এক ঘরে দুই ভিসি
অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন ও অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী
এক ঘর দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি)। ব্যক্তিগত সম্পর্কে তারা স্বামী-স্ত্রী। একজন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, আরেকজন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। রীতি অনুসারে দুই জনকেই নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তারা হলেন অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী ও গবেষক ড. হাফিজা খাতুন।
অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী ২০১৮ জুলাই থেকে চুড়াডাঙ্গার ফাষ্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আর
হাফিজা খাতুন সম্প্রতি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
অধ্যাপক হযরত আলী কর্মজীবনে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার, সিন্ডিকেট সদস্য, কৃষি অনুষদের ডিনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বর্তমানে এশিয়া প্যাসিফিক উইড সাইন্স সোসাইটির কান্ট্রি রিপ্রেজেনটিভ এবং কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) পরিচালনা পর্ষদের সদস্য। তাঁর কৃষি বিষয়ক ০৫টি বইসহ শতাধিক গবেষণা পত্র দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
ড. হাফিজা খাতুন ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক। বছরখানেক আগে তিনি অবসর গ্রহণ করেছিলেন। হাফিজা খাতুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের প্রথম ব্যাচের ছাত্রী ও ক্রীড়াবিদ ছিলেন। তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরে গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে ১৯৮৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগে (বর্তমানে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ) প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন। বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ গবেষণা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তার ৯টি বই, ৮০টিরও বেশি গবেষণাকর্ম বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
মো. হযরত আলী ও হাফিজা খাতুন দম্পতির তিন সন্তান রয়েছেন। তারা অস্ট্রেলিয়াতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।
স্বামী-স্ত্রীর এক সঙ্গে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করার ঘটনা দেশে এই প্রথম। এ প্রসঙ্গে হাফিজা খাতুন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘খবরটা অবশ্যই আনন্দের । আবার অনেক বড় দায়িত্বেরও। ৪০ বছরের বেশি গবেষণা, শিক্ষকতা ও শিক্ষা প্রশাসনে কাজ করেছি। এই অভিজ্ঞতা এবার কাজে লাগানোর সুযোগ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে চেষ্টা চালিয়ে যাব। সবাইকে নিয়ে নিশ্চয়ই সফলও হব।
তিনি আরও বলেন, ‘এক ঘরে দুই উপাচার্য। তাও আবার স্বামী-স্ত্রী। বাংলাদেশে এর আগে এটি কখনো হয়নি। এ কারণে আমরা গর্বিত। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। চেষ্টা থাকবে নিজেদের সবটুকু দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করার।’
এপি/