৪৫ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে নেবার দাবী
আসিফ আহমেদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
‘প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০’ জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হলে দুর্নীতির আশঙ্কা করেছেন চাকুরিপ্রার্থীরা। এজন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় পরীক্ষাটি নিতে আবেদন করেছেন তারা। তাছাড়াও দুর্নীতি, অনিয়মের বাইরে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতায় পরীক্ষাটি নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলার চাকরিপ্রার্থীরা।
২১ মার্চ, সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়টির চাকুরিটির আবেদন জানানো অনেক তরুণ-তরুণী মিলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন।
কামাল হোসেন, শিবলী নোমান, রেজোয়ান বারী, তাজমুল ইসলাম, মৃণাল হালদার, আবদুল হাকিম, সোমা পাল, নুরুজ্জামানসহ শতাধিকের উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্যে প্রদান করা হয়েছে।
তারা বলেছেন,“কুচক্রী, স্বার্থান্বেষী একটি মহল ‘প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক নিয়োগ’ পরীক্ষায়ও জালিয়াতি, দুর্নীতিতে নিজেদের আখের গোছাতে জেলা পর্যায়েই এটি নেবার জন্য তৎপর হয়ে পড়েছে।’ তারা আরো বলেছেন, ‘যেকোনো মূল্যে পরীক্ষাটি জেলা পর্যায়ে নিতে চায় চক্রটি।’ তারা জানিয়েছেন, ‘ফলে তারা প্রশ্নপত্র ফাঁস, কেন্দ্র দখল করেও তাদের নির্ধারিত অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগের পথ সুগম করতে কাজ করতে পারবে। বিরাট এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটিকে বিতর্কিত করে শিক্ষিত বেকারদের খারাপ দিকে উস্কে দিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে তারা তৎপর। অথচ কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় পরীক্ষাটি হলে অন্যসব চাকুরির পরীক্ষার মত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন কর্তৃপক্ষ।’
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানিয়েছেন, ‘করোনাভাইরাসের আক্রমণে কোভিড-১৯ রোগের আক্রমণের মহামারিটিতে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সরকারি চাকরিগুলোর পরীক্ষা বন্ধ থাকায় আমরা যারা প্রস্তুতি নিচ্ছি, তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। পরীক্ষার নিয়োগ বন্ধ, যেকটি হচ্ছে, কিছুতে দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগও উঠছে। এতে শত হতাশার পরও নতুনভাবে আমরা যে স্বপ্নগুলো দেখছিলাম, চলতি বছর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারি শিক্ষক নিয়োগকে ঘিরে আমরা মনে স্বপ্ন গাঁথা শুরু করেছিলাম, বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাগুলোকে আমাদের এই স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে চুরমার হবার পথে রয়েছে।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী খায়রুল ইসলাম বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যম মারফত আজ জানতে পারলাম-‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০’র লিখিত পরীক্ষা এপ্রিলে দেশের বিভিন্ন জেলাগুলোতে নেওয়া হবে। জানার পর শিক্ষিত বেকার ছেলে, মেয়েরা দিশেহারা হয়ে গিয়েছি। অথচ পরীক্ষাগুলো ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে নেওয়া হবে-গত সপ্তাহেই দেশের শীষ গণমাধ্যমগুতে খবর আকারে প্রকাশিত হয়েছে। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই গতকাল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ জেলা পর্যায়ে এটি নেওয়ার জন্য প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। তারা আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন বলে আমরা খবরে জেনেছি।’
তিনি বলেছেন, ‘পরীক্ষাটি জেলা পর্যায়ে নেবার খবর আমাদের চরম হতাশ করেছে। জেলায় পরীক্ষা নেবার অতীত রেকর্ডগুলোও ভালো নয়। বিগত সময়গুলোতে জেলায় অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রক্সি বা বহিরাগতের মাধ্যমে প্রদানের সুবিধাদি নেওয়াসহ নানা অনিয়ম ঘটেছে। আমরা গণমাধ্যমেও দেখেছি।’
তারা লিখিত বক্তব্যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ‘জেলায় এই পরীক্ষাটি নেওয়া হলে ভয়াবহ দুর্নীতি হতে পারে। বিগত বছরগুলোতে, চলতি বছরও একাধিক পরীক্ষায় আমরা প্রমাণ পেয়েছি। তবে আমাদের বাংলাদেশের ইতিহাসে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ একসঙ্গে অতীতে কখনো হয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শত জন্মবার্ষিকীতে এমন নিয়োগ বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য পাওয়া। সরকারের শিক্ষিত বেকারদের সমস্যা দূর করতে অত্যন্ত প্রশংসাযোগ্য উদ্যোগ।’
ওএস।