৩ প্রকল্পে বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাংকের ১.২৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ
বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক পর্ষদ বাংলাদেশের জন্য ৫ বছর মেয়াদি নতুন কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্কসহ (সিপিএফ) ৩টি প্রকল্পে ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।
সিপিএফ বাংলাদেশ সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১-এ উপস্থাপিত ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনে সহায়তা করবে।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এটি আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বৈচিত্র্যময় ও প্রতিযোগিতামূলক বেসরকারি খাত বিকাশে সহায়তা করবে। এ ছাড়া সবার জন্য সুযোগ সম্প্রসারণে আর্থ-সামাজিক অন্তর্ভুক্তির প্রচার, জলবায়ু ও পরিবেশগত দুর্বলতা মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেক বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক গ্রুপ ও বাংলাদেশের মধ্যে পাঁচ দশকের শক্তিশালী অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে।’
কান্ট্রি ডিরেক্টর আরও জানান, ‘বাংলাদেশ যেহেতু আরও সমৃদ্ধি অর্জন করতে চায়, তাই উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের চাহিদা পূরণে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ও নীতিমালা প্রয়োজন হবে। এই সিপিএফ কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সরকারের সংস্কার কর্মসূচিকে সহায়তা করবে।’
সিপিএফ তৈরিতে সরকার, বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, একাডেমিয়া, মিডিয়া এবং অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারসহ মূল অংশীদারদের সঙ্গে দেশব্যাপী ও অনলাইনে পরামর্শ করেছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ।
এদিকি, মাল্টিাল্যাটেরাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সির (এমআইজিএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট (অপারেশনস) জুনায়েদ কামাল আহমেদ বলেন, ‘স্বল্প সময়ের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য আছে বাংলাদেশের। তাও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে। তাই এই লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারি মূলধন এবং বৈশ্বিক আর্থিক বাজারে ক্রমবর্ধমান অ্যাক্সেস প্রয়োজন হবে।’
ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হল্টম্যান বলেন, ‘উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে বিশ্বের জন্য অনন্য উদাহরণ বাংলাদেশ। দেশটির আরও বৈচিত্র্যময় ও প্রতিযোগিতামূলক বেসরকারি খাতের উন্নয়নে অতিরিক্ত সংস্কার রপ্তানি বৃদ্ধি করবে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা ও প্রশমিত করতে গ্রিন ইনভেস্টমেন্টের জন্য অর্থায়ন ক্রমবর্ধমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।’
বিশ্বব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাংলাদেশকে স্থিতিস্থাপক উন্নয়ন এবং বৃহত্তর অন্তর্ভুক্তি অর্জনে সহায়তা করতে ৩টি প্রকল্পে ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে।
পাঁচশ মিলিয়ন ডলার প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনারশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স (অংশীদার) প্রকল্পটি কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য, খাদ্য নিরাপত্তা, উদ্যোক্তা এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা প্রচারে সহায়তা করবে।
পাঁচশ মিলিয়ন ফাস্ট গ্রিন অ্যান্ড ক্লাইমেট রেসিলিয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট ক্রেডিট দেশটিকে সবুজ ও জলবায়ু স্থিতিস্থাপক উন্নয়ন উত্তরণে সহায়তা করবে। ২৫৯ মিলিয়ন সাসটেইনেবল দি মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্ট ট্রান্সফরমেশন (এসএমএআরটি) প্রকল্প মাইক্রো-এন্টারপ্রাইজ সেক্টরকে আরও গতিশীল, কম-দূষণ, দক্ষ সম্পদ ও জলবায়ু স্থিতিস্থাপক বৃদ্ধির খাতে রূপান্তরে সহায়তা করবে।
এই ৩টি প্রকল্প অনুমোদিত হওয়ায় বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) মোট চলমান কর্মসূচির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে এমআইজিএ’র বর্তমান কর্মসূচি মাত্র ১ বিলিয়ন ডলারের উপরে। আইএফসির প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের চলমান প্রোগ্রাম আছে।
এমএমএ/