ট্যারিফ কমিশনের বাইরে দাম বাড়ালে ব্যবস্থা: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ট্যারিফ কমিশনের বাইরে দাম বাড়ালে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় রংপুর সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
রংপুরে ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপনের প্রকল্প নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেল, ডাল ও চিনির দাম অনেক বেড়েছে। ৬শ’ টাকা টনের ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ১৩শ’ ডলারে উঠেছে। একইভাবে ডাল চিনির দাম বেড়েছে। আমাদের ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে প্রতি বছর ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টন, যার ৯০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ১০ শতাংশ তেল দেশে উৎপাদিত সরিষা থেকে আসে।
ব্যবসায়ীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক অসৎ ব্যবসায়ী সুযোগ পেলেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। তাই এখন থেকে ট্যারিফ কমিশন নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে ভোজ্যতেল, ডাল ও চিনি বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য জেলা প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করছি। এসব পণ্য বিদেশ থেকে আমদানির পর ট্যারিফ কমিশন বসে দাম নির্ধারণ করে দেয়। তারপরও কিছু অসৎ ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার লোভে দাম বাড়িয়ে দেয়। এজন্য জেলায় জেলায় দাম মনিটরিংয়ের জন্য ডিসিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ভারত ও মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এবার পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু কৃষকরা বলছেন, তারা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। প্রতি কেজি পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ পড়ে ১৪ টাকা, আর বিক্রি করছে ১৬ থেকে ১৮ টাকা। সে কারণে বিদেশ থেকে আপাতত পেঁয়াজ আমদানি করতে নিষেধ করেছেন কৃষকরা।
টিপু মুনশি বলেন, দেশে পর্যাপ্ত আলু উৎপাদন হচ্ছে। আলুর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে রপ্তানি বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশে রপ্তানি দিন দিন বাড়ছে। এ বছর ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আলু রপ্তানি থেকে আয় এতে অবদান রাখবে। সরকার আলু উৎপাদন ব্যবহার ও রপ্তানির বিষয়ে সজাগ রয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রংপুরে একটি বিশ্বমানের ক্যানসার হাসপাতাল উদ্যোগে নিয়েছি। অলাভজনকভাবে পরিচালিত হবে রংপুর অপু মুনশি বেসরকারি ক্যান্সার হাসপাতাল। অগ্রাধিকার পাবেন নারীরা। এ জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে ২০ কোটি টাকা দেব। তবে শুধু টাকা দিলেই হবে না, হাসপাতালকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সব স্তরের মানুষ যাতে সাশ্রয়ী মূল্যে ক্যান্সারের চিকিৎসা পান সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান ক্লাব উত্তরার জুলহাস আলম, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান ও রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশের ডিসি অপরাধ মারুফ আহম্মেদ।
আরএ/