সিঙ্গাপুর থেকে ১২৭৪ কোটি টাকার এলএনজি কিনবে সরকার
ছবি: সংগৃহীত
দেশে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে সিঙ্গাপুরের দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিন কার্গো লিকুইডিফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট খরচ হবে ১ হাজার ২৭৪ কোটি ১১ লাখ ৭৬ হাজার ৫২০ টাকা।
বুধবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির তৃতীয় বৈঠকে এ সংক্রান্ত তিনটি পৃথক প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ খান সাংবাদিকদের জানান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০- এর (সংশোধনী ২০২১) আওতায় মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্সেস অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) সই করা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে।
তিনি বলেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের এমএস গুলবার সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে এক কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪২৫ কোটি ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৪০ টাকা।
অপর এক প্রস্তাবে সিঙ্গাপুরের একই প্রতিষ্ঠান এমএস গুলবার সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে এক কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতেও ব্যয় হবে ৪২৫ কোটি ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৪০ টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউ এর মূল্য পড়বে ৯ দশমিক ৮৪৭০ মার্কিন ডলার। আগে ছিল ৯ দশমিক ৯৩০ ডলার।
এছাড়া জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের এমএস ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে এক কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে খরচ হবে ৪২২ কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার ৬৪০ টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউর মূল্য পড়বে ৯ দশমিক ৭৭০ মার্কিন ডলার।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড’ থেকে এক কার্গো এলএনজি ৪২৯ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়।
২২ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড’ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য এক কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রতি এমএমবিটিইউ ১০ দশমিক ৮৮ মার্কিন ডলার হিসাবে ওই কার্গোটি আমদানিতে ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ মোট ব্যয় ধরা হয় ৪৭০ কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
জানা গেছে, স্পট মার্কেট থেকে চলতি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ১৩ কার্গো এলএনজি ক্রয়ের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। এর মধ্যে আগামী মার্চের জন্য চার কার্গো এলএনজি প্রয়োজন হতে পারে।
স্পট মার্কেট থেকে এলএনজির মূল্য স্বাভাবিক মূল্যের চেয়ে বহুগুণে বেড়ে যাওয়ায় ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ ছিল। চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ ঘাটতির ফলে শিল্প খাতে উৎপাদন, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ ও শিল্প খাতে স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে।
গ্যাসের ঘাটতির ফলে শিল্প খাতে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্যাস সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে এবং গ্যাসের ঊর্ধ্ব মূল্য বিবেচনায় প্রয়োজনে বর্ধিত মূল্যে হলেও গ্যাস সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ, শিল্প ও সার কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা হচ্ছে।