‘প্রতিযোগিতা করেই উদ্যোক্তাদের বিশ্বে টিকে থাকতে হবে’

বাংলাদেশে ২০২৬ সালে এলডিসি গ্রাজুয়েশন হলেও ভয়ের কিছু নেই উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, ব্যবসায়ীদের ২ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। দয়া-দক্ষিণার আশ্রয় নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে টিকে থাকা সম্ভব না। প্রতিযোগিতা করেই বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিশ্বে টিকে থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, অনেকে বলছেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশন হলে সমস্যায় পড়বে দেশ। কারণ অনেক দেশে রপ্তানি সুবিধা থাকবে না। কিন্তু এখনো আমরা ৪৩টি পণ্যে ২ শতাংশ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত সাবসিডি (ভর্তুকি) দিচ্ছি। এবারও এসব খাতে ১৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে।
তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রে প্রণোদনা ও কর ছাড় দেওয়া যাবে না। কারণ সরকারের তো সামর্থ্য দেখতে হবে। এক জায়গায় ছাড় নিলে অন্য জায়গায় কর আদায় করতে হবে। সব খাতে সাবসিডি তুলে নিলে জনগণের উপর চাপ বাড়বে।
বাণিজ্য সচিব বলেন, সরকারের কাজ নীতি প্রণয়ন করা। ব্যবসায়ীদের সহাযোগিতা করার জন্যই বিভিন্ন নীতি করে থাকে। উৎপাদনশীল খাতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরই বিনিয়োগ করতে হবে। সরকার সব খাতে বিনিয়োগ করবে না।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের মতো দেশের অভ্যন্তরেও প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হবে। প্রত্যেক মানুষকে সম্মান দিতে হবে। যারা বিদেশে গিয়ে কষ্ট করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠায় তাদের অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে।
বিডার সেক্রেটারি মোহসিনা ইয়াসমিন বলেন, বিনিয়োগকারীদের ১৫০টি সেবা দেওয়ার ইচ্ছা আছে। বর্তমানে তাদের ১৮টি সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। তারপরও তারা পরিবেশ অধিদপ্তর, বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিসসহ অনেক ক্ষেত্রে আমাদের মাধ্যমে সেবা নেয় না। এজন্য অনেক সময় তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, দেশে অতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়া হয় না। কিন্তু গাড়ি কেনার জন্য চাওয়া মাত্র টাকা দেওয়া হয় ব্যাংক থেকে। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন কোনো খেলাপি বাড়বে না। তারপরও খেলাপি ঋণ ভয়াবহভাবে বাড়ছে। এটাকে অবশ্যই কঠোরভাবে নজরদারিতে আনতে হবে।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি মো. সামির সাত্তারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিডার সেক্রেটারি মোহসিনা ইয়াসমিন, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেম-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, পিএইচপি গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
জেডএ/এসজি
