রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বশেফমুবিপ্রবি: উচ্চশিক্ষায় নবদিগন্ত

সঠিক শিক্ষা ছাড়া দেশ গঠন কখনই সম্ভব নয়। তাই তো মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশে গণমুখী শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্ভব সব ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। শিক্ষাকে প্রাধন্য দিয়ে ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত হয় সংবিধান, উচ্চশিক্ষার অবকাঠামোগুলো পুনরুদ্ধার এবং সর্বস্তরে শিক্ষা বিস্তারের জন্য নেওয়া হয় কর্মপরিকল্পনা।

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা-ভাবনাই শেখ হাসিনা সরকারের মূলনীতি ও আদর্শ। প্রণীত হয়েছে জাতীয় শিক্ষানীতি। বর্তমান প্রাগ্রসর বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যথাযথ গুরুত্ব প্রদানসহ পঠন-পাঠন ও গবেষণার সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি ও সম্প্রসারণকল্পে জামালপুরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেফমুবিপ্রবি) স্থাপিত হয়। ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর জাতীয় সংসদে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পাস হয়। কিন্তু এর এক বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।

২০১৮ খ্রিস্টাব্দে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদকে প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। তিনি ওই বছরের ১৯ নভেম্বর যোগদান করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। নামেমাত্র লোকবল দিয়ে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি করা হয়। প্রথমবার ত্রিশালের জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা-কার্যক্রম শুরু করতে প্রাথমিকভাবে ভাড়া নেওয়া হয় জেলা শহরের বঙ্গবন্ধু আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবন। আস্তে আস্তে সিন্ডিকেটসহ সব বডি গঠন করে কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তা এবং কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা হয় ঢাকার একটি কলেজে। এর মাঝে শুরু হয় মহামারি করোনা। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও এই মহামারিতে শিক্ষার্থীদের পাশে থকেছে কর্তৃপক্ষ।

ময়মনসিংহ বিভাগের প্রথম বিশেষায়িত এ বিশ্ববিদ্যালয়টির স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা সংসদ সদস্য মির্জা আজম। শিক্ষা-দীক্ষা ও অর্থনৈতিকভাবে একসময় পিছিয়ে থাকা জামালপুরে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের স্বপ্ন দেখেন তিনি; যে প্রতিষ্ঠানে পড়তে আসবে দেশে-বিদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা। সেই স্বপ্ন নিয়ে তিনি ২০০০ খ্রিস্টাব্দে মেলান্দহের মালঞ্চে প্রতিষ্ঠা করলেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজ। বাংলাদেশের একমাত্র ফিশারিজ কলেজ হিসেবে এখানকার শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পেতেন।

২০০৬ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জামালপুর সফর করেন। তৎকালীন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজ মাঠে আয়োজিত বিশাল জনসভায় এ অঞ্চলে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি উঠে। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনাও ঘোষণা দেন, সরকার গঠন করলে এ জনপদে একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।

এদিকে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজকে কেন্দ্র করে জামালপুরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় আইনে এই কলেজ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। ফলে এ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। অনিশ্চয়তার ঘোর নামে কলেজের প্রায় তিনশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন নিয়েও।

এ বিষয়ে করণীয় নিয়ে মির্জা আজম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেন। এরই মাঝে তার প্রচেষ্টায় কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আত্তীকরণ সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর একটি অনুশাসন জারি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম হাতে নেয়। সরকারের নির্দেশক্রমে যথাযথ নিয়ম মেনে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগে আত্তীকরণ করা হয়। এর মধ্যদিয়ে স্বস্তি ফেরে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে।

২০১৯ সালের ২৩ মে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদের কাছে তৎকালীন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মির্জা আজম, প্রতিষ্ঠানটির সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির দলিল হস্তান্তর করেন। ফলে ১৫.৪৩ একর জমিসহ কিছু স্থাপনা পায় বিশ্ববিদ্যালয়টি। তাই প্রতিষ্ঠার দুই বছরের মধ্যেই ভাড়া ভবন থেকে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয় সব কার্যক্রম। ক্যাম্পাস হয় দৃষ্টিনন্দন। এর মাঝে চতুর্ভূজ আকারে ৫০ কক্ষের একটি সুদৃশ্য একাডেমিক ভবন করা হয়েছে।

শূন্য থেকে শুরু। এখন শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৭০০ এর অধিক। শিক্ষক ৪৭ জন, কর্মকর্তা ৩২ ও কর্মচারী ১০০-এর বেশি। এর মাঝে ফিশারিজ বিভাগের একটি ব্যাচের স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন হয়েছে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবর্ষের ভর্তি কার্যক্রমও চলমান।

নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে প্রয়োজনীয় বইসমৃদ্ধ লাইব্রেরি, গবেষণা ল্যাবসহ শিক্ষার প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। পড়ুয়াদের শিক্ষণীয় নানা প্লাটফর্মে যুক্ত করতে বিতর্ক ক্লাব, রোবটিক্স ক্লাব, কম্পিউটার ক্লাবও পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি নিয়মিত খেলাধুলারও আয়োজন করা হয়।

এদিকে ক্যাম্পাস স্থাপনে সরকার ৫০০ একর ভূমির অনুমোদন দিয়েছে। এরই আলোকে প্রণয়ন করা হয়েছে ডিপিপি তথা মাস্টারপ্ল্যান। অদূর ভবিষ্যতে ক্যাম্পাস আরও বিস্তৃত হবে। শিক্ষার্থী বাড়বে, নিত্যনতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে দেশি-বিদেশি গবেষকদের পদচারণায় মুখর হবে দৃষ্টিনন্দন সবুজ এই ক্যাম্পাস। চর্চা হবে জ্ঞান-বিজ্ঞানের, বাড়বে শিল্প-বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলাবোরেশান। গবেষণালব্ধ সেই নবসৃষ্ট জ্ঞানে কল্যাণ সাধিত হবে দেশ-জাতির। বিশ্ববিদ্যালয় একটি জাতির শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে, যেমনটা রেখে চলেছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ দেশের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের উত্থান—সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গমাতা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরও নিজস্ব কৃষ্টি-ঐতিহ্য তৈরি হবে। শিখন-পঠনের মাধ্যমে মেধা ও মননে এক টুকরো বশেফমুবিপ্রবির আভা ছড়িয়ে পড়বে ‘বিশ্বগ্রামে’। হয়ে উঠবে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষ এবং মুক্তবুদ্ধিচর্চার প্রাণকেন্দ্র।

২৮ নভেম্বর ৫ পেরিয়ে ৬ বছরে পা রাখছে নতুন প্রজন্মের বিশ্ববিদ্যালয়টি। সেদিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি এখনো 'শিশু'! ভাবে হাঁটিহাঁটি পা ফেলে শৈশব পেরিয়ে কৈশোর, সেখান থেকে যৌবনপ্রাপ্ত হয়ে নতুন পথ সৃষ্টি করুক। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষিত নতুন পথে বঙ্গমাতা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছে গৌরবের স্বর্ণশিখরে। হয়ে উঠুক উচ্চশিক্ষার নতুন দিগন্ত। পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের চাওয়া হোক—এই।

লেখক: জনসংযোগ কর্মকর্তা, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি