রংপুরে বাণিজ্যমন্ত্রী
লালফিতার দৌরাত্ম্যে অনেক কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, লালফিতার দৌরাত্ম্যে নিজেই অসহায় । লালফিতার দৌরাত্ম্য বড় বেশি। আমি নিজেও অসহায়ত্বে কিছুটা কাবু হয়ে পড়েছি। আমি নিজেও খুব হ্যাপি না। কারণ সারাটা জীবন কাজ করে বেরিয়েছি। সরকারের এই মন্ত্রীর চেয়ারে বসে মনে হয় এটা কবে বদলাবে। তবে আমরা চেষ্টা করছি।
শনিবার (১৯ দুপুরে রংপুরের আরডিআরএস’র বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে এক জাতীয় উন্নয়নে অঙ্গীকার শিক্ষা, শোভন কর্মসংস্থান, জেন্ডার সমতা শীর্ষক রংপুর সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে সিপিডি, সুজন ও ইউএনডিইএফ।
তিনি আরো বলেন, একটি চিনিকলও লাভজনক নয়। এই দেশে যে আখ হয় তা দিয়ে চিনিকল চালু রাখা সম্ভব নয়। এই খাতে শুধু লোকসান হচ্ছে। এ অবস্থায় চিনিকল শ্রমিকদের বাঁচাতে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে চিনিকলগুলোকে প্রয়োজনে বেসরকারিখাতে চিনি ছাড়া অন্য কিছু উৎপাদন নিয়ে ভাবতে হবে। এতে শ্রমিকরা বেকার থাকবে না লোকসান বন্ধ হবে। কিন্তু লালফিতার দৌরাত্ম্যে অনেক কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ সময় তিস্তা নদীর দুই পাশে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট নিয়ে রংপুর অঞ্চলের মানুষকে হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, তিস্তা নদী নিয়ে মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী খুব সিরিয়াস। আন্তর্জাতিক একটা ছোট ঝামেলা আছে এ কারণে বিলম্ব হচ্ছে। তবে এটা হলে নদীর দুই পাড়ে বিশাল অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এ জন্য আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে। সব কিছু ব্যালেন্স করে এটা করা হবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী নিজেই চাইছেন তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন হোক।
কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়ায় রংপুর অঞ্চল পিছিয়ে পড়ছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রংপুর অঞ্চলে ভারী শিল্প কলকারখানা নেই। বড় বড় কোম্পানিগুলো এখানে আসতে চায় না। কারণ উৎপাদন খরচ বেশি পড়বে। এর পেছনে যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিবহন খরচ, গ্যাস সংযোগ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তবে এ অঞ্চলের শ্রমিকরা অনেক পরিশ্রমী ও সুশৃঙ্খল। জাতীয় পর্যায়েও এর সুনাম রয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, এক সময় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অর্ধেক মানুষও আসত না। যাতায়াতে অনেক কষ্ট হতো, যাত্রী পাওয়া যেত না। কিন্তু এখন সৈয়দপুর বিমানবন্দরে দিনে ১৩-১৭টি ফ্লাইট ওঠানামা করছে। ঈদের সময়ে ২২টিরও বেশি হয়ে থাকে। আগামী এক বছরের মধ্যে সেখান থেকে প্রতিদিন অন্তত ৩০টি ফ্লাইট ওঠানামা করবে। ইতিমধ্যে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বিমানবন্দরের মূল ভবনটা হয়ে গেছে। লাউঞ্জ, ব্যাংক বুথসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও বেড়েছে। এখন এটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর। নেপাল ও ভুটানের ফ্লাইট নিয়ে কথা চলছে, এটিও চালু করা সম্ভব।
সেন্টার ফর ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রংপুর সিটি করর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
জিএমএ/এসআইএইচ