গুচ্ছের ফল চ্যালেঞ্জ ফি ২০০০, শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ

গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল পুননিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়েছে ৩০ আগস্ট, যা চলবে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। পরীক্ষার্থীদের এজন্য ফি দিতে হবে ২ হাজার টাকা। এ কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।
অধিকাংশ শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ফল পুননিরীক্ষণের ফি অনেক বেশি ধরা হয়েছে। অনেক জায়গায় পরীক্ষা দিতে ভর্তি পরীক্ষার সময়ে অনেক টাকা খরচ হয় এর উপর আবার এখন ফল চ্যালেঞ্জের ফি ২ হাজার টাকা। যা বর্তমানে শিক্ষার্থীদের জন্য মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটি সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা যদি মনে করে তাদের ফলাফলে অসঙ্গতি রয়েছে, সেক্ষেত্রে তারা ফল চ্যালেঞ্জের সুযোগ পাবে। এক্ষেত্রে প্রতি শিক্ষার্থীকে ২ হাজার টাকা ফি দিয়ে আবেদন করতে হবে। চ্যালেঞ্জ করার পর কোনো শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হলে সে আবেদন ফি ফেরত পাবে। আর পরিবর্তন না হলে ফি ফেরত পাবে না। শিক্ষার্থীদের সার্বিক সুবিধা বিবেচনায় এই সুযোগ দেওয়া হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আমার বাবা একজন কৃষক। এমনিই কষ্ট করে পরীক্ষা দিচ্ছি বিভিন্ন জায়গায়। ২ হাজার টাকা আমাদের জন্য এখন বেশি, ৫০০ টাকা কিংবা ১০০০ টাকা হলে ভালো হতো।
নাম প্রকাশে আরেক শিক্ষার্থী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, গুচ্ছের পরীক্ষা ফি এমনিই অনেক রাখা হয়েছে। এখন ফল চ্যালেঞ্জ ২ হাজার টাকা এটা খুব চাপ আমাদের জন্য। এর আগেও নাকি কারও ফল পরিবর্তন হয়নি, এবার হবে কি না কে জানে। ফলাফল পরিবর্তন না হলে ২ হাজার টাকা ফেরত পাব না।
এ ব্যাপারে গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি কমিটির সচিব ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ফল চ্যালেঞ্জের জন্য ২ হাজার টাকা খুব বেশি নয়। এখানে অনেক কাজ রয়েছে। শিক্ষকদের এসব খাতা যাচাই বাচাই করতে হবে। কেউ যদি ফল চ্যালেঞ্জের রেজাল্ট নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকে তাহলে সে তার নিজের খাতা দেখতে পারবে, আমরা সেই সুযোগ দেব।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৩০ জুলাই বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিট, ১৩ আগস্ট মানবিক অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিট এবং ২০ আগস্ট বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা। ‘এ’ ইউনিটে পাসের হার ৫৫.৬৩ শতাংশ, ‘বি’ ইউনিটে পাসের হার ৫৬.২৬ শতাংশ এবং ‘সি’ ইউনিটে পাসের হার ৫৯.৪৫ শতাংশ।
গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় হলো-জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় (নেত্রকোনা), বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোপালগঞ্জ), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় (কিশোরগঞ্জ) এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
এসএন
