রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪ | ২৫ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

যে কৌশলে ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকা এস আলমের পকেটে

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই ব্যাংকগুলোর যেন চিরচেনা রূপ পাল্টে যেতে শুরু করেছে। একের পর এক ব্যাংকের অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর সামনে আসতে শুরু করেছে। সম্প্রতি সময়ে সব থেকে বেশি আলোচনায় রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। যার মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ।

এবার বেরিয়ে এসেছে কীভাবে সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ। এই অর্থ ব্যাংকটির মোট ঋণের এক–তৃতীয়াংশ। এই টাকা বের করতে মানা হয়নি কোনো নিয়মকানুন।

ঋণের যে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, ব্যাংক থেকে পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলেই মনে করেন কর্মকর্তারা। জানা গেছে, এই টাকা বের করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে।

ঋণ হিসেবে অর্থ বের করতে তৈরি করা হয় নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান। আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যেভাবে টাকা বের করেছিলেন, অনেকটা একই কায়দায় ইসলামী ব্যাংক থেকেও অর্থ বের করা হয়। এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধের উপক্রম, আমানতকারীরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।

পি কে হালদার ছিলেন এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন আভিভা ফাইন্যান্স ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

এদিকে ইসলামী ব্যাংক থেকে পাচার হওয়া টাকা এখন আদায় করা যাচ্ছে না, ফলে ব্যাংকটি তারল্যসংকটে ভুগছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকে চাহিদামতো তারল্য জমা রাখতে না পারায় প্রতিদিন জরিমানা দিচ্ছে। আবার একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদ্য সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নিজের বিশেষ ক্ষমতাবলে ‘টাকা ছাপিয়ে’ দেড় বছর ধরে ব্যাংকটিকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু ব্যাংকটির খারাপ অবস্থার জন্য যারা দায়ী, তাদের কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এস আলম গ্রুপ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর ইসলামী ব্যাংকে প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে। এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগই সাইফুল আলমের নিজের এলাকা পটিয়া উপজেলার। ফলে ব্যাংকটির অর্ধেক কর্মকর্তাই এখন পটিয়ার। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই ২০১৭ সালের আগে নিয়োগ পাওয়া পুরোনো কর্মকর্তারা আন্দোলন শুরু করেছেন ব্যাংকটিকে ‘এস আলম ও পটিয়ামুক্ত’ করতে। এর মধ্যে বিবদমান দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলি বর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হয়েছেন। এই পদে তার নিয়োগসংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হওয়ার আগে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যাংকটি খেয়ে ফেলার জন্য এস আলম গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তারা সেই কাজই করেছে, ব্যাংকটি ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই ব্যাংকের টাকা ডলার হয়ে বিদেশে চলে গেছে। এখন এস আলম গ্রুপ ও যাদের নামে ঋণ বের হয়েছে, তাদের সব সম্পদ জব্দ করে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এতে ঋণের এক-তৃতীয়াংশ টাকাও আদায় হবে কি না, সন্দেহ আছে বলেও জানান তিনি।

এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ধীরে ধীরে শেয়ার ছেড়ে দেয় ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি), দুবাই ইসলামী ব্যাংক, আল-রাজি গ্রুপ, কুয়েতের সরকারি ব্যাংক কুয়েত ফাইন্যান্স হাউস, সৌদি কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সিসহ বেশির ভাগ উদ্যোক্তা ও সাধারণ শেয়ারধারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়া স্থানীয় জামায়াত–সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ইবনে সিনা, ইসলামিক সেন্টারসহ অনেককে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ছেড়ে দিতে হয়।

আটকা পড়ে আছে যেসব ঋণ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার আগে বিদেশিদের শেয়ার ছিল ৫২ শতাংশের মতো, যা এখন ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ যখন ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তখন এটিতে এস আলমের তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ ছিল তিন হাজার ছয় কোটি টাকা। চট্টগ্রামে ব্যাংকটির খাতুনগঞ্জ শাখার গ্রাহক ছিলেন তিনি। তখন ব্যাংকের মোট ঋণ ছিল ৬১ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা আর আমানত ছিল ৬৮ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। কর্মকর্তা ছিল ১০ হাজারের কম।

নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর আমানত বাড়ানোর লক্ষ্যে নতুন নতুন শাখা খুলে পটিয়ার লোকদের নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়। ফলে সারা দেশে ব্যাংকটির শাখা এখন ৩৯৫টি। এর বাইরে রয়েছে ২৫০টি উপশাখা। ২০২৩ সাল শেষে ইসলামী ব্যাংকে আমানত বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা ও ঋণ ১ লাখ ৬০ হাজার ২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ আমানতের চেয়ে বেশি টাকা ঋণ হিসেবে বের করে দিয়েছে ব্যাংকটি। বাড়তি এই টাকা এসেছে মূলত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে।

ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণমূলক মূলধন ১০ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। ফলে একটি গ্রুপকে ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ ফান্ডেড ১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা ও নন–ফান্ডেড ঋণ ১ হাজার ৪২ কোটি টাকা ঋণ দিতে পারে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে একটি গ্রুপ ঋণ পেতে পারে ২ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যাংকঋণের টাকা পাচার করতে তাই এস আলম গ্রুপ একাধিক গ্রুপ তৈরি করেছে, ভিন্ন ভিন্ন নামে প্রতিষ্ঠান খুলেছে।

প্রাপ্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এস আলম নাম যুক্ত আছে ইসলামী ব্যাংক থেকে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণই ১৪ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। আর সাইফুল আলমের মেয়ের স্বামী বেলাল আহমেদের ইউনিটেক্সের ঋণ ৪৫৪ কোটি টাকা। এর বাইরে এস আলম–সংশ্লিষ্ট ঋণের পরিমাণ ৩২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এসব ঋণ ছড়িয়ে আছে চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও রাজধানীর বিভিন্ন শাখায়। এছাড়া রাজশাহীর নাবিল গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ৩ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা।

নাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি সৎভাবে ব্যবসা করি। অন্য ব্যাংকে আমার ঋণে কোনো সমস্যা নেই। ইসলামী ব্যাংকের ঋণে আমার কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তবে আমার নামে যেসব ঋণ আছে, আমি তা শোধ করে দেব। বছরে আমার ৩০ হাজার কোটি টাকার ভোগ্যপণ্য কেনাবেচা হয়। আমার গ্রুপে ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের ছেলে। ব্যাংকের সার্বিক বিষয়ে জানতে তাকে ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে ফোন করা হলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ইসলামী ব্যাংকের একজন পরিচালক সৈয়দ আবু আসাদ গণমাধ্যমকে বলেন, এখন ব্যাংকের কেউ ফোন ধরছেন না। আমি কিছু জানতেও পারছি না। আমি অনলাইনে সভায় অংশ নিই। মতামত আমি দিয়ে থাকি। সব সময় তা গ্রহণ হয়নি। ঋণ কে কত টাকা নিয়েছে, এ নিয়ে আমি কিছুই জানি না।

গত সোমবার ইসলামী ব্যাংকের ‘বৈষম্যবিরোধী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষাকারী ব্যাংকার সমাজের’ সমন্বয়ক আবু ওয়ালিদ চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ৬৫ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। ১০ হাজারের বেশি জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাদের অনেকের যোগ্যতা নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়, ব্যাংক থেকে এখনো নানাভাবে অর্থ বের করার চেষ্টা করে যাচ্ছে এস আলম গ্রুপ। পাশাপাশি গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট ঋণের নথিপত্র সরানো ও তথ্য-উপাত্ত মুছে ফেলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন কিছু কর্মকর্তা। সে কারণে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ দ্রুত ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন এবং এস আলমকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান আবু ওয়ালিদ চৌধুরী।

আরো বলা হয়, পটিয়া এলাকার ব্যাংকারদের পাশাপাশি গতকালও ব্যাংকে যাননি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনিরুল মওলা, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ ও আলতাফ হুসাইন, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিন, মিফতাহ উদ্দিনসহ এস আলমপন্থী হিসেবে পরিচিত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। তাদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন অন্য কর্মকর্তারা।

ব্যাংকটির শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধানদের প্রায় সবাই চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আসা কিংবা চট্টগ্রামের বিভিন্ন শাখার দায়িত্বে ছিলেন। এমনকি সাইফুল আলম তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকেও ব্যাংকটির ডিএমডি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন সাতটি ব্যাংকের চলতি হিসাবে টাকা না থাকার পরও সেগুলো কীভাবে চলছে তা জানতে চাইলে গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক সরাসরি কোনো জবাব দেননি। তিনি বলেন, এই সবকিছু এখন নির্ভর করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর। তারা যে নির্দেশনা দেবে, সেভাবেই চলবে।

Header Ad

ট্রাম্পের ছবি নিয়ে হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নকারী ১০ জন গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পোস্টার নিয়ে শেখ হাসনিার নির্দেশে আওয়ামী লীগের মিছিলের পরিকল্পনার ভাইরাল হওয়া কথিত অডিও ক্লিপের নির্দেশনা বাস্তবায়নকারীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ আলামত উদ্ধার করা হয়।

রোববার (১০ নভেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপে তার দলের নেতাকর্মীদের দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের ছবি ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ব্যবহার করে অবৈধ মিছিল সমাবেশের মাধ্যমে সেই ছবি ও প্ল্যাকার্ড ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার নির্দেশ দেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেগুলো ভাঙচুর ও অবমাননার ফুটেজ সংগ্রহের নির্দেশনা দেন।

তালেবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বিনষ্টের অপচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা এ অপতৎপরতার পরিকল্পনা করেছেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এ পর্যন্ত কুচক্রী মহলের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ উসকানিমূলক পোস্টার, ছবিসহ প্ল্যাকার্ড ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।

ডিএমপি আরও জানায়, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী মহলের যেকোনো চক্রান্ত রুখে দেওয়ার জন্য তৎপর রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এসব অপকর্মের উস্কানিদাতা, অর্থ যোগানদাতা ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Header Ad

গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় নিখোঁজ মুনতাহার মরদেহ মিলল পুকুরে

ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের কানাইঘাট থেকে নিখোঁজের সাত দিন পর শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের (৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় বাড়ির পাশের পুকুরে তার মরদেহ পাওয়া গেছে।

রোববার (১০ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে মুনতাহার নিজ বাড়ির পুকুরে তার মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। মুনতাহা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল গ্রামের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।

কানাইঘাট থানার ওসি মো. আব্দুল আওয়াল জানান, শিশুটির মরদেহ দেখে মনে হচ্ছে তাকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। শিশুটির গলায় রশি পেঁচানো ছিল। শরীরে ক্ষতচিহ্নও আছে।

মুনতাহার বাবা দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় কানাইঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন।

এর আগে, রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে মুনতাহাকে নিয়ে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরেন তার বাবা। পরে শিশুটি প্রতিদিনের মতো আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। বিকেল ৩টার পরও বাড়ি না ফেরায় পরিবার থেকে মুনতাহাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।

Header Ad

আফগানিস্তানকে হারিয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

একই মাঠের একই উইকেটে খেলা। খেলার চিত্রও ছিল প্রায় একইরকম। শুধু বদলে গেল দুই দলের অবস্থান। শারজাহতে দিন আর রাতের পার্থক্য প্রথম ম্যাচে টের পেয়েছিল বাংলাদেশ, এবার সেই তেতো অভিজ্ঞতা হলো আফগানিস্তানেরও। সিরিজেও তাই ফিরে এলো সমতা।

শারাজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে রোববার আফগানদের ৬৮ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। ২৫৩ রানের লক্ষ্যে ৪৩.৩ ওভারে ১৮৪ রানে গুটিয়ে যায় আফগান ইনিংস।

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা ৭ ওয়ানডেতে এটিই বাংলাদেশের প্রথম জয়।

বিজয়ী দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন শান্ত। বাংলাদেশের ১৪৯তম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া জাকের ২৭ বলে ৩ ছক্কা ও ১ চারে ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। ওপেনিংয়ে সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান।

৮.৩ ওভারে ১ মেডেনসহ ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন দলে ফেরা নাসুম আহমেদ। দুটি করে শিকার ধরেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমান, একটি করে তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলাম।

আফগান ইনিংসে চতুর্থ ওভারে তাসকিন আহমেদ প্রথম আঘাত হানার পর ভালো বোলিং করেও মিলছিল না উইকেটের দেখা। বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই ব্রেক থ্রু এনে দেন নাসুম আহমেদ। স্কয়ার লেগে বৃত্তের অনেকটা ভেতরে দাঁড়ানো মিরাজ দারুণভাবে লাফিয়ে চমৎকার ক্যাচ নেন। ৫১ বলে ৫ চারে ৩৯ রান করে ফেরেন সেদিকউল্লাহ আটাল। ভাঙে ৫২ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি।

এরপর হাশমতউল্লাহ শহিদি ও রহমত শাহ মিলে যোগ করেন ৭৭ বলে ৪৮। মোস্তাফিজুর রহমানকে পুল করতে গিয়ে ডিপ ফাইন লেগে শরিফুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হাশমতউল্লাহ, ৪০ বলে ১৭ রান করে।

পরের ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে রানের খাতা খুলতে দেননি নাসুম আহমেদ। একই ওভারে রান আউট হন রহমত। আফগান ইনিংসে ৭৬ বলে ৫ চারে সর্বোচ্চ ৫২ রান এই টপ অর্ডারের।

ষষ্ঠ উইকেটে মোহাম্মদ নবি ও গুলবাদিন নাইব যোগ করেন ৪১ বলে ৪৪। শরিফুল ইসলামের করা বলে এক্সট্রা কাভারে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪ চার ও ১ ছক্কায় ২৫ বলে ২৬ রান করা নাইব।

পরের ওভারে নবিকে (২৫ বলে ২৬) ফেরান মিরাজ। খারোতের উইকেটও যায় মিরাজের ঝুলিতে। রশিদ খানকে তুলে নেন মুস্তাফিজ। আর গজনফরকে বোল্ড করে তুলির শেষ আঁচড় টানেন নাসুম।

এর আগে ব্যাট হাতে বাংলাদেশের ভালো শুরু পান স্বীকৃত ব্যাটারদের প্রায় সকলেই। কিন্তু ফিফটি করতে পারেন কেবল নাজমুল হোসেন শান্ত। শেষ দিকে কিছুটা প্রত্যাশার দাবি মেটান অভিষিক্ত জাকের আলি। তাতে লড়াইয়ের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।

টসে জিতে ব্যাটে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হতে হতেও হয়নি। ২৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তানজিদ ফেরেন আল্লাহ মোহাম্মদ গজনফরকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ১৭ বলে ২২ রান করে।

দ্বিতীয় উইকেটে ৯৩ বলে ৭১ রানের জুটি গড়েন সৌম্য সরকার ও শান্ত। সৌম্যকে এলবিডব্লিউ করে জুটি ভাঙেন রশিদ খান। ভিডিও রিপ্লেতে বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বলটি লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছে। রিভিউ নিলে ফিরতে হতো না সৌম্যকে। নন স্ট্রাইক প্রান্তে থেকেও ব্যাপারটা ধরতে পারেননি শান্ত!

তৃতীয় উইকেটে আরেকটি ফিফটি জুটিতে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক। ৮৩ বলে ৫৩ রানের জুটি গড়ে মিরাজ রশিদের বলে বোল্ড হন ৩৩ বলে ২২ রান করে।


তাওহীদ হৃদয় (১৬ বলে ১১) আউট হন থিতু হয়ে। পরপরই ফেরেন শান্ত। ১১৯ বলে ৭৬ রানের ম্যাচসেরা ইনিংসটি অধিনায়ক সাজান ৬ চার ও ১ ছক্কায়।


খারোতের একই ওভারে ফেরেন মাহমুদউল্লাহও (৩)।

সপ্তম উইকেটে ৪১ বলে ৪৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন অভিষিক্ত জাকের আলি ও রিশাদ হোসেনের জায়গায় দলে ফেরা নাসুম আহমেদ। ২ ছয় ও ১ চারে ২৪ বলে ২৬ রান করেন নাসুম। শেষটা টানেন জাকের।

খারাতে ৮ ওভার বোলিং করে ২৮ রানে নেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন গজনফর ও রশিদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৫২/৭ (তানজিদ ২২, সৌম্য ৩৫, শান্ত ৭৬, মিরাজ ২২, হৃদয় ১১, মাহমুদউল্লাহ ৩, জাকের ৩৭*, নাসুম ২৫, তাসকিন ২*; ফারুকি ৭-০-৬৯-০, গাজানফার ১০-০৩৫-২, নাবি ১০-০-৪৯-০, নাইব ২-০-১০-০, ওমারজাই ৩-০-২৩-০, রাশিদ ১০-০-৩২-২, খারোটে ৮-০-২৮-৩)

আফগানিস্তান: ৪৩.৩ ওভারে ১৮৪ (গুরবাজ ২, সেদিকউল্লাহ ৩৯, রেহমাত ৫২, শাহিদি ০, নাইব ২৬, নাবি ১৭, রাশিদ ১৪, খারোটে ৪, গাজানফার ১, ফারুকি ০*; শরিফুল ৮-০-৪৫-১, তাসকিন ৬-১-২৯-১, মিরাজ ১০-১-৩৭-২, মুস্তাফিজ ৮-০-৩৭-২, নাসুম ৮.৩-০-২৮-৩, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-৭-০)

ফল: বাংলাদেশ ৬৮ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: নাজমুল হোসেন শান্ত।
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে ২ ম্যাচ শেষে ১-১ সমতা।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ট্রাম্পের ছবি নিয়ে হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নকারী ১০ জন গ্রেপ্তার
গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় নিখোঁজ মুনতাহার মরদেহ মিলল পুকুরে
আফগানিস্তানকে হারিয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
আজ শহীদ নূর হোসেন দিবস
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১ দিনে আরও ৪৪ ফিলিস্তিনি নিহত
আ.লীগের কর্মসূচি ঠেকাতে রাতেই জিরো পয়েন্ট দখলে নিল ছাত্র-জনতা
গুম কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা
রিমান্ডে অসুস্থ জুনাইদ আহমেদ পলক, হাসপাতালে ভর্তি
বাংলাদেশিদের জন্য ভারতে লালগালিচা বিছিয়ে রেখেছেন তিনি: অমিত শাহ
আ.লীগ প্রতিরোধে একই স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের পাল্টা কর্মসূচি
ষড়যন্ত্র রুখতে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান
ডেঙ্গুতে একদিনে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৩৪
আফগানিস্তানকে ২৫৩ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ
গাইবান্ধায় জিইউকে রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ উদ্বোধন
তারেক রহমানের ৩১ দফা অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালিত হবে: টুকু
তৌহিদ আফ্রিদির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে মুখ খুললেন দীঘি
‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হাতে নিহত ৮৬ জন’
সাফ চ্যাম্পিয়নদের দেড় কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা বাফুফের
নওগাঁয় যুবদলের র‌্যালিতে নেতাকর্মীদের ঢল
আ.লীগের তৈরি জঞ্জাল সরিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ব: মির্জা ফখরুল