দরিদ্রদের ওপর কর বৃদ্ধির সংস্কৃতি বন্ধের আহ্বান বিইএ’র
রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে বড় জনগোষ্ঠী অর্থাৎ দরিদ্র-নিম্নবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত-মধ্যবিত্ত মানুষের ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান চাপ প্রয়োগের সংস্কৃতি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি (বিইএ)।
একইসঙ্গে বিত্তবান-ধনিদের ওপর যুক্তিসঙ্গত চাপ প্রয়োগ দরকার বলে মন্তব্য করে এ সংগঠন।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের নেতৃত্বে কমিটির একটি প্রতিনিধি দল ‘২০২২-২৩ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়নের ভিত্তিনীতি: বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির প্রস্তাবনা’ শীর্ষক প্রস্তাব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে হস্তান্তর করার সময় এসব দাবি করা হয়।
সেগুনবাগিচায় এনবিআর সম্মেলন কক্ষে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম লিখিত প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।
আইনুল ইসলাম বলেন, ‘করোনায় উদ্ভূত বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে জাতীয় বাজেটের জন্য সম্পদ আহরণ করতে সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে ধনী ও বিত্ত-সম্পদশালী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান, যারা সম্পদ আয় ও মুনাফার অর্থমূল্য কম প্রদর্শনের মাধ্যমে সঠিক কর প্রদান করে না, তারা যেন সঠিক পরিমাণ কর প্রদান করেন তা শক্তভাবে নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাজেট প্রণয়ণের ক্ষেত্রে সরকারকে চারমাত্রিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ওপর জোর দিতে হবে। কারণ, অর্থনৈতিক মহামন্দা এবং কভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বের সব দেশই এখন অর্থনৈতিক-সামাজিক-শিক্ষাগত-স্বাস্থ্যগত-রাজনৈতিক মহাবিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের জিডিপি ও মাথাপিছু আয় বাড়লেও বৈষম্য-অসমতা এবং বহুমাত্রিক দারিদ্র্য কোনোভাইে দূর হবে না। কারণ কর্মবাজার ভীষণভাবে সংকুচিত ও বিপর্যস্ত।’
সমিতি আরও বলছে, কভিড-১৯ উদ্ভূত লকডাউন ও বিধি-নিষেধে নিঃস্ব, সর্বস্ব হারা, হতাশাগ্রস্ত, ভাগ্যনির্ভর মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে আয়-সম্পদ-স্বাস্থ্য-শিক্ষা বৈষম্য হ্রাসের যত পথ-পদ্ধতি আছে, তা প্রয়োগ করে সবার আগে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ভাইরাসপূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে হবে। এর জন্য আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটকে কোনোভাইে সংকোচনমূলক না করে বরং সম্প্রসারণশীল ও বৃহদাকারভাবে প্রণয়ন করতে হবে।
এ জন্য শুধু প্রয়োজন আয়-ধন-সম্পদের বণ্টনকে ন্যায্য করা, অর্থাৎ ধনীদের কাছ থেকে তা প্রবাহিত করতে হবে দরিদ্র, বিত্তহীন ও নিম্নবিত্ত মানুষের দিকে। রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে দরিদ্রদের ওপর প্রত্যক্ষ করের বোঝা না বাড়িয়ে ধনী ও বিত্তশালীদের ওপর কর আরোপ করতে হবে।
জেডএ/এমএমএ/