কাতার বিশ্বকাপ: লাভের আশা করছে ‘অ্যাডিডাস’ ও ‘নাইকি’
কাতার বিশ্বকাপে ৩২ দলের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, তাদের মতো ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাডিডাস’ এবং ‘নাইকি’ ও আশা করছে তাদের লাভের অংশ বাড়তে পারে।
বিশ্বকাপ নিয়ে ফিফার অনুমান, অন্তত পক্ষে পাঁচ বিলিয়ন টিভি দর্শক খেলাগুলো দেখছেন। তাদের আয়োজনে বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চমানের ফুটবল প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এই প্রতিযোগিতাটিই হলো খেলাটির সামগ্রীগুলো উৎপাদনকারীদের জন্য প্রধান সুযোগ। তারা তাদের জার্সি, বুট ও অন্যান্য পণ্যগুলো দলগুলো এবং একক খেলোয়াড়দের জন্য তৈরি করছেন। সেগুলোর সবচেয়ে বেশি বিক্রির প্রত্যাশায় আছেন তারা বিশ্বকাপে।
গেল বিশ্বকাপ অ্যাডিডাসের মন্দা কেটেছে। তারা ২০১৮ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসরে তাদের ৬ শতাংশ শেয়ার হারিয়ে ফেলেছেন। অথচ খেলাটি হয়েছে একমাস জুড়ে। অ্যাডিডাসও ভাবতে পারেনি এমনটি ঘটবে। বিশ্বকাপ ব্যাপকভাবে জার্মান দলকে সহযোগিতা করেছে, একটি ‘অ্যাডিডাস দল’ হিসেবে তারা শুরুতে ক্রীড়া বাজারে ধাক্কাও দিতে স্বক্ষম হয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপটি জয় করেছে ফ্রান্স, একটি ‘নাইকি দল’। ফলে নাইকি তাদের শেয়ার ৪ শতাংশ বাড়াতে পেরেছে।
এই মাসের ৯ নভেম্বর নিয়মানুসারে বছরে চারবারের সম্মেলনগুলোর শেষটি করেছে অ্যাডিডাস। তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কেননা বিশ্বকাপ সামনে রয়েছে। তখন তাদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা আশা করছেন, বিশ্বকাপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলোর তারা প্রায় ৪শ ১৫ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করতে পারবেন। ফলে তাদের বাৎসরিক লাভের অতিরিক্ত ২ শতাংশ যুক্ত হতে পারে।
অ্যাডিডাসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বেশি বিক্রিত পণ্য হলো মেক্সিকোর জার্সি। তাদের সঙ্গে নাইকির কাছে মন্তব্য জানতে চাইলে তাদের কোনো কর্মকর্তা বিশ্বকাপে তাদের বিক্রি কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে সাড়া দেননি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসভিত্তিক ওয়েডবেশ সিকিউরিটিজ ইনকরপোরেশনের বিশ্লেষক টম নিকিজ বলেছেন, ‘অ্যাডিডাস ও নাইকি দুটি ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানেই পুরো ব্যবসা সম্রাজ্য প্রবলভাবে বিশ্বকাপ জুড়ে বেড়ে যায়। তাদের সবগুলো পণ্য বিক্রির মধ্যে দল এবং খেলোয়াড়ের জার্সিগুলোর বিক্রিই সবচেয়ে বাড়ে।’
এবারের বিশ্বকাপের মোট ১৩টি দলকে জার্সি প্রদান করেছে নাইকি। তাদের মধ্যে আছে ফুটবলের পরাশক্তি ব্রাজিল, ফ্রান্স। আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ফলে অ্যাডিডাসকে হারিয়ে তারা এবারের বিশ্বকাপের জার্সিতে নেতা হয়ে গিয়েছেন।
মোট ৭টি দল এবার এডিডাসের স্পন্সর করা জার্সি পরছে। তাদের মধ্যে আছে পরাশক্তি জার্মানি, স্পেন ও আর্জেন্টিনা। ‘পুমা’র জার্সি পরছে ছয়টি বিশ্বকাপ দেশ। ফলে এই ক্রীড়াসামগ্রী প্রতিষ্ঠানটি নতুন মাত্রা এবং ভারসাম্য নিয়ে এসেছে বিশ্বকাপে। নাইকি ও এডিডাসের জন্য তারা শঙ্কা হিসেবে দেখা গিয়েছেন।
গতকালের হিসেবে, পুরো টুনামেন্টের বিচারে নাইকির মোট বিক্রি প্রায় ১ শতাংশ বেড়েছে। আর অ্যাডিডাস ও পুমার আশার চেয়ে ৩.৮ এবং ৩.০ শতাংশ বিক্রি কমেছে। ক্রীড়া বাজিকরদের বিচারে, এবারের বিশ্বকাপ জয় করতে পারে ব্রাজিল।
ওএফএস/