ছাত্র প্রতিনিধি ও সমন্বয়ক পরিচয়ে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের ৫ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন দখল, ভাঙচুর, লুটপাট ও ১০ কোটি টাকার চাঁদা দাবির অভিযোগে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার (০৯ মার্চ) রাতে টাঙ্গাইল পৌর শহরের পশ্চিম আকুর-টাকুরপাড়া (হাউজিং) এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ।
এরআগে রবিবার (০৮ মার্চ) অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা খান নারী সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টির বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগ তিনি উল্লেখ করেন- টাঙ্গাইল সদর থানাধীন আকুর টাকুর পাড়া (ছোট কালী বাড়ি রোড) সাকিনস্থ বাদী বাসার ৫ম তলাবিশিষ্ট বিল্ডিংয়ের কেচি গেটের ৬ষ্ঠ তালা ভেঙে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টিসহ আরও অজ্ঞতনামা ৮/৯ জন ৫ লাখ টাকা এবং ১০ ভরি স্বর্ণালংকার (যার মূল্য অনুমান ১২ লাখ টাকা) চুরি করে নিয়ে যায়।
এছাড়াও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আনুমানিক ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। পূর্বপরিকল্পিতভাবে ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ নিয়ে তালা ভেঙে ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে রুমে প্রবেশ করায়। এ বিষয়ে মিস্টির কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি রেগে গিয়ে বলেন, এই বাড়িতে বসবাস করতে হলে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দিতে হবে। অন্যথায় আগামী ৭ দিনের মধ্যে বাড়িটি পুড়িয়ে ফেলা হবে।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভীর আহম্মেদ জানান, বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট, দখল ও চাঁদাদাবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল সদর থানার একটি মামলা রুজু করা হয়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামি মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টিকে গ্রেফতার করা হয়। জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ৮ মার্চ সকালে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্র প্রতিনিধি ও সমন্বয়ক পরিচয়ে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের (ভিপি জোয়াহের) ৫ তলা বিশিষ্ট একটি বাসার তালা ভেঙে ১৭ জন নারী-পুরুষ ভারসাম্যহীন রোগী নিয়ে বাসা দখল করে।
এরপর জেলা জুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এতে নড়চড়ে বসে প্রশাসন। এদিন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল পৌর শহরের ছোট কালিবাড়ীতে অবস্থিত ৫তলা বিশিষ্ট ভবনটি যৌথবাহিনীর অভিযানে দখলমুক্ত করা হয়। এতে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা সহকারী কমিমনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অপরদিকে, একদিন ওই নারী সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টিকে আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যরা তাকে হেফাজতে নেন। পরে অভিযুক্ত এই নারী এ ধরণের কর্মকাণ্ড করে অপরাধ করেছেন মর্মে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ করবেন না মর্মে প্রত্যয়ন দেন। মুচলেকায় তার স্বামীসহ মোট ৫ জন সাক্ষী স্বাক্ষর করেন। বিশ্ব নারী দিবস ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজান বিবেচনায় ভুল শুধরে নেওয়ার একটি সুযোগ দিতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।