খালি গায়ে শুরু হলো ছয় দিনের আন্দোলন
লেখা ও ছবি : জুনায়েদ খান, প্রতিনিধি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী চার ছাত্রের মধ্যে দুইজনই আজ থেকে খালি গায়ে শ্লোগান লিখে শান্তিপূর্ণভাবে বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থার অন্যায় ও দুর্নীতিগুলোর প্রতিবাদে নেমেছেন।
‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, দুর্নীতির ঠাই নাই’, ‘দুর্নীতি নিপাত যাক, বাংলাদেশ মুক্তি পাক’- বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ও পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অন্যতম দুই ছাত্র মাহিন রুবেল ও মাহবুব হাসান বুকে লিখেছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধি জুনায়েদ খান।
টানা ছয় দিনের মতো বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থার অব্যবস্থাপনা, দুনীতি, কালোবাজারির প্রতিবাদ করছেন তারা চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে। তারা তাদের ছয় দফা দাবীতে অনড়। তাদের বের করে গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা বাইরে দাঁড়িয়ে অভিনব শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন। তাদের মূল লক্ষ্য অব্যবস্থাপনার পরিবর্তন করতে হবে বাংলাদেশ রেলওয়েকে।
সঙ্গে তাদের সমর্থক, সমমর্মী ও প্রতিবাদী নানা বিভাগের অনেক ছাত্র, ছাত্রী। কেউ এসেছেন, কেউ দূর থেকে সমর্থন দিয়ে চলেছেন।
আজ তারা স্টেশনের বাইরে অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছেন শহরের প্রধান বটতলী স্টেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাধায়, জানিয়েছেন বিভাগের ছাত্র ও সাংবাদিক জুনায়েদ।
আন্দোলনকারী রুবেল তাকে বলেছেন, ‘আজকে শুক্রবার ২২ জুলাই আমরা টানা ষষ্ঠ দিনের চট্টগ্রাম বটতলী রেলওয়ে স্টেশনে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। একাত্তরে যেভাবে বুকে, পিঠে প্রতিবাদ করে কাজে নেমে এই দেশটিকে স্বাধীন করা হয়েছে, তেমনিভাবে ২২ বছর বয়সে আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা চট্টগ্রাম শহরে আমাদের বুকে লিখনীর মাধ্যমেও আমাদের কষ্টে, না খেয়ে, না দেয়ে, রেল স্টেশনে থেকে বাংলাদেশ থেকে রেলওয়ের দুর্নীতিকে চির বিদায় জানাব।’
মাহিন রুবেল চট্টগ্রামে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বাধার বিষয়ে বলেছেন, ‘স্টেশন ম্যানেজার আমাদের বারংবার নিষেধ করেছেন-যাতে আন্দোলন না করি। কিন্তু আমরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি, যতদিন আমাদের দাবীগুলো মেনে না নেওয়া হবে, ততদিন আন্দোলন চলবে। এরপর তিনি অবস্থান ত্যাগ করেছেন।’
চট্টগ্রাম বটতলী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী আন্দোলনকারী ছাত্রদের রেলওয়ে স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করতে না দেওয়ার বিষয়ে বলেছেন, ‘তাদের আমি বলেছি, দেখেন, আপনারা নিজেদের ছাত্রলীগ কর্মী বলে দাবি করে ভেতরে প্রবেশ করে যদি এ রকম হট্টগোল করেন তাহলে তো সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে।’
তবে মাহিন রুবেল ও মাহবুব হাসান নিজেদের সাধারণ ছাত্র দাবী করে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, তারা সবাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় পড়েন।
স্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী তাদের বাধা দেওয়ার বিষয়ে বলেছেন, ‘ছাত্রদের বলেছি, আমরা তো আপনাদের ১৯ জুলাই দেওয়া স্মারকলিপি রেল মহাপরিচালকের কাছে পাঠিয়েছি। তারপরও কেন আপনারা খালি শরীরে অবস্থান কর্মসূচি করছেন?’
ওএস।