৩২ উপজেলায় এমপিওভুক্তিতে নেই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
সরকার নতুন করে ২ হাজার ৭১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু এই তালিকায় স্থান পায়নি দেশের অন্তত ৩২ উপজেলার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
একইভাবে সিটি করপোরেশন এলাকার ২২ থানার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হতে পারেনি।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতায় ২ হাজার ৫১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতায় ৬৬৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৯ সালে দুই হাজার ৬২২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছিল সরকার।
বুধবার (৬ জুলাই) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্তির বিষয়ে জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি জানান, দেশের মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ৩২ উপজেলার এবং সিটি কর্পোরেশনভুক্ত ২২টি থানার একটি প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির অনুমোদন পায়নি।
তিনি আরও জানান, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে ১৮টি, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ২১৩টি এবং মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১৫২ উপজেলা থেকে এমপিওভুক্তির জন্য কোনো আবেদন পাওয়া যায়নি।
আর কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে ২২৩টি ও মাদ্রাসা শিক্ষার ক্ষেত্রে ২০০টি উপজেলা থেকে একটি প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির অনুমোদনের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আবেদন করেছে কিন্তু এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে না পারা উপজেলার সবগুলোতে অন্তত একটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বাছাই করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, কারিগরি শিক্ষা এবং মাদ্রাসা শিক্ষার যে কোন একটিকে নেয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় স্বীকৃতি/স্বীকৃতির সুপারিশ রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনা করা হয়েছে।
আঞ্চলিক অসামঞ্জস্য দূরীকরণের জন্য মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ২৯টি, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার ক্ষেত্রে ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনা করা হয়েছে। শিক্ষায় পশ্চাৎপদতা, অনগ্রসরতা বিবেচনায় নিয়ে এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে না পারা মোট ১০(দশ)টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বাছাই করা হয়েছে। প্রতিটির জন্য শিথিলকৃত শর্ত এবং বাছাইয়ের যৌক্তিকতা উল্লেখ করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৬৬টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় এক হাজার ১২২টি, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৩৬টি, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ১০৯টি, ডিগ্রি কলেজ ১৮টি।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে এসএসসি ভোকেশনাল অথবা দাখিল ভোকেশনাল ৯৭টি, এসএসসি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলোজি ২০০টি, ডিপ্লোমা ইন অ্যাগ্রিকালচার ২টি, দাখিল মাদ্রাসা ২৬৪টি, আলিম মাদ্রাসা ৮৫টি, ফাজিল মাদ্রাসা ৬টি, কামিল মাদ্রাসা ১১টি।
এর আগে সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এসব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে আজই তা জানাবে। এর পর পরই শিক্ষা মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে এমপিওভুক্তির কথা ঘোষণা করেন।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে গত বছরের ৭ নভেম্বর ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটিকে সহায়তা করতে চার সদস্যের একটি উপকমিটিও গঠন করা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) এমপিওভুক্ত করতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়।
আবেদনকৃত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে এমপিওভুক্তির জন্য প্রাথমিক তালিকা করে এমপিও যাচাই-বাছাই কমিটি। চূড়ান্ত তালিকা শিক্ষামন্ত্রীর অনুমোদনের পর পাঠানো হয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন জন্য। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দেওয়ার পর আজ সেটি প্রকাশ করা হলো।
এনএইচবি/এমএমএ/