ধানমন্ডি আইডিয়ালের বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের পাল্টা অভিযোগ
নিজের বিরুদ্ধে উঠা সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন আহম্মেদ।
পাল্টা অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শামছুল আলমের অনুসারীরা পুনরায় শামছুল আলমকে অধ্যক্ষ পদে বসাতে ষড়যন্ত্র হিসেবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ম্যানেজিং কমিটি বাধ্য হয়ে তিনিসহ তিন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
সোমবার (৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন আহম্মেদ এমন দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জসিম উদ্দীন আহম্মেদ দাবি করেন, কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. শামছুল আলম দায়িত্বে থাকার সময়ে কোনোরূপ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে তার নিকটাত্মীয়, স্বজন ও নিজ এলাকার প্রায় ৫৫ জনকে শিক্ষক-কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেন। তারা জোটবদ্ধ হয়ে মূলত কলেজটিতে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছেন। এর আগেও তারা জোটবন্ধ হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে আন্দোলন চালালেও তাতে সফল হয়নি। তারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কলেজ প্রশাসনকে হেয় প্রতিপন্ন করে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করছে। তারা চান না আমি এই কলেজে থাকি, তাদের পচ্ছন্দের ব্যক্তিকে অধ্যক্ষ পদে বসাতে এমন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
বরখাস্তকৃত এই অধ্যক্ষ বলেন, ‘শামছুল আলমের দায়িত্বরত সময়ে এসব শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগে অনিয়ম ও ভুয়া অভিজ্ঞতার সদনপত্র যাচাইয়ে গভর্নিং বডির অনুমোদনে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। এসব অনিয়ম ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে তদন্ত চলমান অবস্থায় তারা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। বিভিন্ন স্থানে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করা হয়। এ কারণে তারা চলতি বছরের গত ২৬ মে কলেজের সিসিটিভি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। এই ঘটনায় কলাবাগান থাকায় একটি সাধারণ ডায়েরি করলে পুলিশ এসে ঘটনার সত্যতা পায়। তারা কলেজের ক্ষতি করেই থামেনি, শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ফেসবুকে প্রচার করে কলেজ বিরোধী তীব্র আন্দোলন শুরু করতে আহ্বান করা হয়। সেটি না করলে শিক্ষার্থীদের রেজিস্টেশন করতে দেওয়া হবে না বলে ভয়ভীতি দেখানো হয়। সে কারণে শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনে যুক্ত হয়।
নিজের বিরুদ্ধে ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে জসিম উদ্দিন বলেন, গভর্নিং বডির সভাপতি ও অধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষর ছাড়া এককভাবে অধ্যকক্ষের পক্ষে কলেজের ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকাও উত্তোলন করা সম্ভব নয়। এটি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনভাতা ও কলেজের উন্নয়নকাজে ব্যয় হিসেবে উত্তোলন করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় উত্তোলন করা টাকার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে কোনো অধ্যক্ষকে এক বছরের বেশি থাকতে দেওয়া হয় না। শামছুল আলমের অনুসারীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হলে নানা ধরনের অভিযোগে আন্দোলন করে তাকে সরিয়ে দেন। সেখানে আমি বিগত পাঁচ বছর ধরে সফলভাবে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের বরখাস্তকৃত শিক্ষক তরুণ কুমার গাঙ্গুলী, তৌফিক আজিজ চৌধুরিসহ সাবেক শিক্ষার্থীসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এনএইচবি/এমএমএ/