রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

যে কৌশলে ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকা এস আলমের পকেটে

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই ব্যাংকগুলোর যেন চিরচেনা রূপ পাল্টে যেতে শুরু করেছে। একের পর এক ব্যাংকের অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর সামনে আসতে শুরু করেছে। সম্প্রতি সময়ে সব থেকে বেশি আলোচনায় রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। যার মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ।

এবার বেরিয়ে এসেছে কীভাবে সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ। এই অর্থ ব্যাংকটির মোট ঋণের এক–তৃতীয়াংশ। এই টাকা বের করতে মানা হয়নি কোনো নিয়মকানুন।

ঋণের যে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, ব্যাংক থেকে পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলেই মনে করেন কর্মকর্তারা। জানা গেছে, এই টাকা বের করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে।

ঋণ হিসেবে অর্থ বের করতে তৈরি করা হয় নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান। আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যেভাবে টাকা বের করেছিলেন, অনেকটা একই কায়দায় ইসলামী ব্যাংক থেকেও অর্থ বের করা হয়। এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধের উপক্রম, আমানতকারীরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।

পি কে হালদার ছিলেন এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন আভিভা ফাইন্যান্স ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

এদিকে ইসলামী ব্যাংক থেকে পাচার হওয়া টাকা এখন আদায় করা যাচ্ছে না, ফলে ব্যাংকটি তারল্যসংকটে ভুগছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকে চাহিদামতো তারল্য জমা রাখতে না পারায় প্রতিদিন জরিমানা দিচ্ছে। আবার একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদ্য সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নিজের বিশেষ ক্ষমতাবলে ‘টাকা ছাপিয়ে’ দেড় বছর ধরে ব্যাংকটিকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু ব্যাংকটির খারাপ অবস্থার জন্য যারা দায়ী, তাদের কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এস আলম গ্রুপ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর ইসলামী ব্যাংকে প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে। এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগই সাইফুল আলমের নিজের এলাকা পটিয়া উপজেলার। ফলে ব্যাংকটির অর্ধেক কর্মকর্তাই এখন পটিয়ার। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই ২০১৭ সালের আগে নিয়োগ পাওয়া পুরোনো কর্মকর্তারা আন্দোলন শুরু করেছেন ব্যাংকটিকে ‘এস আলম ও পটিয়ামুক্ত’ করতে। এর মধ্যে বিবদমান দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলি বর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হয়েছেন। এই পদে তার নিয়োগসংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হওয়ার আগে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যাংকটি খেয়ে ফেলার জন্য এস আলম গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তারা সেই কাজই করেছে, ব্যাংকটি ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই ব্যাংকের টাকা ডলার হয়ে বিদেশে চলে গেছে। এখন এস আলম গ্রুপ ও যাদের নামে ঋণ বের হয়েছে, তাদের সব সম্পদ জব্দ করে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এতে ঋণের এক-তৃতীয়াংশ টাকাও আদায় হবে কি না, সন্দেহ আছে বলেও জানান তিনি।

এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ধীরে ধীরে শেয়ার ছেড়ে দেয় ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি), দুবাই ইসলামী ব্যাংক, আল-রাজি গ্রুপ, কুয়েতের সরকারি ব্যাংক কুয়েত ফাইন্যান্স হাউস, সৌদি কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সিসহ বেশির ভাগ উদ্যোক্তা ও সাধারণ শেয়ারধারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়া স্থানীয় জামায়াত–সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ইবনে সিনা, ইসলামিক সেন্টারসহ অনেককে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ছেড়ে দিতে হয়।

আটকা পড়ে আছে যেসব ঋণ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার আগে বিদেশিদের শেয়ার ছিল ৫২ শতাংশের মতো, যা এখন ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ যখন ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তখন এটিতে এস আলমের তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ ছিল তিন হাজার ছয় কোটি টাকা। চট্টগ্রামে ব্যাংকটির খাতুনগঞ্জ শাখার গ্রাহক ছিলেন তিনি। তখন ব্যাংকের মোট ঋণ ছিল ৬১ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা আর আমানত ছিল ৬৮ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। কর্মকর্তা ছিল ১০ হাজারের কম।

নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর আমানত বাড়ানোর লক্ষ্যে নতুন নতুন শাখা খুলে পটিয়ার লোকদের নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়। ফলে সারা দেশে ব্যাংকটির শাখা এখন ৩৯৫টি। এর বাইরে রয়েছে ২৫০টি উপশাখা। ২০২৩ সাল শেষে ইসলামী ব্যাংকে আমানত বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা ও ঋণ ১ লাখ ৬০ হাজার ২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ আমানতের চেয়ে বেশি টাকা ঋণ হিসেবে বের করে দিয়েছে ব্যাংকটি। বাড়তি এই টাকা এসেছে মূলত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে।

ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণমূলক মূলধন ১০ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। ফলে একটি গ্রুপকে ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ ফান্ডেড ১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা ও নন–ফান্ডেড ঋণ ১ হাজার ৪২ কোটি টাকা ঋণ দিতে পারে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে একটি গ্রুপ ঋণ পেতে পারে ২ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যাংকঋণের টাকা পাচার করতে তাই এস আলম গ্রুপ একাধিক গ্রুপ তৈরি করেছে, ভিন্ন ভিন্ন নামে প্রতিষ্ঠান খুলেছে।

প্রাপ্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এস আলম নাম যুক্ত আছে ইসলামী ব্যাংক থেকে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণই ১৪ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। আর সাইফুল আলমের মেয়ের স্বামী বেলাল আহমেদের ইউনিটেক্সের ঋণ ৪৫৪ কোটি টাকা। এর বাইরে এস আলম–সংশ্লিষ্ট ঋণের পরিমাণ ৩২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এসব ঋণ ছড়িয়ে আছে চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও রাজধানীর বিভিন্ন শাখায়। এছাড়া রাজশাহীর নাবিল গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ৩ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা।

নাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি সৎভাবে ব্যবসা করি। অন্য ব্যাংকে আমার ঋণে কোনো সমস্যা নেই। ইসলামী ব্যাংকের ঋণে আমার কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তবে আমার নামে যেসব ঋণ আছে, আমি তা শোধ করে দেব। বছরে আমার ৩০ হাজার কোটি টাকার ভোগ্যপণ্য কেনাবেচা হয়। আমার গ্রুপে ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের ছেলে। ব্যাংকের সার্বিক বিষয়ে জানতে তাকে ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে ফোন করা হলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ইসলামী ব্যাংকের একজন পরিচালক সৈয়দ আবু আসাদ গণমাধ্যমকে বলেন, এখন ব্যাংকের কেউ ফোন ধরছেন না। আমি কিছু জানতেও পারছি না। আমি অনলাইনে সভায় অংশ নিই। মতামত আমি দিয়ে থাকি। সব সময় তা গ্রহণ হয়নি। ঋণ কে কত টাকা নিয়েছে, এ নিয়ে আমি কিছুই জানি না।

গত সোমবার ইসলামী ব্যাংকের ‘বৈষম্যবিরোধী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষাকারী ব্যাংকার সমাজের’ সমন্বয়ক আবু ওয়ালিদ চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ৬৫ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। ১০ হাজারের বেশি জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাদের অনেকের যোগ্যতা নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়, ব্যাংক থেকে এখনো নানাভাবে অর্থ বের করার চেষ্টা করে যাচ্ছে এস আলম গ্রুপ। পাশাপাশি গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট ঋণের নথিপত্র সরানো ও তথ্য-উপাত্ত মুছে ফেলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন কিছু কর্মকর্তা। সে কারণে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ দ্রুত ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন এবং এস আলমকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান আবু ওয়ালিদ চৌধুরী।

আরো বলা হয়, পটিয়া এলাকার ব্যাংকারদের পাশাপাশি গতকালও ব্যাংকে যাননি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনিরুল মওলা, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ ও আলতাফ হুসাইন, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিন, মিফতাহ উদ্দিনসহ এস আলমপন্থী হিসেবে পরিচিত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। তাদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন অন্য কর্মকর্তারা।

ব্যাংকটির শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধানদের প্রায় সবাই চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আসা কিংবা চট্টগ্রামের বিভিন্ন শাখার দায়িত্বে ছিলেন। এমনকি সাইফুল আলম তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকেও ব্যাংকটির ডিএমডি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন সাতটি ব্যাংকের চলতি হিসাবে টাকা না থাকার পরও সেগুলো কীভাবে চলছে তা জানতে চাইলে গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক সরাসরি কোনো জবাব দেননি। তিনি বলেন, এই সবকিছু এখন নির্ভর করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর। তারা যে নির্দেশনা দেবে, সেভাবেই চলবে।

Header Ad
Header Ad

নতুন স্বরাষ্ট্রসচিব ড. নাসিমুল গনি

ড. নাসিমুল গনি। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রোববার (২২ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জামিলা শবনম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পদায়নের এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।

ড. নাসিমুল গনি ১৯৮২ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের একজন সৎ, দক্ষ এবং চৌকস কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। প্রখ্যাত সাংবাদিক ওসমান গণির পুত্র ড. গনি মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি জামালপুরের জেলা প্রশাসক এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ইরাক ও জর্ডানে বিদেশি মিশনে কাজ করেছেন। ড. নাসিমুল গনি বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং নিপোর্টের মহাপরিচালক, জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার মো. জমির উদ্দিন সরকারের একান্ত সচিব এবং মৎস ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

রাষ্ট্রপতির একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক হিসেবে সফলতার সঙ্গে কাজ করেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনকালে দেশের স্কুল, কলেজ এবং মাদরাসার ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় আসার পর তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।

Header Ad
Header Ad

আনন্দবাজারের প্রতিবেদন

গুম করে বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা!

ছবি কোলাজ: ঢাকাপ্রকাশ

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসের বরাত দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশে অপরাধে অভিযুক্ত অনেককে গ্রেপ্তার না করে গুম করে দেয়া হতো। ক্ষমতায় আসার পর এই অভিযোগ তুলেছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।

এবার তাদের তদন্ত কমিশন সেই সব গুমের ঘটনায় প্রতিবেশী ভারতের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে।

শেখ হাসিনা সরকারের আমলের বিভিন্ন অভিযোগের সত্য উদ্‌ঘাটনের উদ্দেশ্যে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে বাংলাদেশ। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশন সম্প্রতি একটি রিপোর্ট তুলে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের হাতে। হাসিনার আমলে গুমের ঘটনাগুলিতে ভারতের যোগের কথাই শুধু নয়, ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এখনো কিছু বাংলাদেশি বন্দি ভারতের জেলে আটকে থাকতে পারেন। দেশের আইন মহলে এই ধরনের কথা চালু আছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিশন।

কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে এখনও কিছু বাংলাদেশি বন্দি আটকে থাকতে পারেন। দেশের বিদেশ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আমাদের প্রস্তাব, তাদের চিহ্নিত করা হোক। কারণ, আমাদের পক্ষে বাংলাদেশের সীমানার বাইরে কিছু করা সম্ভব নয়। আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, ভারতের সঙ্গে হাসিনার ‘ঘনিষ্ঠতা’ প্রথম থেকেই ভাল চোখে দেখছে না ইউনূসের সরকার।

তাদের তদন্ত কমিশন এ-ও দাবি করেছে, দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় করা হয়ে থাকতে পারে। সেই সব বন্দিদের সম্ভাব্য ভাগ্য সম্পর্কেও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে। এই দাবির প্রেক্ষিতে দু’টি মামলার কথা উল্লেখ করেছে কমিশন।

প্রথমত বলা হয়েছে সুখরঞ্জন বালির কথা, যাকে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। পরে তাকে ভারতের জেলে পাওয়া যায়।

দ্বিতীয়ত, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যার অভিজ্ঞতা থেকেও ভারত-বাংলাদেশ যোগের প্রমাণ মেলে বলে দাবি। ২০১৫ সালে ঢাকা থেকে সালাউদ্দিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, পরে সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন তিনি। ড. ইউনূসের কাছে গত সপ্তাহে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে বাংলাদেশের এই কমিশন।

রিপোর্টের শিরোনাম ছিল ‘সত্য উদ্ঘাটন’। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, হাসিনার আমলে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষকে গুম করা হয়েছিল। হাসিনা এবং তার একাধিক উপদেষ্টা, মন্ত্রীদের সরাসরি যোগ ছিল সে সব ঘটনায়। মূলত বাংলাদেশের এলিট ফোর্স- র‌্যাবের (র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন) মাধ্যমে গুম করানো হতো বলে দাবি করেছে কমিশন।

পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় মোট ১৬৭৬টি গুমের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে ৭৫৮টি অভিযোগের তদন্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২৭ শতাংশ মানুষকেই আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে যারা ফিরেছেন, তাদের পুলিশের খাতায় ‘গ্রেপ্তার’ হিসাবে দেখানো হয়েছিল। ঢাকা এবং তার বাইরে মোট আটটি গোপন বন্দিশালাও খুঁজে পেয়েছে কমিশন।

Header Ad
Header Ad

বিরামপুরে সাদ পন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

বিরামপুরে সাদ পন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে সন্ত্রাসীদের হামলায় চারজন নিহতের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সাদপন্থীদের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে দিনাজপুরের বিরামপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে তাবলীগ জামায়াতের উদ্যোগে আলেম ওলামা ও তাবলীগের সাথীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি বিরামপুর আলমি শুরা মারকায থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় ঢাকা মোড়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আলমি শুরা মারকায শুরা সদস্য মাওলানা আমিরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিরামপুর ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুল হাকিম। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি ফকরুল ইসলাম, মুফতি মোস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা আব্দুর রউফ, মুফতি নাজিমুদ্দিন, মাওলানা এমদাদুল হকসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ওলামাগণ।

সমাবেশে বক্তারা বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের মর্মান্তিক ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে সন্ত্রাসীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান। দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা হাফিজুর ইসলাম।

পরে সমাবেশ শেষে বিরামপুর আলমি শুরা মারকাযের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রদান করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নতুন স্বরাষ্ট্রসচিব ড. নাসিমুল গনি
গুম করে বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা!
বিরামপুরে সাদ পন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
নওগাঁয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
আব্রাম না থাকলে তাকে আমার যোগ্য বলেই মনে করতাম না: অপু বিশ্বাস
কাবাঘরে ‌‘জয় বাংলা’ স্লোগান, পরিচয় জানা গেল সেই যুবকের
গাইবান্ধায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার
ডিসেম্বরেই বিশ্বব্যাংক ও এডিবির ১১০০ মিলিয়ন ডলার পাবে বাংলাদেশ
বঙ্গোপসাগর বড় বড় শক্তির নজরে পড়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর নাম পরিবর্তন হয়ে যা হলো
ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীদের হামলার প্রতিবাদে নওগাঁয় মানববন্ধন
আমনের ভরা মৌসুমেও বাড়তি চালের দাম, কারসাজিতে কারা?
গোবিন্দগঞ্জে ট্রাকচাপায় নারীসহ ২ জন নিহত
বুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তিন আসামি ২ দিনের রিমান্ডে
আবারও বৃষ্টির আভাস, তাপমাত্রা কমে বাড়তে পারে শীত
উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক
সুরের জাদুতে ঢাকার মঞ্চ মাতালেন রাহাত ফতেহ আলী খান
আনিসুল হকের তিন ব্যাংকে ২১ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে দুদক
নরসিংদীতে ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশের বিষয়ে নিশ্চিত নয় ট্রাইব্যুনাল