বৃহস্পতিবারের বাজারদর
কমেছে পেঁয়াজ, আলু, তেলের দাম
প্রতি কেজি আলু ১৬ থেকে ২০ টাকা। পেঁয়াজের কেজি ২৬ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দুই থেকে চার টাকা কমেছে। আগের সপ্তাহে বাড়লেও চলতি সপ্তাহে ভোজ্য তেলের খুচরা দাম কমেছে। তবে আগের দামেই টমেটো, বেগুণসহ বিভিন্ন সবজি, চাল, ডাল, মাছ, মাংস বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্যের দাম স্থিতিশীল বলে জানান বিক্রেতারা। করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চলামান বিধিনিষেধের কোনো প্রভাব বাজারে পড়েনি। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে।
স্থিতিশীল চালের বাজার
গত সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় এই সপ্তাহেও কোনো দাম বাড়েনি চালের। কারওয়ান বাজারের মেসার্স কুমিল্লা রাইস এজেন্সির মো. আবুল কাসেম ঢাকাপ্রকাশকে জানান, এই সপ্তাহে কোনো চালের দাম বাড়ে[নি। আগের দামেই মিনিকেট ৬০ থেকে ৬১ টাকা, বিআর-২৮ কেজি ৪৭ থেকে ৪৯ টাকা, পারিজা ৪৪ তেকে ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। একই কথা জানান চাটখিল রাইস এজেন্সির বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, আগের দামেই মিনিকেট ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, আটাশ ৪৮ থেকে ৪৯, নাজির চাল ৬৪ থেকে ৬৮ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। একই বাজারের এমআর টেড্রার্সের আনিছ খানও বলেন, সব চাল আগের দামে বিক্রি করা হচ্ছে । বরিশাল রাইস এজেন্সির আয়ুব আলী জানান, কোনো দাম বাড়েনি কমেওনি। আগের দামেই মিনিকেট, ৬০ টাকা, আটাশ ৪৯ থেকে ৫০ টাকা, বাসমতি ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে একই চাল বিভিন্ন বাজারে পাইকারির চেয়ে চার থেকে পাঁচ টাকা বেশি দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। বিভিন্ন বাজারের খুচরা বিক্রেতারা তা জানান।
কমেছে তেলের দাম
গত সপ্তাহে হঠাৎ করে প্রতি লিটারে আট টাকা বেড়ে গায়ের মূল্যের কাছাকাছি খুচরা পর্যায়ে তেল বিক্রি করা হয়েছে। তবে এই সপ্তাহে কমিয়ে পাঁচ লিটার তেল ৭২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে, যা গায়ের মূল্য ৭৬০ টাকা। আর এক লিটার ১৭০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান কারওয়ান বাজারের নিউ সোনারগাঁও জেনারেল স্টোরের রিপন । তিনি বলেন, ‘আগের সপ্তাহে প্রতি লিটারে আট টাকা বাড়লেও আজ( ২০ জানুয়ারি) তা কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে।’ এ ব্যাপারে ইউসুফ জেনারেল স্টোরের সুজনও ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, তেলের দাম কমেছে। এ ছাড়া সব পণ্যই আগের দামে বিক্রি হচ্ছে।
আগের দমেই গরু ও খাসির মাংস
গত সপ্তাহের মতোই গরু ও খাসির মাংসের দাম এই সপ্তাহে স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। কারওয়ান বাজারের জনপ্রিয় খাসির মাংসের দোকানের নুরুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আগের সপ্তাহের মতোই এই সপ্তাহে ৯৩০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। একই বাজারের মেসার্স খোকন এন্টারপ্রাইজের খোকন বলেন, ৫৮০ টাকা গরুর মাংস কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। বেশি নিলে ৫৫০ টাকা কেজি রাখা যাবে বলেও জানান তিনি। তবে সাইনবোর্ডে ৬০০ টাকা কেজি লেখা আছে।
স্থিতিশীল মুরগি ও মাছের দাম
গত সপ্তাহের দামে এই সপ্তাহেও ১০৫ থেকে ১১০ টাকা ডজন ডিম বিক্রি করা হচ্ছে বলে ঢাকাপ্রকাশকে জানান জননী মুরগীর আড়তের আব্দুল ওহাব। তিনি বলেন, দেশি মুরগি ৪৫০ টাকা, ব্রয়লার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, পাকিস্তানী কক ২৭০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে চার্টে বেশি ৩০০ টাকা লেখা আছে। এদিকে আল্লাহর দানচিকেন হাউজের মনির বলেন, পাকিস্তানি ২৯০ টাকা, সাদা কর্ক ২৯০ টাকা, ব্রয়লার কেজি ১৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে একই মুরগি কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কম-বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা যায়।
অন্যদিকে আগের মতো মাছের বাজার স্থিতিশীল বলে জানান বিক্রেতারা। কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রতন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আকার ভেদে রুই ও কাতল ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি আকার ভেদে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি সিং ৭০০ টাকা কেজি, চাষের কই ৩০০ টাকা, দেশি কই ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়। এ ছাড়া দেশি শৈল ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, সিং ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং আইড় মাছ আকারভেদে ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।
আগের দামেই ডাল, চিনি, আটা
নিত্য পণ্যও আগের সপ্তাহের মতো বাজারে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। চিনি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা কেজি, দুই কেজি আটা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ডাল ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। কমলা ট্রেডিংয়ের সুমন বলেন, মুগ ও মসুর ডাল ৯০ থেকে ১১০, ছোলা ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। ক্রেতারাও বলছেন, এ সপ্তাহে জিনিসের দাম তেমন বাড়েনি।
কমের দিকে সবজির বাজার
শীতকাল সবজির ভরা মৌসুম হওয়ায় প্রতি সপ্তাহে কোনো না কোনো পণ্যের দাম কমছে। রমজান ট্রেডার্সের আলি হোসেন বলেন, প্রতি পাল্লা পেঁয়াজ ১৩০ টাকা (৫ কেজিতে এক পাল্লা) বা কেজি ২৬ টাকা, আলু ৮০ টাকা পাল্লা বা কেজি ১৬ টাকা,দেশি রসুন ৫০ টাকা কেজি ও চায়না রসুন ১২০ টাকা কেজি এবং দেশি আদা ১০০ ও চায়নাটা ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে একই আদা, রসুন ও পেঁয়াজ বিভিন্ন বাজারে বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা যায়।
আগের মতোই টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, প্রতি পিস ফুল ও পাতা কপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, গাঁজর ৪০ টাকা কেজি, শসা ৩০ টাকা কেজি, সাকের আটি ১০ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।
জেডএ/এসআইএইচ