ষার্থীরা ঢাকায় গিয়ে কথা বলতে অসম্মতি জানান এবং অনলাইন মাধ্যমে আলোচনার প্রস্থাব দেন।
তবে শিক্ষার্থীরা ঢাকায় না গেলেও সৃষ্ট সমস্যার ব্যাপারে আলোচনা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। তারা গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান।
এর আগে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী। এর পর বিভিন্ন পক্ষ থেকে সমঝোতার চেষ্টা চালানো হলেও শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে অনড়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) রাত থেকে সিরাজুন্নেছা ছাত্রী হলের প্রভোস্টের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে ছাত্রীরা আন্দোলন শুরু করেন। এর এক পর্যায় রোববার (১৬ জানুয়ারি) দাবি আদায়ে ছাত্রীরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখলে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে, রাবার ব্যুলেট, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
ওইদিন রাতেই পদত্যাগ করেন হল প্রভোস্ট। উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়। দেওয়া হয় হল ছাড়ার নির্দেশ। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
টিটি/